অজান্তেই বাবা-মা যে ভুলে শিশুর ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছেন!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
প্রায়শই বাবা-মা মনে করেন, " বেশি চাপ দিলে সন্তান আরও ভালো করবে" বা "শিশুকে সবসময় সঠিক পথে রাখতে হবে।" কিন্তু বাস্তবতা অনেকটা আলাদা। অনেক সময় ভালো ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কিছু অভ্যাস শিশুর শিক্ষা ও মানসিক বিকাশে হুমকি সৃষ্টি করে। বাবা-মা যতই সন্তানকে ভালোবাসুন না কেন, অজান্তে দেওয়া অতিরিক্ত চাপ, হুমকি বা পর্যাপ্ত মনোযোগের অভাব শিশুর আগ্রহ কমিয়ে দিতে পারে। মূল কথা হলো ভালোবাসা সবসময় শিক্ষার পথে সাহায্য করে না, কখনও কখনও তা বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
বাবা-মা যেভাবে অজান্তে ক্ষতি করেন: শিশুদের শিক্ষাগত ও মানসিক বিকাশে বাবা-মার ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু অনেক সময় কিছু অভ্যাস শিশুর পড়াশোনার জন্য ক্ষতিকর হয়ে যায়-
১. অতিরিক্ত প্রত্যাশা ও চাপ: শিশুর প্রতি অত্যধিক প্রত্যাশা চাপিয়ে দিলে, তাদের মনে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়।
ফলাফল: চাপের কারণে তারা ঘাবড়ে যায়, আত্মবিশ্বাস হারায় এবং শিক্ষার প্রতি অনীহা জন্মায়।
২. মনোযোগের অভাব: শিশুর স্কুল ও বাড়ির কার্যক্রমে পর্যাপ্ত মনোযোগ না দিলে তারা অনুভব করে যে তার প্রচেষ্টা মূল্যহীন।
ফলাফল: আগ্রহ কমে যায়, তারা সহজেই বিষণ্ণ বা বিরক্ত হয়ে পড়ে।
৩. অভিজ্ঞতার অভাব: শিশুকে ব্যর্থতা থেকে দূরে রাখলে তারা কোনো সমস্যার সমাধান বা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে শেখে না।
ফলাফল: জীবনের চ্যালেঞ্জে তারা হাল ছেড়ে দিতে পারে।
৪. হুমকি দিয়ে পড়ানো: ভয় দেখানো বা শাস্তির মাধ্যমে পড়াশোনা করালে শিশু পড়াশোনাকে বোঝা মনে করে।
ফলাফল: শিক্ষা প্রতি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয় এবং স্বাভাবিক আগ্রহ কমে যায়।
৫. শারীরিক ও মানসিক পরিচর্যার অভাব:
উদাহরণ: খালি পেটে স্কুলে যাওয়া, আবেগগত সান্নিধ্যের অভাব।
ফলাফল: শিশু মনোযোগ দিতে পারে না, মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।
৬. কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা শেখাতে ব্যর্থতা: শিশুকে জীবনের বাস্তব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কৌশল না শেখালে, তারা সমস্যার মুখোমুখি হলে হতাশ হয়।
ফলাফল: স্কুলে বা সামাজিক পরিবেশে বিঘ্নজনক আচরণ।
৭. উৎসাহ ও সমর্থনের অভাব: শিশু যদি ভালো কাজ করলেও প্রশংসা না পায়, তবে সে নিজেকে কম মূল্যবান মনে করে।
ফলাফল: আগ্রহ কমে যায় এবং মানসিক দুর্বলতা দেখা দেয়।
সমাধান ও করণীয়
⇨ সঠিক প্রত্যাশা: শিশুদের বয়স অনুযায়ী সাফল্য ও প্রচেষ্টা মূল্যায়ন করা।
⇨ মনোযোগ ও সমর্থন: ছোট ছোট অর্জনের প্রশংসা, আগ্রহ বৃদ্ধি।
⇨ ভয় ও হুমকি এড়ানো: শিক্ষা শেখার আনন্দ বজায় রাখা।
⇨ অভিজ্ঞতা ও সমস্যা সমাধান শেখানো: ব্যর্থতার মাধ্যমে শেখার সুযোগ দেওয়া।
⇨ শারীরিক ও মানসিক পরিচর্যা: পর্যাপ্ত আহার, আবেগগত সান্নিধ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
⇨ উৎসাহ ও ইতিবাচক পরিবেশ: শিশু যেন মানসিকভাবে প্রেরিত ও নিরাপদ মনে করে।
শিশুর পড়াশোনায় বাবা-মার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছোট ছোট ভুল অভ্যাসও শিক্ষাগত ও মানসিক বিকাশে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। সঠিক মনোযোগ, ভালোবাসা ও সমর্থনের মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করা সম্ভব।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।