বাংলাদেশে ফুলের খামারে কোটি টাকার বন্যা! ফ্লোরাল ফার্মিংয়ের সাফল্যের নতুন অধ্যায়

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
বাংলাদেশে ফুল চাষ এখন আর কেবল শখের বিষয় নয়; এটি দ্রুত পরিণত হচ্ছে এক লাভজনক কৃষি-শিল্পে। গত এক দশকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষত যশোর, ঝিনাইদহ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জে, ফুল চাষের বিস্তার বেড়েছে বহুগুণ। কৃষি অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশীয় বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা তৈরি হওয়ায় 'ফ্লোরাল ফার্মিং' বা বাণিজ্যিক ফুল চাষ গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
ফুলের বাজারে বর্তমানে গোলাপ, জারবেরা, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, টিউলিপ ও অর্কিডের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় ফুলের পাশাপাশি এখন হাইব্রিড ও জলবায়ু-সহনশীল জাতও চাষ হচ্ছে, যা সারা বছর সরবরাহ সম্ভব করছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, শুধু যশোর জেলার গদখালী এলাকা থেকেই বছরে কয়েক শ' কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়। এখানে ফুল চাষে প্রতি বিঘা জমিতে সবজি বা ধান চাষের তুলনায় প্রায় তিন থেকে পাঁচ গুণ বেশি আয় হয়।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে সামাজিক অনুষ্ঠান, কর্পোরেট ইভেন্ট, উৎসব ও ধর্মীয় আচার—সব ক্ষেত্রেই ফুলের চাহিদা বাড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অনলাইন ফুল বিক্রির প্ল্যাটফর্ম, যা কৃষক ও ক্রেতার মধ্যে সরাসরি সংযোগ তৈরি করছে। রপ্তানির ক্ষেত্রেও সম্ভাবনা বাড়ছে; বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের ফুলের রঙ, গন্ধ ও স্থায়িত্ব ক্রমেই সুনাম অর্জন করছে।
তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়। মৌসুমি রোগবালাই, সংরক্ষণ প্রযুক্তির ঘাটতি, এবং আন্তর্জাতিক মানের প্যাকেজিংয়ের অভাব ফুল রপ্তানির পথে বড় বাধা। গবেষকরা বলছেন, নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় সংরক্ষণাগার, আধুনিক সেচ ব্যবস্থা ও বীজ উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করলে এ শিল্প আরও দ্রুতগতিতে এগোতে পারবে।
বাংলাদেশে ফুল চাষের এ উত্থান শুধু অর্থনৈতিক নয়, সামাজিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। এটি গ্রামীণ নারীদের কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ তৈরি করছে এবং কৃষি বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি আয়-নির্ভরতা বাড়াচ্ছে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।