বায়োনিক কিডনি গবেষণায় সম্ভাবনার ঝলক

বায়োনিক কিডনি গবেষণায় সম্ভাবনার ঝলক
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

কিডনি মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ, অতিরিক্ত তরল অপসারণ করে এবং খনিজ পদার্থের ভারসাম্য বজায় রাখে। কিন্তু কিডনি বিকল হলে মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়ে। এ অবস্থায় রোগীদের বাঁচিয়ে রাখে হেমোডায়ালাইসিস নামের একটি কৃত্রিম পদ্ধতি। দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা এমন একটি প্রযুক্তি তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন, যা কেবল বাইরের মেশিন নয়, মানবদেহের ভেতরেই একটি স্থায়ী কৃত্রিম কিডনি হিসেবে কাজ করতে পারবে। এই ধারণার নাম বায়োনিক কিডনি।

বর্তমানে কিডনি বিকল রোগীদের সবচেয়ে বড় ভরসা হলো হেমোডায়ালাইসিস মেশিন। এতে রোগীর রক্ত শরীরের বাইরে এনে ফিল্টার করা হয়। মেশিনটি বর্জ্য পদার্থ, ইউরিয়া, অতিরিক্ত পানি অপসারণ করে এবং সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়ামের মতো খনিজের ভারসাম্য বজায় রাখে। তবে সপ্তাহে কয়েকবার কয়েক ঘণ্টা ধরে মেশিনের সাথে সংযুক্ত থাকতে হয়, যা রোগীর জীবনকে কষ্টকর করে তোলে।

 

বায়োনিক বা জৈব-কৃত্রিম কিডনি তৈরির মূল লক্ষ্য হলো-

মানবদেহের ভেতর প্রতিস্থাপনযোগ্য একটি ডিভাইস তৈরি করা, যা প্রাকৃতিক কিডনির মতো কাজ করবে। রোগীকে আর বারবার ডায়ালাইসিস মেশিনের ওপর নির্ভর করতে হবে না। দীর্ঘমেয়াদে কিডনি প্রতিস্থাপনের বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারবে।

গবেষকরা এখানে দুই ধরনের প্রযুক্তি একত্রিত করার চেষ্টা করছেন:

⇨ ন্যানোফিল্টার সিস্টেম – রক্ত থেকে বর্জ্য ও তরল অপসারণ করবে।

⇨ বায়োরিয়েক্টর (জীবন্ত কোষ ব্যবহারকারী অংশ) – প্রাকৃতিক কিডনির জটিল জৈব রাসায়নিক কাজ যেমন হরমোন নিঃসরণ ও ইলেক্ট্রোলাইট নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

 

বর্তমান অবস্থা-

এখন পর্যন্ত মানবদেহে সম্পূর্ণ কার্যকর কোনো বায়োনিক কিডনির প্রোটোটাইপ সফলভাবে স্থাপন করা হয়নি। গবেষণা চলছে, এবং বেশ কিছু পরীক্ষামূলক মডেল ল্যাব পর্যায়ে উন্নত করা হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা আশাবাদী, ভবিষ্যতে এই ডিভাইস কিডনি প্রতিস্থাপন ও ডায়ালাইসিসের বিকল্প হতে পারবে। তবে এতে সময় ও জটিল প্রযুক্তিগত অগ্রগতি প্রয়োজন।
 

কেন বায়োনিক কিডনি দরকার?

বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে ভুগছেন। প্রতিস্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত দাতা কিডনি পাওয়া যায় না। ডায়ালাইসিস দীর্ঘমেয়াদে ব্যয়সাপেক্ষ ও কষ্টকর। একটি কার্যকর বায়োনিক কিডনি এসব সমস্যার সমাধানে বিপ্লব ঘটাতে পারে।


আজকের দিনে বায়োনিক কিডনি এখনো এক গবেষণাধীন স্বপ্ন। এটি কোনো রোগীর দেহে সফলভাবে স্থাপন করা যায়নি, তবে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অগ্রগতি ঘটছে। হেমোডায়ালাইসিস এখনো একমাত্র নির্ভরযোগ্য কৃত্রিম সমাধান। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, অদূর ভবিষ্যতে বায়োনিক কিডনি বাস্তবে রূপ নেবে এবং কিডনি রোগীদের জীবনে নতুন আলো বয়ে আনবে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ