আমিরাতে আজ শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-আফগান সিরিজ

আমিরাতে আজ শুরু হচ্ছে  বাংলাদেশ-আফগান সিরিজ
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহতে আজ শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। আজ প্রথম ম্যাচ দিয়ে সিরিজ শুরু হবে। এ সিরিজকে ঘিরে বেশ কিছু বিষয় নজর কাড়ছে ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের নতুন নেতৃত্ব, ব্যাটিং ভারসাম্য খোঁজা, আফগানিস্তানের নবীনদের অন্তর্ভুক্তি, স্পিন আক্রমণের দ্বৈরথ এবং শারজাহর বিশেষ ভেন্যু-পরিসংখ্যান।

বাংলাদেশ এবার নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাকের আলি, যিনি নিয়মিত অধিনায়ক লিটন দাসের চোটের কারণে দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। লিটনের পাঁজরের চোট তাকে পুরো সিরিজ থেকে ছিটকে দিয়েছে। তবে জাকেরের অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা এখনো সীমিত। এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে চার রান ও পাকিস্তানের বিপক্ষে পাঁচ রানে আউট হয়ে তিনি নজর কাড়তে পারেননি। এর আগে ঘরোয়া কিংবা বয়সভিত্তিক ক্রিকেটেও তিনি নেতৃত্ব দেননি। ফলে তার ওপর অধিনায়কত্ব, ব্যাটিং এবং উইকেটকিপিং—তিন দায়িত্ব সামলানোর চাপ থাকবে। যদিও দলের কাছে বিকল্প আছে, চাইলে উইকেটকিপিং দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে নুরুল হাসানকে।

বাংলাদেশের আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ তাদের ব্যাটিংয়ের ভারসাম্য খুঁজে পাওয়া। সাম্প্রতিক সময়ে ছক্কা মারার মানসিকতা তৈরি হলেও, অনেক সময় তা বিপদ ডেকে আনছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে এশিয়া কাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে অতি-আক্রমণাত্মক ব্যাটিং তাদের বড় ক্ষতির কারণ হয়েছিল। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সাইফ হাসান ও তৌহিদ হৃদয়ের হাফসেঞ্চুরিতে তারা ১৬৯ রান তাড়া করে জিতেছিল। সেখানেই স্পষ্ট হয়েছে যে কেবল ছক্কার ওপর নির্ভর না করে স্ট্রাইক রোটেশনের সঠিক মিশেল করতে পারলেই তারা সফল হতে পারে।

অন্যদিকে আফগানিস্তান এ সিরিজে বড় পরিবর্তন এনেছে। অভিজ্ঞ ক্রিকেটার গুলবাদিন নাইব, করিম জানাত ও ফজলহক ফারুকিকে বাদ দিয়েছে নির্বাচকরা। করিম জানাত চলতি বছরে আট ইনিংসে মাত্র ৬৮ রান করেছেন, যা ব্যাটে-বলে ব্যর্থতার প্রমাণ বহন করে। একইভাবে গুলবাদিনও দল থেকে পিছিয়ে গেছেন। তবে নতুন সুযোগ পেয়েছেন অনভিষিক্ত দুই ক্রিকেটার, ওয়াফিউল্লাহ তারাখিল ও বশির আহমদ। বশির দীর্ঘদেহী বাঁহাতি পেসার, যাকে ফারুকির বিকল্প হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর তারাখিল শপাগিজা ক্রিকেট লিগে ২৯৮ রান করে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন।

স্পিন আক্রমণে অবশ্য আফগানিস্তান এখনো সমৃদ্ধ। রশিদ খানের নেতৃত্বে তাদের স্পিন বিভাগ ধারাবাহিকভাবে কার্যকরী। ২০২০ সাল থেকে টি-টোয়েন্টিতে গড়ে, স্ট্রাইক রেটে ও ইকোনমিতে বাংলাদেশি স্পিনারদের চেয়ে এগিয়ে আছে আফগানরা। যদিও বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক দিক হলো রিশাদ হোসেনের আবির্ভাব, যিনি লেগ স্পিনে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছেন। ফলে দুই দলের স্পিন আক্রমণের দ্বৈরথ সিরিজের মূল আকর্ষণ হয়ে উঠতে পারে।

ভেন্যুর পরিসংখ্যানও আফগানিস্তানকে এগিয়ে রাখছে। শারজাহতে তারা ৩০টি ম্যাচ খেলে ২০টিতেই জয় পেয়েছে। বিশেষ করে প্রথমে ব্যাট করলে তারা ১৮টির মধ্যে ১৪টিতে জয় পেয়েছে এবং শেষ ছয়বারের সব কটিতে জয়ী হয়েছে। বিপরীতে বাংলাদেশ শারজাহতে খেলে জিতেছে মাত্র একটি ম্যাচ। তীব্র গরমও খেলোয়াড়দের জন্য বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়াবে।

সব মিলিয়ে, নতুন অধিনায়ক জাকের আলির নেতৃত্ব, বাংলাদেশের ব্যাটিং কৌশল, আফগানিস্তানের নতুন মুখ এবং স্পিন আক্রমণের দ্বৈরথ এই সিরিজকে দিয়েছে ভিন্নমাত্রা। শারজাহর মাঠে উভয় দলের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সই নির্ধারণ করবে কে এগিয়ে যাবে তিন ম্যাচের এই লড়াইয়ে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ