আরব ন্যাটো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন আটকে গেল যে কারণে
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
আরব ন্যাটো বা যৌথ প্রতিরক্ষা জোট গঠনের উদ্যোগ দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায় থাকলেও বাস্তবায়নের পথে নানা প্রতিবন্ধকতায় তা থেমে আছে। মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক উত্তেজনা ও ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে মিসর দোহা শীর্ষ সম্মেলনে ১৯৫০ সালের পারস্পরিক প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তির আলোকে একটি দ্রুত প্রতিক্রিয়া বাহিনী গঠনের প্রস্তাব তোলে। প্রস্তাবটির উদ্দেশ্য ছিল বিদেশী শক্তির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বহিরাগত হুমকি, বিশেষ করে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
তবে এই উদ্যোগ শুরুতেই নেতৃত্বের প্রশ্নে জটিলতায় পড়ে। মিসর সামরিক অভিজ্ঞতার কারণে নেতৃত্ব দাবি করে, অন্যদিকে সৌদি আরবও নেতৃত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। এ নিয়ে অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ দেখা দেয়।
একইসঙ্গে কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে পরিকল্পনাটি এগোতে বাধা দেয়। বৈঠকের পর সৌদি আরব পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করে, যা আরব বিশ্বের ভেতরকার বিভক্তিকে আরও স্পষ্ট করে।
এ প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রভাবও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মিডল ইস্ট আই-এর তথ্য অনুযায়ী, কাতারি প্রতিনিধিদল বৈঠকে ওয়াশিংটনের বার্তা তুলে ধরে যে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতি দেয়, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখবে এবং ইসরাইলকে উপসাগরীয় দেশগুলোর ওপর হামলা চালাতে বাধা দেবে। সংযুক্ত আরব আমিরাত এই অবস্থানকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে। ফলে চূড়ান্ত বিবৃতিতে ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা জানানো হলেও বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এই ব্যর্থতায় হতাশা প্রকাশ করেন এবং বৈঠক থেকে আগেভাগেই দোহা ত্যাগ করেন। বিশ্লেষকদের মতে, আরব জোটের এই ভাঙন ইসরাইলকে মোকাবিলার প্রশ্নে আরব বিশ্বের গভীর বিভক্তি স্পষ্ট করেছে এবং মিসরের আঞ্চলিক নেতৃত্বের স্বপ্নে বড় ধাক্কা দিয়েছে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।