শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল জাতীয় নির্বাচনে অযোগ্য প্রার্থী

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আইন সংশোধনের ফলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সোমবার (৬ অক্টোবর) আইন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কারও বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হলে তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বা থাকা, স্থানীয় সরকার সংস্থার কোনো পদে নির্বাচিত হওয়া বা নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়া এবং প্রজাতন্ত্রের কোনো চাকরিতে যোগদান বা বহাল থাকা সব ক্ষেত্রেই অযোগ্য বিবেচিত হবেন। তবে ট্রাইব্যুনাল যদি অভিযোগ খারিজ করে বা অভিযুক্ত ব্যক্তি খালাস পান, সেক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হবে না।
ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে এবং অভিযোগ গঠন শেষে সাক্ষ্যগ্রহণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ফলে নতুন আইনি বিধানের কারণে তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
তবে আইন সংশোধনের এই নতুন ধারা নিয়ে বিতর্কও দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, শুধু অভিযোগ দাখিলের ভিত্তিতে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা হারানো ন্যায্য নয়। এ বিষয়ে মতামত জানিয়ে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এম এ মতিন বলেন, “কোনো ব্যক্তিকে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করতে হলে শুধুমাত্র অভিযোগ দাখিল যথেষ্ট নয়; আদালত অভিযোগ গ্রহণ করলে তবেই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে আসামি হিসেবে বিবেচিত হবেন।” তার মতে, তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র গ্রহণের পরই কগনিজেন্স (আমলে নেওয়া) ধারা অনুযায়ী আইনগতভাবে প্রক্রিয়া শুরু হয়।
অন্যদিকে, আইনি বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ মনে করছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের অস্থায়ীভাবে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা যৌক্তিক হতে পারে, কারণ এসব মামলার বিচার প্রক্রিয়া সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং অভিযুক্তদের প্রভাব বিচার ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে প্রস্তাব তৈরির জন্য একটি কমিশন গঠন করে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে কমিশন তাদের প্রতিবেদনে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী ও যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্তদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার সুপারিশ করে। এর আগে ২০১৩ সালে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের মাধ্যমে কেবল দণ্ডিতদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। নতুন সংশোধনে এবার অভিযোগ দাখিলের পর্যায় থেকেই অযোগ্যতার বিধান কার্যকর হলো।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।