স্মার্টফোন আসক্তি কাটানোর সহজ ও কার্যকরী উপায়!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
পড়ার টেবিলে বই খোলা, কিন্তু মন কোথায়? স্মার্টফোনের একটি নোটিফিকেশনে চোখ চলে যায় স্ক্রিনে। এরপর সময় কীভাবে উড়ে যায়, টেরই পাওয়া যায় না। সোশ্যাল মিডিয়া, গেম, ভিডিও বা মেসেজিং—ফোন যেন এক নেশায় পরিণত হয়েছে অনেকের জন্য। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এটি পড়াশোনার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
কেন হয় স্মার্টফোন আসক্তি?
স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তি তৈরি হওয়ার পেছনে কিছু বৈজ্ঞানিক ও মানসিক কারণ কাজ করে:
১. ডোপামিন রিওয়ার্ড সিস্টেম: ফেসবুক, টিকটক বা ইউটিউবে স্ক্রল করলে মস্তিষ্কে ডোপামিন হরমোন নিঃসরণ হয়, যা আনন্দ দেয়। এই আনন্দের জন্য মানুষ বারবার ফোন ব্যবহার করতে চায়।
২. পড়াশোনার প্রতি অনীহা: কঠিন পড়াশোনার চেয়ে বিনোদনমূলক কনটেন্ট সহজেই মন কেড়ে নেয়।
৩. মনোযোগের অভাব: দীর্ঘসময় ফোন ব্যবহারের ফলে মনোযোগের স্থায়িত্ব কমে যায়, ফলে বইয়ে মন বসানো কঠিন হয়ে পড়ে।
৪. সোশ্যাল মিডিয়ার টান: অনলাইনে সক্রিয় থাকা বন্ধু বা পরিচিতজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে ফোন হাতছাড়া করা কঠিন হয়ে পড়ে।
কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন স্মার্টফোন আসক্তি?
স্মার্টফোনের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে কিছু সহজ উপায় অনুসরণ করতে পারেন:
১. স্টাডি প্ল্যান তৈরি করুন: নির্দিষ্ট সময়ে ফোন দূরে রেখে শুধু পড়াশোনায় মনোযোগ দিন। পদ্ধতিটি সহজ করতে পোমোডোরো টেকনিক ব্যবহার করতে পারেন—২৫-৩০ মিনিট পড়ার পর ৫ মিনিটের ছোট ব্রেক নিন।
২. ফোন দূরে রাখুন: পড়ার সময় ফোন সাইলেন্ট বা অ্যারোপ্লেন মোডে রেখে অন্য ঘরে রাখুন। এটি মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে।
৩. সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করুন: ফোনের ‘স্ক্রিন টাইম’ অপশন ব্যবহার করে প্রতিদিনের জন্য নির্দিষ্ট অ্যাপের ব্যবহারের সময়সীমা বেঁধে দিন।
৪. সঠিক বিনোদন বেছে নিন: পড়াশোনার ফাঁকে বই পড়া, হালকা ব্যায়াম বা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর মতো স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৫. স্মার্টফোন ডিটক্স করুন: সপ্তাহে অন্তত একদিন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফোন ব্যবহার একেবারে বন্ধ রাখার চেষ্টা করুন। এটি মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেবে।
স্মার্টফোন আসক্তির নেতিবাচক প্রভাব
স্মার্টফোন আসক্তি শুধু পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটায় না, এটি সামগ্রিক মনোযোগ ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত ফোন ব্যবহার মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং ঘুমের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
প্রযুক্তির এই যুগে স্মার্টফোন ছাড়া জীবন কল্পনা করা কঠিন। তবে এটি যাতে আমাদের নিয়ন্ত্রণ না করে, বরং আমরা যেন এর সঠিক ব্যবহার করতে পারি, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। স্মার্টফোনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে পড়াশোনা ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য ফিরে পেতে আজই শুরু করুন এই সহজ উপায়গুলো!