আপনার শিশুটি কি ক্রমেই রাগী হয়ে উঠছে? অবহেলা না করে জানুন কারণ ও সমাধান

আপনার শিশুটি কি ক্রমেই রাগী হয়ে উঠছে? অবহেলা না করে জানুন কারণ ও সমাধান
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

শিশুরা কখনও কখনও অপ্রত্যাশিতভাবে আক্রমণাত্মক আচরণ দেখায় বন্ধুকে ঠেস দেয়, খেলনা লুটে নেয়, বা রেগে চিৎকার করে। কিন্তু কেন এমন আচরণ ঘটে? শিশুদের আক্রমণাত্মক আচরণের পেছনে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক নানা কারণ কাজ করে।

সাধারণ কারণসমূহ-

⇨ হতাশা ও চাহিদা পূরণ না হওয়া: যখন শিশুরা তাদের চাওয়া জিনিস পায় না বা কোনো সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হয়, তখন তারা হতাশ হয়ে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, খেলনা না পেলে বন্ধুদের প্রতি রাগ দেখানো।
 

⇨ যোগাযোগের অভাব: ছোট শিশুরা তাদের অনুভূতি বা সমস্যা সঠিকভাবে ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারে না। তাই তারা রাগ বা বিরক্তি প্রকাশের জন্য শারীরিক বা শব্দ-based আক্রমণাত্মক পদ্ধতি ব্যবহার করে।
 

⇨ ভয় ও উদ্বেগ:  নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া কঠিন হলে শিশু ভীত বা উদ্বিগ্ন হয়। ডে-কেয়ার বা স্কুলে প্রথম যাত্রার সময় আক্রমণাত্মক আচরণ দেখা যায়।
 

⇨ আবেগ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা: শিশুদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা পুরোপুরি বিকশিত হয় না। তীব্র রাগ বা হতাশার সময় তারা আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আক্রমণাত্মক হয়ে পড়ে।
 

⇨ শারীরিক অসুস্থতা বা ক্লান্তি: ক্ষুধা, ক্লান্তি, বা হালকা অসুস্থতা থেকেও শিশুদের আচরণ হঠাৎ বদলে যেতে পারে।
 

মানসিক ও পারিপার্শ্বিক কারণ- 

⇨ মানসিক স্বাস্থ্যগত অবস্থা: ADHD, অটিজম বা অন্যান্য মানসিক সমস্যা শিশুদের মধ্যে আক্রমণাত্মক আচরণের জন্য ভূমিকা রাখতে পারে।

⇨ আবেগ ও মনোযোগের অভাব: অতিরিক্ত চঞ্চলতা বা অমনোযোগিতা শিশুকে সহজে রাগী করে তোলে।

⇨ আত্মবিশ্বাসের অভাব: নিজের প্রতি বিশ্বাস কম থাকলে বা বাবা-মায়ের মনোযোগ আকর্ষণ করতে শিশুরা রাগ বা আক্রমণ ব্যবহার করে।
 

করণীয় ও সমাধান:

⇨ আদর্শ আচরণে প্রশংসা ও অভিযোগ ব্যালান্স করা: শিশুর আচরণে ভালো-মন্দ বুঝতে না পারলে সরাসরি শাসন বা অভিযোগের পরিবর্তে বোঝানো উচিত। ভালো আচরণের জন্য প্রশংসা করা শিশুর আচরণকে ইতিবাচক দিকে মোড় দিতে সাহায্য করে।
 

⇨ বিকল্প শেখানো: শিশুকে শেখান কীভাবে শব্দ ব্যবহার করে রাগ বা হতাশা প্রকাশ করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, "আমি রাগান্বিত কারণ..." বলতে উৎসাহিত করা।
 

⇨ গঠনমূলক কার্যকলাপে যুক্ত করা: শিশুকে এমন খেলা বা কার্যকলাপে রাখুন যেখানে অন্যদের সঙ্গে সহযোগিতা ও সহমর্মিতা গুরুত্বপূর্ণ। এটি শক্তিকে সৃজনশীল ও ইতিবাচক কাজে ব্যবহার করতে শেখায়।
 

⇨ পেশাদার সাহায্য: যদি আক্রমণাত্মক আচরণ নিয়মিত, গুরুতর বা হঠাৎ বেড়ে যায়, তাহলে সাইকোলজিস্ট বা শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
 

শিশুর আক্রমণাত্মক আচরণ কেবলই সমস্যা নয়, এটি একটি সংকেত—শিশু মানসিক বা শারীরিকভাবে কিছু প্রকাশ করতে চাইছে। পারিবারিক পরিবেশ, ধৈর্যশীল আচরণ শিক্ষা, এবং সঠিক গাইডলাইন শিশুর এই আচরণকে গঠনমূলক ও ইতিবাচক দিকে নিয়ে যেতে পারে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ