জুলাই অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব নিয়ে বিভেদে শিবির ও বৈষম্যবিরোধীরা

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে রাজনীতির মাঠ সড় গরম বেশ কিছুদিন থেকে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগ মুহূর্তে দলের নেতৃত্বে নিয়ে সামনে আসছে বিভিন্ন পক্ষের মতামত দাবি-তদবির। এমন বাস্তবতায় স্পষ্ট হয়ে উঠছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটি ও ছাত্রশিবিরের মতভেদ।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে কথার বাহাস। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভুঁইয়া তার ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে হুঁশিয়ার করেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস বিকৃত করা যাবে না। আন্দোলনে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে একই সুরে কথা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক হান্নান মাসউদ। অন্যদিকে, ছাত্র শিবির বলছে, কেবল ক্যামেরার সামনে থাকলেই আন্দোলন হয় না। পাশাপাশি ইতিহাস বিকৃত না হওয়ার বিষয়টিও খেয়াল রাখার কথা বলছে সংগঠনটি।
তবে ২৪ এর আন্দোলন ও ইতিহাস বুকে ধারণ করার কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্থা শারমিন তিনি বলেন, যদি কোনো দল বা আদর্শ দ্বারা এই অভ্যুত্থান হতো তাহলে তারা সেই পার্টিতেই থেকে যেতেন। ছেড়ে আসার কোনো প্রয়োজন বোধ করতেন না। যেহেতু ছেড়ে আসার প্রসঙ্গ রয়েছে, তাই আমরা যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলছি- সেটি সামগ্রিকভাবে তাদের সাথে আর করা সম্ভব হবে না।
শিক্ষার্থীদের নতুন দল গঠনের আগেই কেন এত বিরোধ, এত বিতর্ক— এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলামের কাছে। তিনি বলেন, অভ্যুত্থানে কোনো ব্যক্তি একক মাস্টারমাইন্ড ছিলেন না। কোনো দলের একক কৃতিত্ব ছিল সেটিও বলবো না। সবার অংশগ্রহণে হয়েছে এবং সবাইকে এর কৃতিত্ব দিতে হবে না। ইতিহাস বিকৃত হোক এটা কারও কাম্য না। কিন্তু দুর্ভাগ্য এই জনগণে অতীতেও ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে, এখনও সেটির চেষ্টা চলছে। আমরা চাই, সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হোক।
ছাত্রশিবিরে সভাপতি বলেন, এই অভ্যুত্থান নিয়ে ক্রেডিটের রাজনীতি শুরু হয়েছে। এটি যেন না হয়। আমরা এটির পক্ষে না।
শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দলকে কীভাবে দেখছেন বিশ্লেষকরা? জানতে চাওয়া হয় আন্দোলনে মাঠের অংশীজনের মধ্যে যে মনোমালিন্য তা কি নিতান্তই রাজনৈতিক কৌশল নাকি দুই সংগঠনের মাঝে ফাটলের ইঙ্গিত?
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ রুশাদ ফরিদী গণমাধ্যমকে বলেন, জুলাই আন্দোলনের কৃতিত্ব নেয়ার জন্য তাদের মধ্যে এক ধরনের দ্বন্দ্ব দেখা গেছে। যেমন, ছাত্রশিবির তাদের বেশ কয়েকজন নেতার নাম বলছে। তাদের কিন্তু আমরা শিবিরের নেতা হিসেবে গণআন্দোলনে সামনে দেখিনি। সুবিধা নেয়ার জন্য নিজের পরিচয় গোপন রেখে এখন সেই পরিচয় দিয়ে যদি বলে, আমি তোমাদের পেছনে ছিলাম, আমার মনে হয় না এটা তাদের জন্য ভালো কিছু হবে।
তবে একটি জায়গায় এই দুই সংগঠনের নেতাদের চাওয়ায় কোন মতভেদ নেই, আর তা হলো ২৪ এর ইতিহাস যেন বিকৃত না হয়।