ঘুমানোর আগে ছোট্ট এই একটি অভ্যাসই বদলে দিতে পারে আপনার শিশুর ভবিষ্যৎ-গড়ে তুলতে পারে তাকে দৃঢ় ও শক্তিশালী সিদ্ধান্তগ্রহীতা!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
শিশুদের ঘুমানোর আগে গল্প শোনানোর অভ্যাস আমাদের সংস্কৃতির এক চিরচেনা ছবি। মায়ের কণ্ঠে রূপকথা, দাদির মুখে লোককাহিনি কিংবা বাবার স্নিগ্ধ স্বরে বলা কোনো ছোট্ট গল্প—এসব শুধু বিনোদনের জন্য নয়, বরং শিশুদের মানসিক বিকাশেও গভীর প্রভাব ফেলে। সাম্প্রতিক গবেষণা ও মনোবিজ্ঞানীদের বিশ্লেষণ বলছে, প্রতিদিন রাতে গল্প শোনা শিশুরা অন্যদের তুলনায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে শেখে এবং জীবনের নানা পরিস্থিতিতে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে।
গল্প মূলত এক ধরনের প্রতীকী শিক্ষা। গল্পে থাকে চরিত্র, তাদের সংকট আর সমাধান। যখন শিশু এসব শোনে, তখন তাদের মস্তিষ্কে কল্পনার জগৎ তৈরি হয়। গল্পের নায়ক-নায়িকার ভুল বা সঠিক সিদ্ধান্ত থেকে শিশুরা শিখতে শুরু করে—কোন পরিস্থিতিতে কীভাবে আচরণ করা উচিত। এতে তাদের critical thinking, problem solving skill এবং decision making ability ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়।
নিউরোসায়েন্সের দৃষ্টিতে, মস্তিষ্কের prefrontal cortex অংশ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দায়ী। ঘুমানোর আগে গল্প শোনার সময় শিশু যখন মনোযোগ দিয়ে চরিত্র ও ঘটনাপ্রবাহ কল্পনা করে, তখন ওই অংশে স্নায়ুকোষের সংযোগ (synapse) বাড়তে থাকে। এতে শিশুর মস্তিষ্কে তথ্য বিশ্লেষণ ও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা গড়ে ওঠে।
গল্পে সাধারণত নৈতিক বার্তা লুকানো থাকে-সততা, সাহস, সহমর্মিতা কিংবা আত্মবিশ্বাস। এসব গল্প শিশুদের মনে এক ধরনের আবেগী ছাপ তৈরি করে। এর ফলেই তারা যখন বাস্তব জীবনে কোনো সমস্যার মুখোমুখি হয়, তখন সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করে না।
রাতের গল্প শুধু জ্ঞান বাড়ায় না, পরিবারে ঘনিষ্ঠতাও বাড়ায়। বাবা-মায়ের কণ্ঠে গল্প শোনার মাধ্যমে শিশুরা নিরাপত্তা ও ভালোবাসার অনুভূতি পায়, যা তাদের আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। আর আত্মবিশ্বাসই হলো দ্রুত ও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার মূল চাবিকাঠি।
মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট গল্প শোনানো শিশুর মানসিক বিকাশে অসাধারণ প্রভাব ফেলতে পারে। তবে গল্প হতে হবে বয়স উপযোগী, যাতে শিশু সহজেই বুঝতে পারে এবং আগ্রহ নিয়ে শোনে।
তাই রাতের গল্প শুধু বিনোদন নয়, বরং শিশুর মস্তিষ্কের প্রশিক্ষণ। বলা যায়, গল্পই শিশুর প্রথম শ্রেণির শিক্ষক, যে তাকে শেখায় সিদ্ধান্তের গুরুত্ব এবং সঠিক সময়ে সঠিক পথ বেছে নেওয়ার দক্ষতা।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।