জেনে নিন ব্রণ হওয়ার আসল কারণ ও চমকপ্রদ প্রতিকার

জেনে নিন ব্রণ হওয়ার আসল কারণ ও চমকপ্রদ প্রতিকার
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

বয়ঃসন্ধিকাল থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক জীবন-সব বয়সেই ব্রণ বা Acne vulgaris একটি সাধারণ কিন্তু জটিল সমস্যা। অনেকেই একে শুধুই বাহ্যিক ত্বকের রোগ মনে করেন, কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন এটি আসলে শরীরের ভেতরের হরমোনীয় পরিবর্তন, স্নায়ু-ত্বক সম্পর্ক এবং জীবনধারার প্রতিফলন।

কেন হয় ব্রণ?

ব্রণ তৈরি হয় মূলত ত্বকের তেলগ্রন্থি (sebaceous gland) ও চুলের ফলিকল (hair follicle)-এর অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ ও ব্লকেজ থেকে।  ত্বকের তেলগ্রন্থি যখন বেশি তেল উৎপন্ন করে, তখন রোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়। আবার ত্বকের মৃত কোষ ঠিকমতো ঝরে না পড়ে জমে গেলে রোমকূপ আরও ব্লক হয়।  Cutibacterium acnes নামক ব্যাকটেরিয়া এই ব্লক হওয়া রোমকূপে দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে। এছাড়া টেস্টোস্টেরন ও এন্ড্রোজেন হরমোন তেল উৎপাদন বাড়িয়ে ব্রণ তৈরির প্রধান কারণ। তাই কিশোর-কিশোরী ও নারীদের ঋতুচক্র পরিবর্তনের সময় ব্রণ বেশি দেখা যায়।
 

ব্রণের ধরন: ব্রণ সবসময় একই রকম নয়।

⇨ কমেডোনাল ব্রণ: ব্ল্যাকহেড ও হোয়াইটহেড।

⇨ ইনফ্ল্যামেটরি ব্রণ: লালচে ফোলা দাগ, ব্যথাযুক্ত পাপুল বা পুস্টুল।

⇨ সিস্টিক ব্রণ: গভীর ও বড় গাঁট, যা দাগ রেখে যেতে পারে।
 

প্রভাবক (Trigger factors):

⇨ হরমোনাল পরিবর্তন: বয়ঃসন্ধি, গর্ভাবস্থা, ঋতুচক্র, পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS)।

⇨ খাদ্যাভ্যাস: উচ্চ গ্লাইসেমিক খাবার (চিনি, জাঙ্ক ফুড, সফট ড্রিঙ্কস), দুগ্ধজাত খাবার।

⇨ স্ট্রেস: মানসিক চাপ কর্টিসল বাড়িয়ে ব্রণকে তীব্র করে।

⇨ কসমেটিকস: তেলযুক্ত বা কমেডোজেনিক প্রসাধনী।

⇨ ঘুমের অভাব ও দূষণ: এগুলোও ব্রণ বাড়াতে সহায়ক।
 

চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ: ব্রণের চিকিৎসা ধাপে ধাপে করা হয়-

⇨ টপিক্যাল ট্রিটমেন্ট: বেঞ্জয়েল পারক্সাইড, রেটিনয়েড, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড।

⇨ ওষুধ: গুরুতর ব্রণে মুখে খাওয়ার অ্যান্টিবায়োটিক, হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধ বা আইসোট্রেটিনয়িন ব্যবহার করা হয়।

⇨ লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্ট: পর্যাপ্ত ঘুম, প্রচুর পানি পান, তেলযুক্ত খাবার এড়ানো এবং নন-কমেডোজেনিক স্কিন কেয়ার ব্যবহার।

 

চিকিৎসা পদ্ধতি: আধুনিক চিকিৎসায় লেজার থেরাপি, কেমিক্যাল পিল ও মাইক্রোনিডলিং ব্যবহৃত হচ্ছে।
 

মানসিক ও সামাজিক প্রভাব:  শুধু শারীরিক নয়, ব্রণ মানুষের আত্মবিশ্বাস ও সামাজিক মেলামেশায় বড় প্রভাব ফেলে। অনেক কিশোর-কিশোরী আত্মসম্মানবোধে আঘাত পায়, মানসিক চাপ বাড়ে এমনকি বিষণ্নতাও দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকরা তাই শুধু ওষুধ নয়, রোগীর মানসিক সমর্থনকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন।

বর্তমানে বিজ্ঞানীরা মাইক্রোবায়োম (ত্বকের জীবাণু বৈচিত্র্য) নিয়ে গবেষণা করছেন। ধারণা করা হচ্ছে, একদিন প্রোবায়োটিকস বা ব্যাকটেরিয়া-ভিত্তিক চিকিৎসা ব্রণ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ