ভুলে যাওয়ার রোগকে হারানো সম্ভব? অ্যালঝেইমারের বিরুদ্ধে নতুন আশা!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
অ্যালঝেইমার একটি এমন রোগ যা মানুষের স্মৃতি, চিন্তাশক্তি ও দৈনন্দিন কার্যকলাপকে ক্রমশ ক্ষয় করে দেয়। বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫ কোটি মানুষের জীবন প্রভাবিত করছে এই রোগ। তবে আশার কথা, বিজ্ঞান এখন মস্তিষ্কের এই রহস্যময় রোগের বিরুদ্ধে নতুন নতুন কৌশল নিয়ে যুদ্ধ করছে।
মস্তিষ্কে যা ঘটে-
অ্যালঝেইমারের মূল কারণ হলো মস্তিষ্কে অ্যামাইলয়েড বেটা প্রোটিনের প্ল্যাক এবং টাউ প্রোটিনের গিঁট জমে যাওয়া। এই জমাটবদ্ধতা নিউরনগুলোর যোগাযোগকে বাধাগ্রস্ত করে, যার ফলে স্মৃতি ও চিন্তাশক্তি ধীরে ধীরে ক্ষয় পায়।
অ্যালঝেইমারের ইতিহাস ও বৈশিষ্ট্য- অ্যালঝেইমার রোগের নামকরণ করা হয়েছিল জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী অ্যালয়েস অ্যালঝেইমার এর নামে, যিনি ১৯০৬ সালে প্রথম এই রোগের লক্ষণ ও মস্তিষ্কের পরিবর্তনগুলি চিহ্নিত করেন। রোগটি মূলত অ্যামাইলয়েড বেটা প্রোটিনের প্ল্যাক এবং টাউ প্রোটিনের গিঁট মস্তিষ্কে জমে যাওয়ার কারণে ঘটে, যা নিউরনগুলোর যোগাযোগকে বাধাগ্রস্ত করে।
বিজ্ঞান যেভাবে লড়ছে-
☞ ঔষধ এবং বায়োটেক কৌশল: নতুন প্রোটিন ইনহিবিটর ও মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে যা অ্যামাইলয়েড ও টাউ প্রোটিনকে লক্ষ্য করে।
এগুলো মস্তিষ্কে জমাটবদ্ধ প্রোটিনকে ভেঙে রোগের অগ্রগতি ধীর করতে সাহায্য করে।
☞ জিন থেরাপি এবং সেল থেরাপি: কিছু গবেষক মস্তিষ্কের নিউরনকে পুনর্গঠন বা নতুন নিউরন তৈরি করতে জিন থেরাপি ব্যবহার করছেন।
স্টেম সেল থেরাপি, মস্তিষ্কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুনঃপ্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।
☞ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও বড় ডেটা ব্যবহার: AI এবং মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে রোগের প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে।
সিস্টেম্যাটিক বিশ্লেষণ মস্তিষ্কের স্ক্যান ও জিনোম ডেটা থেকে নির্ধারণ করে দেয়, কে বেশি ঝুঁকিতে।
☞ নিয়মিত জীবনধারা পরিবর্তন: বিজ্ঞানীদের গবেষণা বলছে, মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখা, সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম ও মানসিক ব্যায়াম রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কে রক্তসংবাহন এবং নিউরোট্রান্সমিটার কার্যকারিতা উন্নত হয়।
সাম্প্রতিক প্রগতিশীল গবেষণা বলছে, কিছু দেশে নতুন ওষুধ পরীক্ষা চালু হয়েছে যা অত্যন্ত প্রাথমিক পর্যায়ের রোগ নির্ণয়কে কার্যকরভাবে লক্ষ্য করে। ন্যুরোসায়েন্স গবেষকরা মাইক্রোবায়োম ও অন্ত্রের স্বাস্থ্য সম্পর্কেও গবেষণা করছেন, যা মনে রাখার ক্ষমতা এবং অ্যালঝেইমারের ঝুঁকিকে প্রভাবিত করতে পারে।
অ্যালঝেইমার এখন আর অব্যবস্থাপনার রোগ নয়। বিজ্ঞান ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের জটিল রাস্তা খুঁজে বের করছে, রোগের আগ্রাসন কমানোর এবং মানুষের জীবন মান উন্নত করার লক্ষ্য নিয়ে।
ফলে বলা যায়, মৃত্যুভয় নয়, স্মৃতির অপ্রতিরোধ্যতার বিরুদ্ধে বিজ্ঞানই এখন মানুষের সবচেয়ে বড় আশা।আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।