ইসরায়েলকে সক্রিয় সামরিক সহায়তা দিয়েছে জার্মানি

ইসরায়েলকে সক্রিয় সামরিক সহায়তা দিয়েছে জার্মানি
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ১২ দিনের সামরিক আগ্রাসনে জার্মান সেনাবাহিনী ইসরায়েলের হয়ে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল বলে চাঞ্চল্যকর দাবি করছে ইরানি সংবাদমাধ্যম তেহরান টাইমস। সম্প্রতি প্রকাশিত তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানির এই সামরিক সংশ্লিষ্টতা কেবল রাজনৈতিক সমর্থন বা কূটনৈতিক বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং দেশটি গোপনে সেনা মোতায়েন করে ইসরায়েলকে তার সামরিক লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করেছে।

এই হামলায় এক হাজারের বেশি ইরানি নাগরিক নিহত হন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

তেহরান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুনে সংঘটিত এই সংঘাতে জার্মানি ছিল ইসরায়েলের পক্ষে থাকা পশ্চিমা দেশগুলোর অন্যতম। যুদ্ধ চলাকালে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিক মের্জ প্রকাশ্যে ইসরায়েলের আগ্রাসনকে সমর্থন জানান এবং স্বীকার করেন যে, হামলার আগেই তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলেন।

মের্জের দাবি ছিল, ইসরায়েলিদের কাছে 'ইরানের ওপর হামলা না করা কোনো বিকল্পই ছিল না', কারণ তাদের 'আত্মরক্ষার অধিকার' রয়েছে।
ইসরায়েল এই হামলার পক্ষে যুক্তি দেয় যে, এগুলো ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর জন্য চালানো হয়েছিল। তবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি গত সপ্তাহে নিশ্চিত করেছেন যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে—এমন কোনো প্রমাণ সংস্থাটি কখনোই পায়নি।

এদিকে ইরানি গোয়েন্দা সংস্থাকে দেওয়া তথ্যমতে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক সদস্য নিশ্চিত করেছে যে, ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলি সরকারের অনুরোধে কিছু জার্মান সেনা তেল আবিবে অবস্থান নিয়েছিল।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত একটি গোপন চুক্তির অধীনে জার্মান সেনারা এই সামরিক অভিযানে অংশ নেয়। চুক্তিটি জার্মান ও ইসরায়েলি কমান্ডারদের মধ্যে গোপনে সম্পাদিত হলেও, এর বিস্তারিত তথ্য এখন ইরানের হাতে এসেছে বলে দাবি করা হয়েছে।

তথ্যমতে, দীর্ঘমেয়াদে থাকার প্রতিশ্রুতি করলেও ইসরায়েলে নিয়োজিত জার্মান সেনারা আর্থিক পারিশ্রমিক পেলেও, যুদ্ধ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত দখলকৃত এলাকা ত্যাগ করে। ফাঁস হওয়া একটি ইসরায়েলি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তেহরান টাইমস জানায়, সংঘাত তীব্রতর হলে এবং ইরান ইসরায়েলের বহু সামরিক ও সংবেদনশীল স্থানে হামলা চালালে জার্মান সেনাদের মধ্যে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অনিচ্ছা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
তাদের এই দ্রুত প্রস্থান ইসরায়েলি প্রশাসনের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করে তবে, ফ্রান্সের অংশগ্রহণে ইসরায়েলিরা সন্তুষ্ট ছিল।

তেহরান টাইমস বলছে, ইরানের বিরুদ্ধে জার্মান সেনাদের এই ধরনের সামরিক সহায়তা এটি দ্বিতীয়বার। এর আগে, ১৯৮০-এর দশকে ইরানের ওপর হামলার সময় জার্মানি ইরাকি একনায়ক সাদ্দাম হোসেনকে রাসায়নিক অস্ত্র সরবরাহ করেছিল।

উল্লেখ্য, জার্মান সংবিধান অনুযায়ী, সরকার নিজ উদ্যোগে বিদেশি যুদ্ধে সৈন্য পাঠাতে পারে না; এর জন্য সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুমোদন প্রয়োজন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল যাতে সরকার একতরফাভাবে যুদ্ধ শুরু করতে না পারে। তবে এই সেনা মোতায়েনের জন্য জার্মান সংসদ (Bundestag)-এর অনুমোদন ছিল কি না, তা প্রতিবেদনে স্পষ্ট নয়।

তবে তেহরান টাইমস নিশ্চিত করেছে যে, ইরানের হাতে এখন জার্মান সেনাদের নাম, তাদের সহযোগিতার প্রকৃতি এবং সংশ্লিষ্ট নথিপত্রের বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ