জানেন কি ফুলের ইনফ্রারেড রহস্য-যা মানুষের চোখে অদৃশ্য তবে পোকামাকড়ের জন্য আলোড়ন!!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
আমাদের চারপাশের ফুলের রঙ দেখতে যেমন সুন্দর ও প্রাণবন্ত, তা কিন্তু কেবল মানুষের দৃষ্টির জন্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, ফুলের রঙের পেছনে রয়েছে একটি গভীর বিজ্ঞান-পোকামাকড়ের জন্য বিশেষভাবে অভিযোজিত ইনফ্রারেড (অদৃশ্য) রঙের ভাষা।
ফুলের রঙ সাধারণত আমরা দেখতে পাই দৃশ্যমান আলোর স্পেকট্রামের মধ্যে। কিন্তু ফুলের পাপড়িতে এমন নিদর্শন লুকিয়ে থাকে যা আলোর দৃশ্যমান স্পেকট্রামের বাইরে, বিশেষ করে ইনফ্রারেড এবং আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির মধ্যেই থাকে। মানুষের চোখ এই রং দেখতে পারে না, তবে মৌমাছি, প্রজাপতি, এবং অন্যান্য পরাগায়নকারী পোকামড়ের দৃষ্টি ব্যবস্থা এই রঙ গ্রহণ করতে সক্ষম।
বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, ফুলের পাপড়িতে ইনফ্রারেড রঙের প্যাটার্ন থাকে যা পোকামাকড়কে ফুলের অবস্থান নির্ণয় এবং পরাগায়নের জন্য আকৃষ্ট করে। উদাহরণস্বরূপ, অনেক ফুলের কেন্দ্রীয় অংশ ইনফ্রারেড রঙে উজ্জ্বল থাকে, যা পোকামাকড়কে নির্দেশ দেয়-"এখানে এসো, এখানে পরাগ রয়েছে।"
এটি এক ধরনের প্রাকৃতিক সিগন্যাল যা সফল প্রজননে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পোকামাকড়ের দৃষ্টিশক্তি মানুষের থেকে অনেক বেশি সংবেদনশীল এবং তারা ইনফ্রারেড ও আল্ট্রাভায়োলেট রঙ দেখতে পারে, যা ফুলের বিশেষ প্যাটার্নগুলোকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফুল এবং পোকামাকড়ের মধ্যে একটি সমন্বিত যোগাযোগের সৃষ্টি হয়, যা পরিবেশে জীববৈচিত্র্য ও প্রজনন হার বাড়ায়।
এছাড়াও, ইনফ্রারেড রঙ ফুলের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখতে পারে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ফুলের ইনফ্রারেড নিদর্শন সূর্যের তাপ শোষণ ও সংরক্ষণে সাহায্য করে, যা ফুলের মধ্যে পরাগকণিকা এবং পরাগায়নকারী জীবের কার্যকারিতা উন্নত করে।
এই তথ্যগুলো আমাদের শেখায় যে, প্রকৃতি শুধুমাত্র মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, জীবজগতে অন্যান্য প্রাণীর সংবেদনশীলতাকে বিবেচনায় রেখে ফুলের রঙ ও প্যাটার্ন গঠন করেছে।
ফলশ্রুতিতে, ফুল ও পোকামাকড়ের মধ্যে সূক্ষ্ম ও গভীর এক প্রাকৃতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের সুস্থতা ও সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।