পিআর ইস্যুতে জামায়াতের আন্দোলন পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রতারণাঃ নাহিদ ইসলাম

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর সাম্প্রতিক আন্দোলনকে ‘সুচিন্তিত রাজনৈতিক প্রতারণা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। রবিবার বিকেলে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন।
পোস্টে নাহিদ ইসলাম বলেন, “জামায়াতে ইসলামী পিআর পদ্ধতি নিয়ে যে তথাকথিত আন্দোলন শুরু করেছিল, আসলে সেটি ছিল এক সুচিন্তিত রাজনৈতিক প্রতারণা।” তার মতে, এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল গণঅভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্র ও সংবিধান পুনর্গঠনের মূল আলোচনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা। তিনি অভিযোগ করেন, জামায়াত পরিকল্পিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রক্রিয়া ও জাতীয় আলোচনাকে বিভ্রান্ত করার কৌশল নিয়েছিল।
এনসিপি প্রধান আরও বলেন, সংবিধানের একটি সুরক্ষা হিসেবে উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি ছিল মৌলিক সংস্কারের অন্যতম দাবি। “আমরা চেয়েছিলাম এই পদ্ধতিকে একটি বিস্তৃত জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠা করতে এবং জুলাই সনদের আইনি কাঠামোর মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করতে,” মন্তব্য করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম দাবি করেন, জামায়াত ও তাদের মিত্ররা এই কর্মসূচিকে ছিনতাই করে শুধুমাত্র পিআর দাবির আন্দোলনে পরিণত করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সংস্কার নয়, বরং নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করা। তিনি বলেন, “তারা পিআর আন্দোলনকে দরকষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। তাদের লক্ষ্য ছিল কৌশলগত প্রভাব বিস্তার, সংস্কার নয়।”
জামায়াতের ভূমিকা প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “জামায়াতে ইসলামী কখনও সংস্কার আলোচনায় অংশ নেয়নি, না জুলাই অভ্যুত্থানের আগে, না পরে। তারা কোনও কার্যকর প্রস্তাব দেয়নি, কোনও সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গিও উপস্থাপন করেনি, কিংবা গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের প্রতি কোনও অঙ্গীকারও দেখায়নি।” তার দাবি, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় জামায়াতের উপস্থিতি ছিল “সংস্কারের মুখোশে রাজনৈতিক নাশকতা।”
পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, জনগণ এখন এই প্রতারণা বুঝে ফেলেছে এবং আর কখনও “ভুয়া সংস্কারবাদীদের দ্বারা প্রতারিত হবে না।” তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ আজ সত্যিই জেগে উঠেছে। জনগণ আর কোনও অসৎ ও নৈতিকভাবে দেউলিয়া শক্তিকে তাদের শাসনের সুযোগ দেবে না।”
নাহিদ ইসলামের এই মন্তব্যকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান হিসেবে দেখছেন। কারণ, ঐকমত্য কমিশনের অধীনে চলমান সাংবিধানিক সংস্কার আলোচনা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর মধ্যে মতভেদ বিদ্যমান। নাহিদের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়, এনসিপি জামায়াতের কর্মকৌশলকে সংস্কার প্রক্রিয়ার অন্তরায় হিসেবে বিবেচনা করছে।
এদিকে, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক মহলে নাহিদ ইসলামের এই বক্তব্য নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে বলে মন্তব্য করছেন পর্যবেক্ষকরা।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।