প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল ত্বকের জন্য প্রতিদিনের সহজ অভ্যাসগুলো শিখে নিন!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
ত্বকের উজ্জ্বলতা কারও জন্মগত নয় এটি শরীর, খাদ্যাভ্যাস ও দৈনন্দিন যত্নের সমন্বয়ে তৈরি হয়। বিজ্ঞানের ভাষায়, ত্বকের স্বাভাবিক জেল্লা মূলত নির্ভর করে রক্তসঞ্চালন, কোষপুনর্গঠন ও জলীয় ভারসাম্য–এর ওপর। কিন্তু দূষণ, মানসিক চাপ ও অনিয়মিত জীবনযাপনে এই প্রক্রিয়াগুলো ব্যাহত হয়। তাই ত্বক ম্লান, ক্লান্ত আর নিস্তেজ দেখায়। নিয়মিত কিছু প্রাকৃতিক অভ্যাস মেনে চললে, কোনো প্রসাধনীর ওপর নির্ভর না করেও ত্বক ফিরে পেতে পারে তার স্বাভাবিক দীপ্তি।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর অভ্যন্তরীণ পরিচ্ছন্নতা দিয়ে দিন শুরু! এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস বা এক চামচ মধু মিশিয়ে পান করলে শরীর থেকে টক্সিন বের হয়। এই অভ্যাস লিভারের কার্যকারিতা বাড়িয়ে রক্তকে বিশুদ্ধ করে, ফলে ত্বকে ভেতর থেকে জেল্লা আসে। গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরের ভেতরের বর্জ্য সঠিকভাবে নিঃসৃত না হলে ত্বকে dullness ও ব্রণ দেখা দেয়।
পুষ্টিকর প্রাতঃরাশ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টই আসল চাবিকাঠি! ত্বকের কোষ ক্ষয় রোধে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
প্রতিদিনের খাবারে যদি থাকে রঙিন ফল, যেমন ডালিম, পেয়ারা, পেঁপে, কমলা বা ব্লুবেরি। তাহলে ত্বকের কোষগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা পায়। একই সঙ্গে ওটস, ডিম, বাদাম, দই ও বীজজাতীয় খাবার ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও ভিটামিন ই সরবরাহ করে।
জলীয় ভারসাম্য, ভেতর থেকে আর্দ্রতা বজায় রাখা! ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা ও উজ্জ্বলতা নির্ভর করে শরীরে পানির পরিমাণের ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি ত্বক কোষের পুনর্গঠন ও রক্তসঞ্চালন সচল রাখে। শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে নারকেল পানি বা শসার রসও চমৎকার প্রাকৃতিক হাইড্রেটর।
সূর্য ও ঘাম প্রাকৃতিক ক্লিনজিং! অনেকে ঘামকে বিরক্তিকর ভাবেন, কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে ঘাম শরীরের বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয়। নিয়মিত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম রক্তসঞ্চালন বাড়ায়, যা ত্বকের কোষে অক্সিজেন সরবরাহ উন্নত করে।
আর সকালে সূর্যের প্রথম রশ্মি থেকে পাওয়া ভিটামিন ডি ত্বকের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও কোষ গঠন বজায় রাখতে সহায়তা করে।
মানসিক প্রশান্তি, স্ট্রেসমুক্ত মনই উজ্জ্বল ত্বকের গোপন রহস্য! চাপ বা উদ্বেগ শরীরে কর্টিসল হরমোন বাড়ায়, যা ত্বকের প্রদাহ ও নিস্তেজ ভাবের কারণ। প্রতিদিন কয়েক মিনিট গভীর শ্বাস, ধ্যান বা সঙ্গীত শোনা মনকে শান্ত রাখে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে।
পর্যাপ্ত ঘুম, রাত্রিই ত্বকের পুনর্জন্মের সময়!
ঘুমের সময় শরীর কলাজেন ও গ্রোথ হরমোন নিঃসরণ করে, যা ত্বকের কোষ পুনর্গঠনে সহায়তা করে। প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম ত্বকের ফোলা ভাব, ডার্ক সার্কেল ও ক্লান্তি দূর করে।
প্রাকৃতিক ত্বকচর্চা, রাসায়নিক নয়, প্রকৃতির উপহার-
⇨ সপ্তাহে ২ দিন বেসন, কাঁচা দুধ ও মধু মিশিয়ে প্যাক ব্যবহার করলে ত্বক কোমল ও মসৃণ হয়।
⇨ অ্যালোভেরা জেল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং সানবার্ন বা ব্রণর দাগ কমাতে সহায়তা করে।
⇨ গোলাপজল প্রাকৃতিক টোনার হিসেবে কাজ করে, রোমছিদ্র পরিষ্কার রাখে ও ত্বককে সতেজ করে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা কোনো বাহ্যিক প্রসাধনী নয় এটি শরীর, মন ও অভ্যাসের সমন্বিত প্রতিফলন। প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিয়মিত জীবনযাপন, পুষ্টিকর খাবার ও মানসিক প্রশান্তিই হতে পারে "স্কিন গ্লো"-এর সবচেয়ে কার্যকর রহস্য।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।