বাংলাদেশ মঙ্গল অভিযানে Artemis Accords থেকে রোভার, জানুন কোন চ্যালেঞ্জ আসছে সামনে!

বাংলাদেশ মঙ্গল অভিযানে Artemis Accords থেকে রোভার, জানুন কোন চ্যালেঞ্জ আসছে সামনে!
ছবির ক্যাপশান, বাংলাদেশ মঙ্গল অভিযানে Artemis Accords থেকে রোভার, জানুন কোন চ্যালেঞ্জ আসছে সামনে!
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

মঙ্গলগ্রহ যখন শুধু বিজ্ঞানীদেরই নয় বরং পুরো মানবজাতির ভবিষ্যতের অংশ হয়ে উঠছে তখন 'মঙ্গল অভিযানে বাংলাদেশের অবদান' কথাটি এখন আর অচেনা নয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের মহাকাশ গবেষণায় ধীরে ধীরে কিছু ভিত্তি গড়ে উঠেছে, আর আন্তর্জাতিক ফোরামে অংশগ্রহণ বেড়েছে। তবে আগামী পথে আরও বড় পদক্ষেপ নিতে হবে।

২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ NASA-এর Artemis Accords-এ স্বাক্ষর করেছে, যা একটি আন্তর্জাতিক চুক্তিসমূহের অংশ, যেখানে চাঁদ, মঙ্গল ও বাইরের মহাশূন্যে শান্তিপূর্ণ, স্বচ্ছ ও সহযোগিতামূলক অনুসন্ধান নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এই স্বাক্ষর বাংলাদেশের জন্য বড় একটি মাইলফলক, কারণ এটি প্রযুক্তি স্থানান্তর, গবেষণা সহযোগিতা, শিক্ষা ও ব্যবস্থাপনায় বৈদেশিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ বাড়াবে।

BRAC University একটি রোভার ডিজাইন করেছে, নাম Mongol Tori, যা University Rover Challenge-এ অংশ নিয়েছে। রোবোটিক্স ও স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অংশ কাজ করেছে, যা মঙ্গল গ্রহের জন্য তৈরি সম্ভাব্য বৈজ্ঞানিক মডেলের এক ধাপ হতে পারে।

আবার, Military Institute of Science and Technology (MIST)-এর ছাত্রছাত্রীরা একটি Mars Habitat Design Contest-এ অংশ নিয়েছে, যেখানে তাপমাত্রা, মাটি, বায়ুমণ্ডল প্রভৃতি সমস্যার মোকাবিলা করার জন্য ধারণাসম্পন্ন বসতি নির্মাণের পরিকল্পনা দিয়েছে।

বাংলাদেশ স্পেস রিসার্চ অ্যান্ড রিমোট সেন্সিং অর্গানাইজেশন (SPARRSO) প্রায়ই স্থান-আবস্থা ও পরিবেশ-পরিবর্তন, নদী ও উপকূলীয় অঞ্চল পর্যবেক্ষণ, বন্যা পূর্বাভাস ও খরা বা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় উপাত্ত সরবরাহ করে থাকে। যদিও সরাসরি মঙ্গল সংক্রান্ত নয়, তবে মহাকাশ প্রযুক্তি ও উপগ্রহ-পর্যবেক্ষণ সক্ষমতা গড়ে তোলার দিক থেকে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।

সম্ভাবনা:

Artemis Accords-এর অংশ হয়ে বাংলাদেশ নতুনভাবে যৌথ প্রকল্প (joint missions), প্রযুক্তি বিনিময়, গবেষণাগারে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। যেমন NASA বা অন্য মহাকাশ সংস্থাগুলোর সঙ্গে চুক্তি করলে সাধারণভাবে রোভার, স্পেকট্রোমিটার, ব্যায়ুমিতি-সম্পর্কিত যন্ত্রপাতি ও বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে সহযোগিতা হতে পারে।

রোবোটিক্স ও মহাকাশ প্রযুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যক্রমে নতুন সংযোজন, শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য বিশেষ স্কলারশিপ, আন্তর্জাতিক কর্মশালা ও প্রতিযোগিতা হতে পারবে। যুব-প্রজন্মের মধ্যে আগ্রহ রয়েছে যেমন BRACU-র রোভার প্রকল্প দেখাচ্ছে।

ভবিষ্যতে রোভার প্রস্তুতি, সেন্সর ও কম্পিউটারিভিশন সিস্টেমের মতো প্রযুক্তিতে কাজ করা যায়; ছোট-ছোট স্টার্টআপ বা গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যায়। এছাড়া রিমোট সেন্সিং ও উপগ্রহ প্রযুক্তিতে দক্ষতা বৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য লাভজনক হবে।

চ্যালেঞ্জ:

মহাকাশ গবেষণা খুব ব্যয়বহুল। রোভার বা মহাশূন্য যানবাহনের গবেষণা-উন্নয়ন (R&D), পরীক্ষাগার, যন্ত্রপাতি ও পরিচালনায় প্রচুর টাকা লাগে। সরকারি ও বেসরকারি উভয়খাতে ব্যয় বৃদ্ধির প্রয়োজন।

আবার উন্নত গবেষণা-পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন ভালো গবেষণাগার, উপগ্রহ ডেটা প্রসেসিং সুবিধা, দ্রুত সংযোগ ও সুসংহত ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতা। বিদেশি সহযোগিতায় dependency কমিয়ে এনে নিজস্ব সক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে।

উচ্চমানের গবেষক, ইঞ্জিনিয়ার, প্রযুক্তিবিদ প্রয়োজন যারা মহাকাশ বিজ্ঞান, রোবটিক্স, ডেটা বিজ্ঞান, উপগ্রহ প্রযুক্তিতে দক্ষ। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষায় আরও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

মঙ্গল গ্রহে সরাসরি গবেষণা বা পাঠানোর পরিকল্পনা করলে এটি কয়েক বছরের বা দশকের পরিকল্পনা; ধারাবাহিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সমর্থন থাকতে হবে। intermittency হলে প্রজেক্টগুলো ব্যাহত হবে।

বাংলাদেশ মঙ্গল অভিযানে সরাসরি অংশ নিচ্ছে না এখনও  তবে একটা গুরুত্বপূর্ণ সূচনা হয়েছে। Artemis Accords-এ যুক্ত হওয়া, রোভার ডিজাইন প্রকল্প ও স্টুডেন্ট গবেষণার উদ্যোগগুলো দেখাচ্ছে যে প্রাথমিক ভিত্তি গড়ে উঠছে। আগামী কয়েক বছর যদি আমরা অর্থায়ন বাড়াতে পারি, শিক্ষাগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি করতে পারি, ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরও দৃঢ় করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ মঙ্গল অভিযানে শুধু অংশগ্রহণকারী নয়, একটি সক্ষম অংশীদার হবে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ