প্রতিদিন শুধু ফুল দেখলেই মস্তিষ্কে বাড়ে মনোযোগ, মোটিভেশন ও উদ্দীপনা

প্রতিদিন শুধু ফুল দেখলেই মস্তিষ্কে বাড়ে মনোযোগ, মোটিভেশন ও উদ্দীপনা
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

আমাদের চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ফুলের দৃশ্য কেবল নান্দনিক নয়, বরং মস্তিষ্কের রাসায়নিক ভারসাম্য ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। সাম্প্রতিক মনোবিজ্ঞানী এবং স্নায়ুবিজ্ঞানের গবেষণা অনুযায়ী, প্রতিদিন ফুল দেখলে মস্তিষ্কে ডোপামিন (dopamine) নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়। ডোপামিন হল একটি গুরুত্বপূর্ণ নিউরোট্রান্সমিটার, যা আনন্দ, মনোযোগ, মোটিভেশন এবং মানসিক উদ্দীপনা বাড়ায়।

ফুল কেন মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে?

১. দৃষ্টি ও রঙের প্রভাব: ফুলের উজ্জ্বল রঙ এবং নান্দনিক বিন্যাস চোখের ভিজ্যুয়াল কর্টেক্সে পৌঁছে। ভিজ্যুয়াল স্টিমুলেশন ডোপামিন ও সেরোটোনিন নিঃসরণ বাড়ায়।
উদাহরণস্বরূপ, লাল রঙ উদ্দীপনা ও শক্তি দেয়, নীল রঙ মানসিক শান্তি বৃদ্ধি করে, হলুদ রঙ আনন্দের অনুভূতি বাড়ায়।

২. সুগন্ধের প্রভাব: গোলাপ, লিলি, জেসমিন বা ল্যাভেন্ডারের সুগন্ধ নাকের মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছে।
সুগন্ধি অণু হিপোক্যাম্পাস ও অ্যামিগডালা অংশকে সক্রিয় করে।

ফলস্বরূপ স্ট্রেস কমে, ডোপামিন এবং সেরোটোনিন বৃদ্ধি পায়, যা আনন্দ এবং প্রশান্তি অনুভূতি তৈরি করে।

৩. মানসিক প্রশান্তি ও স্ট্রেস হ্রাস: ফুল দেখলে কোর্টিসল (cortisol) হরমোনের মাত্রা কমে।
কম কোর্টিসল মানে কম স্ট্রেস, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ হ্রাস। ডোপামিন বৃদ্ধি মানে মেজাজ উন্নত হওয়া, উদ্দীপনা বাড়ানো এবং জীবনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি।

 

প্রতিদিন ফুল দেখার সুফল-

⇨ মেজাজ উন্নয়ন ও মানসিক শান্তি: বিষণ্নতা ও উদ্বেগ কমায়।

⇨সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবন ক্ষমতা: আর্ট, লেখালিখি, বা নতুন আইডিয়া তৈরিতে সহায়ক।

⇨ স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধি: শিক্ষার্থী এবং কর্মজীবীদের জন্য উপকারী।

⇨স্ট্রেস হ্রাস ও মানসিক পুনর্নবীকরণ: ডোপামিন বৃদ্ধির মাধ্যমে মনকে প্রশান্তি দেয়।

⇨ শারীরিক উপকারিতা: মানসিক প্রশান্তি রক্তচাপ কমাতে ও হৃদয়-স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
 

Journal of Environmental Psychology-এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা অফিস বা ঘরে ফুল রাখে, তাদের মেজাজ উন্নত এবং স্ট্রেস কম থাকে। Neuroscience রিপোর্ট অনুযায়ী, ফুল দেখলে মস্তিষ্কের ডোপামিন নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়, যা আনন্দ, উদ্দীপনা ও মোটিভেশন বাড়ায়। প্রাচীন হিন্দু ও চীনা চিকিৎসা পদ্ধতিতেও ফুলের দৃশ্য ও সুগন্ধের মানসিক প্রশান্তি বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
 

এছাড়া, আধুনিক স্নায়ুবিজ্ঞান বলছে, ফুল বা প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখলে সিম্প্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রের উত্তেজনা কমে, মানে দেহে চাপের হরমোন কমে এবং parasympathetic system সক্রিয় হয়, যা শান্তি ও পুনর্নবীকরণ ঘটায়।
 

ফুল শুধু চোখকে আনন্দ দেয় না, বরং মস্তিষ্কের রাসায়নিক ভারসাম্য এবং মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে। প্রতিদিন ফুল দেখার অভ্যাস তৈরি করলে ডোপামিন বৃদ্ধি পায়, স্ট্রেস কমে এবং জীবন মান উন্নত হয়।

ফুলকে শুধু সাজসজ্জার জন্য নয়, বরং প্রাকৃতিক মানসিক সুস্থতার একটি শক্তিশালী উপায় হিসেবেও গ্রহণ করা যেতে পারে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ