সৌন্দর্যের গোপন অস্ত্র কি তবে ফেস প্রাইমার?

সৌন্দর্যের গোপন অস্ত্র কি তবে ফেস প্রাইমার?
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

মেকআপের জগতে ফেস প্রাইমার নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। অনেকেই মনে করেন এটি শুধু বিলাসিতার কৌশল, আবার অনেকে বিশ্বাস করেন—প্রাইমার ছাড়া মেকআপ অসম্পূর্ণ। আসলে সত্যিটা মাঝামাঝি। প্রাইমার ব্যবহার একেবারে আবশ্যক নয়, তবে সঠিকভাবে ব্যবহার করলে এটি মেকআপকে দীর্ঘস্থায়ী ও নিখুঁত করে তোলে, বিশেষ করে যাদের ত্বক তৈলাক্ত বা রোমছিদ্র বড়।

প্রাইমার আসলে কী?

প্রাইমার হলো এক ধরনের বেস লেয়ার, যা মেকআপ লাগানোর আগে ব্যবহার করা হয়। এটি ত্বককে মসৃণ করে, ছোটখাটো অসম্পূর্ণতা আড়াল করে এবং ফাউন্ডেশন বা কনসিলারের জন্য উপযুক্ত একটি ভিত্তি তৈরি করে। সহজভাবে বলতে গেলে—প্রাইমার মেকআপ ও ত্বকের মাঝে একটি সুরক্ষা স্তর তৈরি করে।

 

প্রাইমারের মূল সুবিধা- 

⇨ মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী করা: প্রাইমার ত্বকের সাথে ফাউন্ডেশনের আস্তরণকে ভালোভাবে আটকে রাখে। ফলে ঘাম, আর্দ্রতা বা পরিবেশগত কারণে মেকআপ সহজে নষ্ট হয় না। অফিস, পার্টি বা দীর্ঘসময় বাইরে থাকার দিনে এটি উপকারী।
 

⇨ ত্বকের টেক্সচার মসৃণ করা: সূক্ষ্ম রেখা, বলিরেখা বা বড় রোমছিদ্র থাকলে প্রাইমার সেগুলোকে ভরাট করে দেয়, ফলে ফাউন্ডেশন সমানভাবে বসে। বিশেষত ফটোশুট বা ব্রাইডাল মেকআপে এটি দারুণ কাজ করে।
 

⇨ ত্বকের রঙ ঠিক করা:  কিছু প্রাইমারে কালার-কারেক্টিং উপাদান থাকে। যেমন সবুজ প্রাইমার লালচেভাব কমাতে সাহায্য করে, আর পার্পল টোন ত্বকের নিস্তেজভাব কাটায়।
 

⇨ অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করা: তৈলাক্ত ত্বকে মেকআপ টিকিয়ে রাখা অনেক কঠিন। ম্যাটিফাইং প্রাইমার তেল শোষণ করে, ফলে মুখ সারাদিন সতেজ ও শাইন-ফ্রি থাকে।

⇨ ত্বককে সুরক্ষা দেওয়া: প্রাইমার মেকআপের ভারী কেমিক্যালকে সরাসরি ত্বকের সংস্পর্শে আসতে বাধা দেয়। ফলে দীর্ঘসময় মেকআপ করলেও ত্বক তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

 

কখন প্রাইমার ব্যবহার করা জরুরি?

☞ তৈলাক্ত ত্বক থাকলে – অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণের জন্য ম্যাটিফাইং প্রাইমার ভালো কাজ করে।

☞ দাগ বা লালচেভাব থাকলে – কালার-কারেক্টিং প্রাইমার ব্যবহার করলে ফাউন্ডেশনের আগে ত্বকের টোন অনেকটা সমান হয়ে যায়।

☞ দীর্ঘসময় মেকআপ টিকিয়ে রাখতে চাইলে – বিশেষ কোনো অনুষ্ঠান বা সারাদিনের বাইরে থাকার দিনে প্রাইমার ব্যবহার চোখে পড়ার মতো পার্থক্য আনে।
 

প্রাইমার ব্যবহারের সময় যে বিষয়গুলো মনে রাখা জরুরি- 

⇨ ত্বকের ধরণ অনুযায়ী প্রাইমার বেছে নিন।

◑ তৈলাক্ত ত্বক → ম্যাটিফাইং প্রাইমার

◑ শুষ্ক ত্বক → হাইড্রেটিং প্রাইমার

◑ কম্বিনেশন স্কিন → টি-জোনে ম্যাটিফাইং, 

◑ অন্য অংশে হাইড্রেটিং ব্যবহার করা যেতে পারে।
 

⇨ স্কিনকেয়ার রুটিন বাদ দেবেন না। প্রাইমার কোনোভাবেই ময়েশ্চারাইজার বা সানস্ক্রিনের বিকল্প নয়। বরং প্রাইমারের আগে স্কিনকেয়ারের সব ধাপ সঠিকভাবে শেষ করা উচিত।
 

⇨ অতিরিক্ত ব্যবহার নয়- অল্প পরিমাণ প্রাইমারই যথেষ্ট। বেশি ব্যবহার করলে উল্টো ফাউন্ডেশন বসতে সমস্যা হতে পারে।
 

ফেস প্রাইমার ব্যবহার একেবারে আবশ্যক নয়। তবে যাদের ত্বক তৈলাক্ত, অসমান টেক্সচার রয়েছে বা মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী করতে হয়, তাদের জন্য এটি একটি কার্যকর সমাধান। সঠিক প্রাইমার বেছে নিলে মেকআপ শুধু সুন্দর হয় না, বরং ত্বকও কিছুটা সুরক্ষা পায়। তাই প্রাইমারকে বিলাসিতা নয়, বরং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহারযোগ্য একটি টুল হিসেবেই ধরা যায়।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ