সৌন্দর্যের আড়ালে ভয়ংকর ফাঁদ! স্যালোনের হেয়ার মাস্কে লুকিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য!

সৌন্দর্যের আড়ালে ভয়ংকর ফাঁদ! স্যালোনের হেয়ার মাস্কে লুকিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য!
ছবির ক্যাপশান, সৌন্দর্যের আড়ালে ভয়ংকর ফাঁদ! স্যালোনের হেয়ার মাস্কে লুকিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য!
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

শহরের স্যালোনগুলোতে হেয়ার মাস্ক এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় সৌন্দর্যসেবার একটি অংশ। অল্প সময়েই চুলকে মসৃণ, উজ্জ্বল ও ঘন দেখানোর দাবি করে এই সেবা। কিন্তু ভেতরে লুকিয়ে আছে অচেনা ঝুঁকি। অনেক স্যালোনেই ব্যবহৃত হচ্ছে অজ্ঞাত উৎস থেকে আনা মাস্ক, যেগুলোতে নেই উপাদানের সঠিক তথ্য, মান পরীক্ষার সনদ বা অনুমোদন। ভোক্তারা তাই সাময়িক সৌন্দর্যের লোভে অজান্তেই স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন।

একটি হেয়ার মাস্কের গুণগত মান পুরোপুরি নির্ভর করে এতে ব্যবহৃত উপাদান ও ফর্মুলেশনের ওপর। চুলের ধরণ ও সমস্যার ভিত্তিতে এগুলো তৈরি করা হয়।

◑ ময়েশ্চারাইজিং তেল, ভিটামিন ও প্রোটিন: একটি ভালো মাস্ক চুলের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রাখে, কেরাটিন বা সিল্ক প্রোটিন সরবরাহ করে এবং রাসায়নিক বা তাপজনিত ক্ষতি মেরামতে সাহায্য করে।

◑ গভীর কন্ডিশনিং: মানসম্পন্ন মাস্ক গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত পুষ্টি যোগায়, ফলে চুল হয় নরম, মসৃণ ও উজ্জ্বল।

◑ ক্ষতি নিরাময়: যেসব মাস্ক রাসায়নিক প্রসেস বা হিট স্টাইলিং-এর ক্ষতি পূরণে সহায়তা করে, সেগুলোই আসল অর্থে কার্যকর। উদাহরণস্বরূপ, আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় K18 মাস্ককে বিশেষজ্ঞরা ক্ষতিগ্রস্ত চুল মেরামতের জন্য উপযোগী বলে উল্লেখ করেছেন।

মানসম্পন্ন হেয়ার মাস্কের বৈশিষ্ট্য:

⇨ প্রাকৃতিক উপাদান: নারকেল তেল, আরগান তেল, অ্যাভোকাডো তেল এসব উপাদান গভীর পুষ্টি ও আর্দ্রতা দেয়।

⇨ প্রোটিন সমৃদ্ধ: কেরাটিন, সিল্ক প্রোটিন ইত্যাদি চুলের গঠনকে মজবুত করে।

⇨ ক্ষতিগ্রস্ত চুল পুনরুদ্ধার: রাসায়নিক রং বা হিট স্টাইলিং-এর ক্ষতি মেরামতে কার্যকর।

⇨ দীর্ঘস্থায়ী ফলাফল: গভীর কন্ডিশনিং-এর মাধ্যমে চুলে স্থায়ী উজ্জ্বলতা ও কোমলতা আনে।

তত্ত্বের জায়গায় সমস্যা তৈরি হয় বাস্তবে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অনেক স্যালোনে হেয়ার মাস্ক হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে এমনসব পণ্য যেগুলোতে

◑ উপাদানের নামই লেখা নেই

◑ মেয়াদোত্তীর্ণ বা নিম্নমানের রাসায়নিক মিশ্রিত

◑ খোলা ডিব্বায় ভরে রাখা অজ্ঞাত উৎসের প্যাকেজ

◑ এসব ভেজাল মাস্কে অতিরিক্ত সিলিকন, প্যারাফিন, কৃত্রিম রং বা সুগন্ধি থাকে, যা চুলকে সাময়িকভাবে চকচকে করলেও দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি করে।

স্বাস্থ্যঝুঁকি: ভেজাল মাস্ক ব্যবহারের ফলে দেখা দিতে পারে

⇨ মাথার ত্বকে অ্যালার্জি, চুলকানি বা লালচে ফুসকুড়ি

⇨ অতিরিক্ত চুল পড়া বা ভেঙে যাওয়া

⇨ স্কাল্পের ছিদ্র বন্ধ হয়ে খুশকি বা ত্বকের সংক্রমণ

⇨ দীর্ঘমেয়াদে হরমোন ভারসাম্যহীনতা বা লিভার-কিডনির ওপর চাপ

⇨ আন্তর্জাতিক গবেষণায় অপ্রমাণিত প্রসাধনীতে সীসা, পারদ, প্যারাবেনস, ফথ্যালেটসের মতো ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গেছে, যেগুলো ক্যানসার ও প্রজনন সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

ব্যবহারের সময় যা লক্ষ্য রাখা উচিত:

⇨ চুলের ধরন: শুষ্ক, ভঙ্গুর, তেলতেলে বা রং করা চুলের ধরন অনুযায়ী মাস্ক বেছে নিতে হবে।

⇨ প্রফেশনাল গ্রেড: মানসম্পন্ন স্যালোন সাধারণত প্রফেশনাল গ্রেড মাস্ক ব্যবহার করে, যা দীর্ঘস্থায়ী ফল দেয়।

⇨ উপাদান যাচাই: ব্যবহারের আগে সবসময় লেবেল পড়ে নিশ্চিত হতে হবে চুলের জন্য দরকারি পুষ্টি রয়েছে কিনা।

⇨ খোলা পণ্য এড়িয়ে চলুন: খোলা ডিব্বার মিশ্রণ একেবারেই ব্যবহার করা উচিত নয়।

কেন ভেজাল বাজারে ছড়াচ্ছে?

◑ প্রসাধনী পণ্যে নিয়ন্ত্রণের ঘাটতি

◑ বিদেশি ব্র্যান্ডের নামে নকল পণ্যের আমদানি

◑ সস্তা দামে সহজলভ্যতা

◑ ভোক্তার সচেতনতার অভাব ও তাড়াহুড়ো করে

◑ ফলাফল চাওয়ার প্রবণতা

চুলের যত্নে হেয়ার মাস্ক নিঃসন্দেহে কার্যকর একটি পণ্য। তবে কার্যকারিতা নির্ভর করে এর উপাদান ও মানের ওপর। অজ্ঞাত ব্র্যান্ড বা ভেজাল মিশ্রণ ব্যবহার করে সাময়িক সৌন্দর্য পাওয়া গেলেও এর দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি ভয়াবহ। তাই ভোক্তাদের সচেতন হতে হবে—চুলের ধরন ও প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক, অনুমোদিত ও মানসম্পন্ন মাস্ক বেছে নিতে হবে। সৌন্দর্য নয়, নিরাপত্তাই হোক সবার আগে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ