অকাল বীর্যপাতের কারণ কী? বিশেষজ্ঞরা জানালেন চমকপ্রদ কারণ ও কার্যকর সমাধান

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্যের একটি অত্যন্ত সাধারণ কিন্তু অনেক সময় গোপন থাকা সমস্যা হলো অকাল বীর্যপাত (Premature Ejaculation বা PE)। এটি এমন একটি অবস্থার প্রকাশ, যেখানে যৌন মিলনের শুরুতেই বা খুব দ্রুত বীর্যপাত ঘটে, যা নিজের এবং সঙ্গীর যৌন সন্তুষ্টিতে বাধা সৃষ্টি করে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এটি একটি চিকিৎসাযোগ্য সমস্যা, তবে মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং দাম্পত্য জীবনের টানাপোড়েন থাকলে সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
লক্ষণ:
⇨ দ্রুত বীর্যপাত: যৌন মিলনের এক বা দুই মিনিটের মধ্যে বীর্যপাত হওয়া।
⇨ নিয়ন্ত্রণহীনতা: বীর্যপাতের উপর নিয়ন্ত্রণ না থাকা।
⇨ মনোসামাজিক প্রভাব: মানসিক চাপ, হতাশা, আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং সম্পর্কের অবনতি।
ধরণ:
☞ প্রাথমিক (আজীবন): যৌন জীবনের শুরু থেকেই ঘটছে।
☞ মাধ্যমিক (অর্জিত): স্বাভাবিক যৌন মিলনের পর সমস্যা বিকশিত হয় বা মাঝে মাঝে দেখা দেয়।
কারণ:
☞ মানসিক কারণ:
◑ দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ
◑ উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা
◑ হতাশা বা আত্মসম্মানের অভাব
◑ দাম্পত্য জীবনের অস্থিরতা
☞ শারীরিক কারণ:
◑ হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
◑ স্নায়বিক সংবেদনশীলতা বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যা
◑ কিছু ক্ষেত্রে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
চিকিৎসা ও সমাধান
১। আচরণগত কৌশল: 'Stop-start' বা 'squeeze' কৌশল, যা যৌন মিলনের সময় নিয়ন্ত্রণ শেখায়। ধীর এবং মনোযোগী মিলনের মাধ্যমে সংবেদনশীলতা নিয়ন্ত্রণ করা।
২। ওষুধের ব্যবহার: কিছু ধরণের ওষুধ (যেমন SSRI) বীর্যপাত নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত।
৩। পি-শট (Penile Injection) থেরাপি: পুরুষাঙ্গে ইনজেকশনের মাধ্যমে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায়, যা সংবেদনশীলতা কমিয়ে সময় বাড়াতে সাহায্য করে।
৪। জীবনধারার পরিবর্তন: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম,মানসিক চাপ কমানো এবং ধ্যান/যোগব্যায়াম চর্চা করা।
কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন?
যদি আপনি উল্লেখিত লক্ষণগুলো অনুভব করেন এবং তা আপনার যৌন জীবন বা দাম্পত্য সম্পর্ককে প্রভাবিত করছে, তবে যোগ্য চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। চিকিৎসা সময়মতো গ্রহণ করলে অধিকাংশ পুরুষ সম্পূর্ণ স্বাভাবিক যৌন জীবন ফিরে পান।
অকাল বীর্যপাত শুধু যৌন সমস্যা নয়, এটি মানসিক ও সম্পর্কের স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করে। এটি লুকিয়ে রাখা বা উপেক্ষা করা সমাধান নয়। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, আচরণগত কৌশল, ওষুধ ও জীবনধারার পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সমস্যা সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণযোগ্য। সচেতনতা ও সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ করলেই পুরুষেরা তাদের যৌন ও মানসিক স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম।
অতএব, অকাল বীর্যপাত কোনো লজ্জার বিষয় নয়, বরং এটি সচেতনতা ও চিকিৎসার মাধ্যমে সমাধানযোগ্য একটি স্বাস্থ্যকর সমস্যা।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।