মানুষের সুস্বাস্থ্য এবং পরিবেশের নিরাপত্তার জন্য যে ধরনের ফসল উৎপাদন জরুরি- বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণ!

মানুষের সুস্বাস্থ্য এবং পরিবেশের নিরাপত্তার জন্য যে ধরনের ফসল উৎপাদন জরুরি- বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণ!
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

আজকাল বাজারে জৈব বা অর্গানিক খাবারের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। মানুষ চাইছে স্বাস্থ্যকর, রাসায়নিকমুক্ত এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ খাদ্য। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়-জৈব চাষের ফলে পুষ্টি কি সত্যিই বাড়ে, নাকি কমে যায়? চলুন, বৈজ্ঞানিক প্রমাণের আলোকে বিষয়টি বিশ্লেষণ করি।

জৈব বনাম প্রথাগত চাষ:

প্রথাগত চাষ (Chemical/Conventional Farming):
ফসল দ্রুত বৃদ্ধি পায়, আবাদ বেশি হয়। উচ্চ মাত্রায় নাইট্রোজেন সার বা কীটনাশক ব্যবহার ফসলের আকার বড় করে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, এই ধরনের চাষে কিছু ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা তুলনামূলকভাবে কম হতে পারে।
 

জৈব চাষ (Organic Farming):
রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে মাটি ও ফসলের ভারসাম্য রক্ষা করা হয়। মাটি ধীরে ধীরে উর্বর হয়, মাইক্রোবায়োম ও ছত্রাক সমৃদ্ধ থাকে। ফলে ফল, শাক-সবজি, দুধ ও মাংসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান বেশি পাওয়া যায়।
 

বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ: 

১।  ফল ও শাক-সবজি- জৈব চাষকৃত টমেটো, গাজর, ব্রকলি ইত্যাদিতে ফ্ল্যাভোনয়েড, ভিটামিন C, পলিফেনল বেশি থাকে। যেসব ফসল প্রথাগতভাবে দ্রুত বড় করা হয়, সেগুলিতে পুষ্টি কম হতে পারে।

উদাহরণ: গবেষণা দেখিয়েছে, জৈব টমেটোতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ প্রায় ২০–৪০% বেশি।
 

২।  দুধ ও ডিম-  জৈব খামারের প্রাণীদের দুধে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি থাকে। একইভাবে, ডিমের পুষ্টি ও ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা জৈব খামারের ক্ষেত্রে বেশি ধরা পড়ে। কারণ, প্রাণীরা প্রাকৃতিক খাদ্য ও ঘাস খায়, যা পুষ্টি বৃদ্ধি করে।
 

৩।  মাটির স্বাস্থ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব - জৈব চাষে মাটি সমৃদ্ধ থাকে জৈব পদার্থ, ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া সমন্বিত।

স্বাস্থ্যকর মাটি → স্বাস্থ্যকর ফসল → বেশি পুষ্টি।
দীর্ঘমেয়াদে প্রথাগত চাষে মাটির উর্বরতা কমে যেতে পারে, যার প্রভাব ফসলের পুষ্টিগুণেও পড়ে।
 

জৈব চাষের ফলে ফসল, দুধ ও ডিমের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান বাড়ে। রাসায়নিক মুক্ত হওয়ার কারণে দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। আকারে ছোট হতে পারে, তবে পুষ্টি বেশি। মাটি দীর্ঘমেয়াদে উর্বর থাকে, যা পরবর্তী ফসলের গুণমানও বাড়ায়।
 

সুতরাং বলা যায়, জৈব চাষ কেবল "পরিবেশবান্ধব" নয়, বরং মানুষের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির জন্যও ভালো। ছোট আকার বা কম আবাদ হলেও পুষ্টিগুণ এবং দীর্ঘমেয়াদী সুবিধার দিক দিয়ে এটি অনেক বেশি কার্যকর।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ