ওজন কমানো ও ডায়াবেটিস রোধের গোপন কৌশল ফ্রিজের ভাতই কি নতুন সমাধান!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
বাংলাদেশে ভাত মানেই প্রতিদিনের প্রধান খাবার। তবে অনেক সময় রান্না করা ভাত বেঁচে গেলে আমরা তা ফ্রিজে রেখে পরে গরম করে খাই। কেউ কেউ মনে করেন এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, আবার কেউ বলেন এতে কোনো সমস্যা নেই। গবেষকরা বলছেন—সত্যিটা মাঝামাঝি: নিয়ম মেনে সংরক্ষণ করলে ফ্রিজের ভাত শুধু নিরাপদই নয়, বরং শরীরের জন্য উপকারীও হতে পারে।
ফ্রিজে রাখলে কী বদলায় ভাতের গুণ?
রান্নার পর ভাত ঠান্ডা করে ফ্রিজে রাখলে এর কার্বোহাইড্রেট কাঠামোতে পরিবর্তন আসে। এতে তৈরি হয় রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ, যা সাধারণ স্টার্চের তুলনায় শরীরে ধীরে হজম হয়। এই প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজ দ্রুত রক্তে মিশতে পারে না ফলে ওজন বৃদ্ধি ও রক্তে শর্করার হঠাৎ ওঠানামা দুটোই কমে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা!
সদ্য রান্না করা ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) প্রায় ৭৮, কিন্তু ফ্রিজে রেখে পরে গরম করলে তা নেমে আসে ৫৪-এ। অর্থাৎ এই ভাত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে বাড়ে। ফলে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তুলনামূলকভাবে স্বাস্থ্যসম্মত বিকল্প হতে পারে।
ওজন কমাতেও কার্যকর:
রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ শরীরে হজম হতে বেশি সময় নেয়, ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা অনুভূতি দেয় এবং অপ্রয়োজনীয় ক্যালোরি গ্রহণ কমায়। পাশাপাশি এটি অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে, যা মেটাবলিজম উন্নত করে এবং চর্বি জমা কমায়।
তবে সতর্ক না থাকলে উপকারের ভাতই ক্ষতির কারণ হতে পারে। ভাত রান্নার পর দীর্ঘ সময় ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দিলে এতে Bacillus cereus ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। পরে গরম করলেও এটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয় না, বরং ফুড পয়জনিং, বমি ও ডায়রিয়া ঘটাতে পারে। তাই রান্নার এক ঘণ্টার মধ্যে ভাত ঠান্ডা করে ফ্রিজে রাখা এবং এক দিনের বেশি না রাখা উচিত। গরম করার সময় পুরোটা ভালোভাবে গরম হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে।
গবেষণার ফল বলছে সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও গরম করা ফ্রিজের ভাত ডায়াবেটিস ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। তবে নিরাপত্তা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সচেতনভাবে সংরক্ষণ করলে "বেঁচে যাওয়া ভাত"ও হয়ে উঠতে পারে সুস্থ জীবনের সহায়ক এক সহজ উপায়।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।