ওজন কমানোর মেটাবলিক ম্যাজিক: ট্রেন্ড নয়, বিজ্ঞান বলছে সত্যিই কাজ করে এই ডায়েট

ওজন কমানোর মেটাবলিক ম্যাজিক: ট্রেন্ড নয়, বিজ্ঞান বলছে সত্যিই কাজ করে এই ডায়েট
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

ওজন কমানোর দুনিয়ায় "কিটো ডায়েট" এখন এক সুপারহিট শব্দ। হলিউড সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ার ফিটনেস ইনফ্লুয়েন্সার- সবাই যেন এর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তবে, এই ডায়েট কেবল ফ্যাশন নয়, বরং এর মূল রহস্য লুকিয়ে আছে মানবদেহের জ্বালানি ব্যবহারের এক বৈজ্ঞানিক কৌশলে- কিটোসিস।

কিটো ডায়েট কী?

কিটো ডায়েটের মূল ধারণা- দৈনন্দিন খাদ্যে কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা নাটকীয়ভাবে কমিয়ে (প্রায় ৫-১০%), চর্বির পরিমাণ বাড়িয়ে (৭০-৭৫%) এবং প্রোটিন মাঝারি মাত্রায় রাখা (২০-২৫%)। ফলে, শরীর কার্বোহাইড্রেট থেকে গ্লুকোজ না পেয়ে চর্বি ভেঙে কিটোন বডি তৈরি করে, যা নতুন জ্বালানির উৎস হয়ে ওঠে।

যখন কার্বোহাইড্রেট কমে যায়, তখন ইনসুলিনের মাত্রা কমে, আর লিভার চর্বি ভেঙে বিটা-হাইড্রোক্সিবিউটারেট, অ্যাসিটোঅ্যাসিটেট ও অ্যাসিটোন নামের কিটোন বডি তৈরি করে। এগুলো মস্তিষ্ক, হৃদপিণ্ড ও পেশিকে শক্তি জোগায়। এই অবস্থাই কিটোসিস নামে পরিচিত।

 

সম্ভাব্য উপকারিতা:

⇨ দ্রুত ওজন হ্রাস – শরীর চর্বিকে প্রধান জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করায় ফ্যাট বার্ন দ্রুত হয়।

⇨ রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ – টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

⇨ মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি – কিটোন বডি মস্তিষ্কের জন্য স্থায়ী শক্তি সরবরাহ করে, যা একাগ্রতা বাড়াতে পারে।

⇨ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ – চর্বি ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার দীর্ঘ সময় তৃপ্তি দেয়।
 

ঝুঁকি ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: 

⇨ কিটো ফ্লু – মাথাব্যথা, ক্লান্তি, বিরক্তি, বমিভাবের মতো প্রাথমিক সমস্যা।

⇨ পুষ্টির ঘাটতি – ফল, সবজি ও সম্পূর্ণ শস্য কম খাওয়ায় ভিটামিন-খনিজের ঘাটতি হতে পারে।

⇨ লিভার ও কিডনিতে চাপ – উচ্চ প্রোটিন ও চর্বি গ্রহণে দীর্ঘমেয়াদে অঙ্গগুলোর ওপর চাপ বাড়তে পারে।

⇨ কোলেস্টেরল বৃদ্ধি – কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এলডিএল কোলেস্টেরল বেড়ে যেতে পারে।
 

কার জন্য উপযুক্ত নয়

⇨ গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী নারী

⇨ লিভার, কিডনি বা অগ্ন্যাশয়ের রোগী

⇨ হৃৎপিণ্ডের জটিল সমস্যায় ভোগা ব্যক্তি
 

কিটো ডায়েট বনাম অন্যান্য ডায়েট

যেখানে সাধারণ কম-ক্যালোরি ডায়েট খাবারের পরিমাণ সীমিত করে, সেখানে কিটো ডায়েট খাবারের ধরণ বদলে শরীরের মেটাবলিজম পাল্টে দেয়। এ কারণে এটি তুলনামূলকভাবে দ্রুত ওজন কমাতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে সবার জন্য টেকসই নয়।

কিটো ডায়েট নিঃসন্দেহে দ্রুত ফল দেয়, তবে এর বিজ্ঞান যতটা শক্তিশালী, ঝুঁকিও ততটাই বাস্তব। সুতরাং, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যপরীক্ষা করেই এই ডায়েটে যাওয়া উচিত।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ