সৌদি-পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তিতে বদলে যাবে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা সমীকরণে নতুন মোড় আনতে যাচ্ছে সৌদি আরব ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক প্রতিরক্ষা চুক্তি। কাতারে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার এক সপ্তাহ পর রিয়াদে এই ঐতিহাসিক চুক্তি সই করেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ সৌদি আরবকে কার্যত পাকিস্তানের ‘পারমাণবিক ছাতার’ আওতায় আনার ইঙ্গিত বহন করছে।
যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, যে কোনো এক দেশের বিরুদ্ধে আক্রমণ উভয়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ হিসেবে গণ্য হবে। এতে দুই দেশের দীর্ঘদিনের কৌশলগত অংশীদারত্ব ও সামরিক সহযোগিতার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। ১৯৬০-এর দশক থেকেই পাকিস্তানি সেনারা মক্কা-মদিনার নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করে আসছে।
আবার ইরানের ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে রিয়াদ-ইসলামাবাদ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়। ধারণা করা হয়, পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে সৌদি আরব আর্থিক সহায়তা করেছিল। ফলে বহু বছর ধরে অনুমান করা হচ্ছিল, প্রয়োজনে রিয়াদ পাকিস্তানের পারমাণবিক সুরক্ষার ওপর নির্ভর করতে পারে।
চুক্তির সময়কে তাৎপর্যপূর্ণ বলছেন বিশ্লেষকরা। বর্তমানে ইসরায়েল গাজা, লেবানন, সিরিয়া ও ইয়েমেনে বহুমুখী যুদ্ধে জড়িত। কাতারের ওপর হামলা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। ফলে সৌদি-পাকিস্তান প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সরাসরি বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র এখনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে ভারত জানিয়েছে, তারা চুক্তির প্রভাব আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার ওপর কীভাবে পড়তে পারে তা খতিয়ে দেখবে। অন্যদিকে ইরানও পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চুক্তি উপসাগরে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বাড়াতে পারে।
সৌদি আরবের জন্য এটি বিকল্প নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ হলেও পাকিস্তানের জন্য এক বড় কূটনৈতিক সাফল্য। তবে এর ফলে ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক চাপ ও নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকির মুখোমুখি হতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতেও গভীর প্রভাব ফেলবে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।