সৌদি আরবে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক
ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি আলোচনার নতুন সম্ভাবনা

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য ভবিষ্যতে সৌদি আরবে বৈঠক করতে পারেন বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। বুধবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন। এছাড়া, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান এবং হারানো ভূখণ্ড ফিরে পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, "ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়া বাস্তবসম্মত নয়, এবং হারানো সব ভূখণ্ড ফিরে পাওয়াও অসম্ভব।"
ট্রাম্প বুধবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে পৃথক ফোনালাপ করেন। প্রায় তিন বছর ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে এই আলোচনা ট্রাম্পের একটি বড় কূটনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যুদ্ধের শুরু থেকে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় সমর্থক ছিল বাইডেন প্রশাসন, তবে ট্রাম্প এই যুদ্ধের সমালোচক এবং যুদ্ধ সমাপ্তি তার নির্বাচনী অঙ্গীকারের একটি বড় অংশ।
ট্রাম্প পুতিনের সঙ্গে হওয়া ফোনালাপকে 'দীর্ঘ ও কার্যকর' বলে বর্ণনা করেছেন। ক্রেমলিন সূত্রে জানা গেছে, দুই নেতার মধ্যে প্রায় ৯০ মিনিট ধরে আলোচনা হয়েছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, দুই নেতা সরাসরি বৈঠক করতে সম্মত হয়েছেন এবং মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে একমত হয়েছেন।
ট্রাম্পকে মস্কো সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পুতিন, এবং ট্রাম্প তা গ্রহণ করেছেন। একইভাবে, ট্রাম্প পুতিনকে ওয়াশিংটন সফরের আমন্ত্রণ জানান, যাতে পুতিনও সম্মতি দিয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে জল্পনা ছিল যে, ট্রাম্প ও পুতিন তৃতীয় কোনো দেশে বৈঠক করতে পারেন, যার মধ্যে সৌদি আরব বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাম উঠে আসছিল।
পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পর ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গেও প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ফোনালাপ করেন। জেলেনস্কির অফিস থেকে জানানো হয়, এই আলোচনা 'অর্থপূর্ণ' ছিল। ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেন, "জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বললাম। পুতিনের মতো তিনিও শান্তি চান।"
এদিকে, আগামী শুক্রবার মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে জেলেনস্কির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় হামলা শুরু করে রাশিয়া, যা মস্কো 'বিশেষ সামরিক অভিযান' বলে অভিহিত করে। এর আগে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় রাশিয়া। বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূমি রাশিয়ার দখলে রয়েছে।
ট্রাম্প-পুতিনের সম্ভাব্য বৈঠক এবং যুদ্ধবিরতি আলোচনা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। তবে এই আলোচনা কতটা সফল হবে, তা এখনও অনিশ্চিত।