কলা কেন মহাকাশে নিষিদ্ধ?

⇨ পটাশিয়ামের অতিরিক্ত প্রভাব:
কলায় প্রচুর পটাশিয়াম থাকে, যা শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু মহাকাশে, মহাকাশচারীদের শরীরে তরলের স্থানান্তর ও হরমোনের পরিবর্তনের কারণে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা রক্তচাপ ও অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়াতে পারে। এমন চাপের পরিবেশে হৃদস্পন্দন ও অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে।
 

⇨ গ্যাস সৃষ্টির সম্ভাবনা ও পেট ফাঁপা:
কলায় ফাইবার এবং শর্করার পরিমাণ বেশি, যা পাচনের সময় গ্যাস উৎপন্ন করে। মহাকাশযানের সংকুচিত, নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে পেট ফাঁপা হলে, এটি ভলিউম বৃদ্ধি ও অভ্যন্তরীণ চাপের ভারসাম্য বিঘ্নিত করে, যা স্পেসক্রাফটের যন্ত্রপাতি ও বায়ুচলাচল ব্যবস্থার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
 

⇨ বিস্ফোরণ ও সুরক্ষা ঝুঁকি:
মহাকাশযানে গ্যাস সঞ্চিত হলে ক্ষুদ্র বিস্ফোরণ ঘটতে পারে, যা যান্ত্রিক ক্ষতি ও প্রাণঘাতী পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। পচনপ্রক্রিয়ায় কলা থেকে সৃষ্ট গ্যাস এই ঝুঁকি আরও বাড়ায়।
 

⇨ সংরক্ষণ ও পরিবহনে অসুবিধা:
কলা দ্রুত নষ্ট হয়, বিশেষ করে মহাকাশের পরিবেশে সঠিক তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ কঠিন। নষ্ট কলা থেকে ছড়ানো গন্ধ ও জীবাণু মহাকাশচারীদের স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক।
 

মহাকাশে খাবারের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা

⇨ খাদ্যের ধরন: শুকনো, প্রক্রিয়াজাত বা ফ্রোজেন খাবার যেগুলো কম জায়গা নেয় ও দীর্ঘসময় স্থায়ী।

⇨ বায়ুচলাচল নিয়ন্ত্রণ: যান্ত্রিক গ্যাস সৃষ্টিরোধের জন্য স্পেসক্রাফটের বায়ু পরিস্কারের আধুনিক ব্যবস্থা।

⇨ ইলেক্ট্রোলাইট ও পুষ্টি ভারসাম্য: মহাকাশচারীদের ডায়েটে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম নিয়ন্ত্রণ করা হয় যাতে শরীরের চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
 

মহাকাশে কলার বিকল্প যা  হতে পারে:

⇨ ড্রাই ফ্রুট ও শুকনো ফলের ব্যবহার, যেগুলো দীর্ঘস্থায়ী ও কম গ্যাস সৃষ্টি করে।

⇨ প্রোটিন সমৃদ্ধ স্ন্যাকস ও বিশেষভাবে প্রস্তুত খাবার।

⇨ নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ছোট গ্রিনহাউসে নির্দিষ্ট পরিবেশে শাকসবজি ও কিছু ফল উৎপাদন সম্ভব।
 

মহাকাশ খাদ্যের অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা-

⇨ উচ্চ গ্যাস সৃষ্টিকারী খাদ্য (যেমন ব্রোকলি, পেঁয়াজ)

⇨ দ্রুত পচনশীল খাদ্য

⇨ উচ্চ লবণ বা চর্বিযুক্ত খাবার
 

মহাকাশচারীদের কলা খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার পেছনে রয়েছে শরীরের অভ্যন্তরীণ চাপ বৃদ্ধি, গ্যাস সৃষ্টির ঝুঁকি এবং মহাকাশযানের নিরাপত্তার বিষয়। এই নিয়ন্ত্রণ মহাকাশ অভিযানের সাফল্য ও প্রাণরক্ষায় অপরিহার্য। প্রযুক্তি উন্নয়ন ও গবেষণার মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরও নিরাপদ ও পুষ্টিকর মহাকাশ খাদ্যের বিকল্প আসবে।