অতিরিক্ত কাজ কি আসলেই সাফল্যের চাবি? নাকি অদৃশ্য মানসিক অসুস্থতার শুরু?

অতিরিক্ত কাজ কি আসলেই সাফল্যের চাবি? নাকি অদৃশ্য মানসিক অসুস্থতার শুরু?
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

আধুনিক কর্মজীবনে অনেকেই মনে করেন, সারাদিন কাজের চাপে ডুবে থাকা মানেই বেশি সফল হওয়া বা প্রোডাক্টিভ হওয়া। কিন্তু গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত ব্যস্ততা সবসময় উৎপাদনশীলতার সমান নয়। বরং এই অভ্যাস ধীরে ধীরে জন্ম দেয় এক মানসিক সমস্যার-যাকে বলা হয় ওয়ার্কহোলিক প্রবণতা।

ওয়ার্কহোলিক মানসিকতা কী?

ওয়ার্কহোলিক বলতে বোঝানো হয় এমন মানুষকে, যারা কাজ ছাড়া অন্য কিছু ভাবতেই পারেন না। বিশ্রাম বা বিনোদনকে সময় নষ্ট মনে করেন। প্রথমদিকে এই মানসিকতা অনেকটা "ক্যারিয়ার নিয়ে দায়িত্বশীল" ভাবালু ধারণা তৈরি করে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি রূপ নেয় মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতায়।
 

কেন বিপজ্জনক?

⇨  শারীরিক ক্ষতি – দীর্ঘ সময় বসে থাকা, চাপ সামলাতে না পারা, অনিয়মিত খাবার ও ঘুমের কারণে দেখা দেয় উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ নানা সমস্যা।

⇨ মানসিক সমস্যা – চাপে থেকে জন্ম নেয় স্ট্রেস, উদ্বেগ, খিটখিটে মেজাজ, এমনকি ডিপ্রেশন।

⇨ সামাজিক বিচ্ছিন্নতা – অতিরিক্ত কাজের কারণে পরিবার, বন্ধু কিংবা ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা ফাঁকা হয়ে যায়।

⇨  উৎপাদনশীলতায় উল্টো প্রভাব – টানা কাজের চাপে মানসিক ক্লান্তি বাড়ে, সৃজনশীলতা ও মনোযোগ কমে যায়।
 

ব্যস্ততা ≠ প্রোডাক্টিভিটি- 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রোডাক্টিভিটি মানে হলো কম সময়ে ফলপ্রসূ কাজ শেষ করা, সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকা নয়। কেউ ১২ ঘণ্টা কাজ করেও কার্যকর নাও হতে পারেন, আবার কেউ ৬ ঘণ্টা কাজ করে যথেষ্ট ফলাফল এনে দিতে পারেন।
 

যেভাবে মুক্তি মিলতে পারে?

⇨ টাইম ম্যানেজমেন্ট: কাজকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সাজানো।

⇨ ব্রেক নেওয়া: দীর্ঘ সময় টানা কাজ না করে ছোট বিরতি নেওয়া।

⇨ ডিজিটাল ডিটক্স: কাজের বাইরে সময়টুকু সামাজিক মাধ্যমে না কেটে প্রকৃতির সাথে বা প্রিয়জনের সাথে কাটানো।

⇨ স্বাস্থ্যচর্চা: নিয়মিত ব্যায়াম, ঘুম ও সুষম খাদ্য মানসিক ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক।

⇨ 'না' বলার অভ্যাস: সব দায়িত্ব একা কাঁধে নেওয়ার প্রবণতা কমানো।


কাজে ডুবে থাকা অনেক সময় বাহ্যিকভাবে সাফল্যের প্রতীক মনে হলেও, ভেতরে তা তৈরি করে শারীরিক ও মানসিক ক্ষয়। আজকের কর্মজীবনের আসল চ্যালেঞ্জ হলো-"কাজ ও জীবনের মধ্যে ভারসাম্য খুঁজে পাওয়া"। কারণ স্বাস্থ্যকর মানসিকতা ছাড়া প্রকৃত উৎপাদনশীলতা সম্ভব নয়।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ