অবিবাহিত জীবনের ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি?
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
অবিবাহিত জীবনের ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে জানুন কুরআন ও হাদিসভিত্তিক নির্দেশনা। ইসলাম মতে অবিবাহিত থাকা হারাম নয়, বরং আত্মসংযম, তাকওয়া ও ধৈর্যের পরীক্ষা। বিবাহ, রোজা, নৈতিকতা ও ইবাদতের গুরুত্বের আলোকে অবিবাহিত জীবন কীভাবে হালাল ও কল্যাণকর হতে পারে।
ইসলামে বিবাহ মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও স্বাভাবিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত। এটি শুধু সামাজিক ও পারিবারিক কাঠামোর ভিত্তিই নয়, বরং ঈমান রক্ষার অন্যতম মাধ্যম। হাদিসে উল্লেখ আছে, বিবাহ দ্বীনের অর্ধেক পূর্ণ করে। তবে প্রশ্ন দেখা দেয়, অবিবাহিত থাকা কি ইসলামি শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম? এ বিষয়ে আলেমরা স্পষ্ট করেছেন, অবিবাহিত জীবন নিজে থেকে হারাম নয়।
কুরআনে বলা হয়েছে, যারা বিবাহে সক্ষম নয় তারা যেন সংযম অবলম্বন করে এবং আল্লাহর অনুগ্রহের অপেক্ষায় থাকে। (সূরা আন-নূর: ৩৩) অর্থাৎ বিবাহ দেরি হলে বা সাময়িকভাবে অসম্ভব হলে অবিবাহিত জীবন বৈধ, তবে আত্মসংযম অপরিহার্য শর্ত।
রাসুলুল্লাহ (সা.) যুবকদের প্রতি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, সামর্থ্যবান হলে বিবাহ করতে, কারণ এটি দৃষ্টি সংযম ও পবিত্রতার মাধ্যম। সামর্থ্য না থাকলে রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন, যা পাপ থেকে বাঁচার ঢালস্বরূপ।
ফিকহ অনুযায়ী, ব্যক্তির পরিস্থিতি ভেদে বিবাহ কখনো ফরজ, কখনো ওয়াজিব, কখনো মুস্তাহাব বা নফল হয়। আবার, যার স্ত্রীর হক আদায়ের ক্ষমতা নেই তার জন্য বিবাহ নাজায়েজ। তাই বিবাহের বিধান পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।
বাস্তব জীবনে অনেকেই আর্থিক অসচ্ছলতা, উপযুক্ত সঙ্গী না পাওয়া বা সামাজিক কারণে অবিবাহিত থাকেন। ইসলাম তাদের অপরাধী মনে করে না, বরং ধৈর্য, তাকওয়া, ইবাদত ও জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে এ সময়কে আত্মশুদ্ধির সুযোগ হিসেবে কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছে। তবে অবিবাহিত জীবনের ঝুঁকিও রয়েছে, কারণ একাকীত্ব সহজেই পাপের দরজা খুলে দেয়। তাই রোজা, ইবাদত, সৎ সঙ্গ এবং দৃষ্টি সংযমই অবিবাহিত জীবনের নিরাপদ পথ।
অতএব, অবিবাহিত থাকা ইসলামে হারাম নয়; বরং এটি এক ধরনের পরীক্ষা। যে আত্মসংযম ও তাকওয়ার সঙ্গে এ সময় পার করবে, তার জন্য এ জীবন আল্লাহর নৈকট্যের মাধ্যম হতে পারে। অন্যদিকে গাফিলতি ও পাপাচারে লিপ্ত হলে অবিবাহিত জীবন হবে ক্ষতির কারণ।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।