হাইওয়ের পাশে গাছ না থাকলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায় ৩০%,বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি!
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
সড়ক দুর্ঘটনা আজকের বিশ্বের এক নীরব মহামারি। প্রযুক্তি, সাইনবোর্ড, ট্রাফিক নিয়ম- সব কিছু উন্নত হলেও দুর্ঘটনার হার কমছে না তেমনভাবে। সম্প্রতি পরিবেশবিজ্ঞান ও ট্রাফিক সেফটি বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় উঠে এসেছে এক অবাক করা তথ্য হাইওয়ের দু'পাশে গাছ না থাকলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি ২৫–৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। অর্থাৎ, সবুজের উপস্থিতি শুধু সৌন্দর্য নয়, এটি ড্রাইভারের মনোযোগ, মানসিক স্থিতি এবং সড়ক নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত এক বাস্তব উপাদান।
মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে, প্রকৃতির দৃশ্যমানতা মস্তিষ্কে প্রশান্তি ও সতর্কতা, দুইই সৃষ্টি করে। দীর্ঘ হাইওয়ে পথে যখন চারপাশে শুধুই ধূসর রঙ, মাটির ধুলো ও কংক্রিটের দেয়াল, তখন চালকের মস্তিষ্কে সৃষ্টি হয় 'মনোটনি ফ্যাটিগ' (Monotony Fatigue)। এ অবস্থায় দৃষ্টি ও প্রতিক্রিয়ার সময় ধীর হয়ে যায়, মনোযোগ বিচ্যুত হয়, আর ঠিক সেই মুহূর্তেই ঘটে দুর্ঘটনা। প্রকৃতির দৃশ্য, বিশেষ করে গাছপালা ও সবুজ ছায়া চোখে পড়লে মস্তিষ্কে ডোপামিন ও সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ে, যা মনোযোগ পুনর্গঠনে সহায়তা করে। এ প্রক্রিয়াকেই বলা হয় 'রেস্টোরেটিভ ইফেক্ট', যা আধুনিক নিউরোসাইকোলজিতেও স্বীকৃত।
গাছের অনুপস্থিতি শুধু মানসিক নয়, শারীরিকভাবেও চালককে বিপদে ফেলে।
খোলা হাইওয়েতে সূর্যের তীব্র আলো ও প্রতিফলন (গ্লেয়ার) ড্রাইভারের দৃষ্টি বিভ্রান্ত করে। গ্রীষ্মকালে পিচের ওপর তাপমাত্রা অনেক সময় ৫০°C পর্যন্ত পৌঁছে যায়, যা গাড়ির কেবিনে তাপ জমিয়ে দেয় এবং চালকের ক্লান্তি দ্রুত বাড়ায়। গাছ থাকলে তার ছায়া এ গ্লেয়ার কমায়, রাস্তার তাপমাত্রা গড়ে ৫–১০°C পর্যন্ত হ্রাস করে। এতে গাড়ির কেবিন ঠান্ডা থাকে, চালক আরাম বোধ করে এবং মানসিকভাবে স্থির থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ছায়াহীন হাইওয়েতে চালকদের গড় প্রতিক্রিয়া সময় বেড়ে যায় প্রায় ০.৫ সেকেন্ড। যদি গাড়ির গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার হয়, তবে মাত্র ০.৫ সেকেন্ড মানে প্রায় ১১ মিটার বাড়তি ব্রেকিং দূরত্ব, যা অনেক সময় মৃত্যুবাণ হয়ে আসে।
হাইওয়ের ধুলো, ধোঁয়া ও ক্রমাগত হর্নের শব্দ চালকের স্নায়ুতন্ত্রে চাপ সৃষ্টি করে। বিজ্ঞানীরা বলেন, একটানা উচ্চ শব্দে (৭৫ ডেসিবেল বা তার বেশি) মস্তিষ্কে কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মনোযোগ নষ্ট করে।
গাছপালা শব্দ শোষণ করে এবং বায়ুতে ভাসমান ধূলিকণা ও বিষাক্ত নাইট্রোজেন অক্সাইড কমায়। সবুজ বেষ্টনীকে তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন "নেচারাল সাইলেন্স ব্যারিয়ার", যা চালকের স্নায়ু শান্ত রাখে ও সতর্কতার ক্ষমতা বজায় রাখে।
মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে, প্রকৃতির দৃশ্যমানতা মস্তিষ্কে প্রশান্তি ও সতর্কতা, দুইই সৃষ্টি করে। দীর্ঘ হাইওয়ে পথে যখন চারপাশে শুধুই ধূসর রঙ, মাটির ধুলো ও কংক্রিটের দেয়াল, তখন চালকের মস্তিষ্কে সৃষ্টি হয় 'মনোটনি ফ্যাটিগ' (Monotony Fatigue)। এ অবস্থায় দৃষ্টি ও প্রতিক্রিয়ার সময় ধীর হয়ে যায়, মনোযোগ বিচ্যুত হয়, আর ঠিক সেই মুহূর্তেই ঘটে দুর্ঘটনা। প্রকৃতির দৃশ্য, বিশেষ করে গাছপালা ও সবুজ ছায়া চোখে পড়লে মস্তিষ্কে ডোপামিন ও সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ে, যা মনোযোগ পুনর্গঠনে সহায়তা করে। এ প্রক্রিয়াকেই বলা হয় 'রেস্টোরেটিভ ইফেক্ট', যা আধুনিক নিউরোসাইকোলজিতেও স্বীকৃত।
গাছের অনুপস্থিতি শুধু মানসিক নয়, শারীরিকভাবেও চালককে বিপদে ফেলে।
খোলা হাইওয়েতে সূর্যের তীব্র আলো ও প্রতিফলন (গ্লেয়ার) ড্রাইভারের দৃষ্টি বিভ্রান্ত করে। গ্রীষ্মকালে পিচের ওপর তাপমাত্রা অনেক সময় ৫০°C পর্যন্ত পৌঁছে যায়, যা গাড়ির কেবিনে তাপ জমিয়ে দেয় এবং চালকের ক্লান্তি দ্রুত বাড়ায়। গাছ থাকলে তার ছায়া এ গ্লেয়ার কমায়, রাস্তার তাপমাত্রা গড়ে ৫–১০°C পর্যন্ত হ্রাস করে। এতে গাড়ির কেবিন ঠান্ডা থাকে, চালক আরাম বোধ করে এবং মানসিকভাবে স্থির থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ছায়াহীন হাইওয়েতে চালকদের গড় প্রতিক্রিয়া সময় বেড়ে যায় প্রায় ০.৫ সেকেন্ড। যদি গাড়ির গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার হয়, তবে মাত্র ০.৫ সেকেন্ড মানে প্রায় ১১ মিটার বাড়তি ব্রেকিং দূরত্ব, যা অনেক সময় মৃত্যুবাণ হয়ে আসে।
হাইওয়ের ধুলো, ধোঁয়া ও ক্রমাগত হর্নের শব্দ চালকের স্নায়ুতন্ত্রে চাপ সৃষ্টি করে। বিজ্ঞানীরা বলেন, একটানা উচ্চ শব্দে (৭৫ ডেসিবেল বা তার বেশি) মস্তিষ্কে কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মনোযোগ নষ্ট করে।
গাছপালা শব্দ শোষণ করে এবং বায়ুতে ভাসমান ধূলিকণা ও বিষাক্ত নাইট্রোজেন অক্সাইড কমায়। সবুজ বেষ্টনীকে তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন "নেচারাল সাইলেন্স ব্যারিয়ার", যা চালকের স্নায়ু শান্ত রাখে ও সতর্কতার ক্ষমতা বজায় রাখে।
গবেষণা ও পরিসংখ্যান:
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষণা প্রতিবেদনে এ সত্য ইতিমধ্যেই উঠে এসেছে
◑ যুক্তরাষ্ট্রের Federal Highway Safety Institute-এর তথ্য অনুযায়ী, গাছবিহীন হাইওয়েতে দুর্ঘটনার হার ২৮–৩২% বেশি।
◑ ইউরোপের পরিবেশ ও ট্রাফিক ইনস্টিটিউটের রিপোর্টে বলা হয়, গাছের সারিবদ্ধ উপস্থিতি ড্রাইভারের ভিজ্যুয়াল গাইড হিসেবে কাজ করে, ফলে গতি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ওভারটেকিং কমায়।
◑ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে হাইওয়ের পাশে Eucalyptus belt plantation করার পর দুর্ঘটনা গড়ে ২৫% কমেছে।
বাংলাদেশের বাস্তব চিত্র: বৃক্ষনিধনে বাড়ছে ঝুঁকি!
বাংলাদেশে গত এক দশকে হাইওয়ে প্রশস্তকরণের নামে প্রচুর রাস্তার পাশের পুরনো গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ঢাকা–চট্টগ্রাম, ঢাকা–ময়মনসিংহ ও ঢাকা–সিলেট মহাসড়কে বহু জায়গায় আজও সবুজের শূন্যতা চোখে পড়ে।
পরিবেশবিদদের মতে, এটি শুধু প্রাকৃতিক ভারসাম্য নয়, বরং সড়ক নিরাপত্তাকেও সরাসরি হুমকির মুখে ফেলছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাফিক বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গাছবিহীন সোজা রাস্তার অংশে ওভারস্পিডিংয়ের প্রবণতা প্রায় দ্বিগুণ, যা দুর্ঘটনার মূল কারণগুলোর একটি।
সমাধান:
⇨ হাইওয়ের দুই পাশে নির্দিষ্ট দূরত্বে (কমপক্ষে ৩–৫ মিটার রাস্তা থেকে দূরে) স্থানীয় প্রজাতির গাছ লাগানো উচিত।
⇨ গাছের গোড়ায় কংক্রিট না ঢেলে বায়ু চলাচলের সুযোগ রাখতে হবে, যাতে শিকড় রাস্তার নিচে বিস্তৃত না হয়।
⇨ ট্রাফিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে গাছ ও রাস্তার মাঝে ব্যারিয়ার স্থাপন করা উচিত, যাতে সংঘর্ষের সময় প্রাণঘাতী প্রভাব কম হয়।
⇨ ভবিষ্যৎ হাইওয়ে পরিকল্পনায় "গ্রীন করিডর" ধারণা যুক্ত করতে হবে, যেমন ইউরোপের Green Belt Highway মডেল।
একটি হাইওয়ে কেবল দ্রুতগতির পথ নয়, এটি এক জীবন্ত পরিবেশ। তার পাশে থাকা গাছ শুধু অক্সিজেন দেয় না, এটি ড্রাইভারের দৃষ্টি, মন, ও জীবন সব কিছু রক্ষা করে। তাই উন্নয়নের নাম করে গাছ কেটে ফেলা আসলে নিরাপত্তাকে কেটে ফেলারই নামান্তর। হাইওয়ের পাশে গাছ থাকা মানে একটি জীবনের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ৩০% বাড়ানো। সবুজকে তাই এখন শুধু পরিবেশ নয়, মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য নিরাপত্তা অবকাঠামো হিসেবে দেখার সময় এসেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষণা প্রতিবেদনে এ সত্য ইতিমধ্যেই উঠে এসেছে
◑ যুক্তরাষ্ট্রের Federal Highway Safety Institute-এর তথ্য অনুযায়ী, গাছবিহীন হাইওয়েতে দুর্ঘটনার হার ২৮–৩২% বেশি।
◑ ইউরোপের পরিবেশ ও ট্রাফিক ইনস্টিটিউটের রিপোর্টে বলা হয়, গাছের সারিবদ্ধ উপস্থিতি ড্রাইভারের ভিজ্যুয়াল গাইড হিসেবে কাজ করে, ফলে গতি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ওভারটেকিং কমায়।
◑ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে হাইওয়ের পাশে Eucalyptus belt plantation করার পর দুর্ঘটনা গড়ে ২৫% কমেছে।
বাংলাদেশের বাস্তব চিত্র: বৃক্ষনিধনে বাড়ছে ঝুঁকি!
বাংলাদেশে গত এক দশকে হাইওয়ে প্রশস্তকরণের নামে প্রচুর রাস্তার পাশের পুরনো গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ঢাকা–চট্টগ্রাম, ঢাকা–ময়মনসিংহ ও ঢাকা–সিলেট মহাসড়কে বহু জায়গায় আজও সবুজের শূন্যতা চোখে পড়ে।
পরিবেশবিদদের মতে, এটি শুধু প্রাকৃতিক ভারসাম্য নয়, বরং সড়ক নিরাপত্তাকেও সরাসরি হুমকির মুখে ফেলছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাফিক বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গাছবিহীন সোজা রাস্তার অংশে ওভারস্পিডিংয়ের প্রবণতা প্রায় দ্বিগুণ, যা দুর্ঘটনার মূল কারণগুলোর একটি।
সমাধান:
⇨ হাইওয়ের দুই পাশে নির্দিষ্ট দূরত্বে (কমপক্ষে ৩–৫ মিটার রাস্তা থেকে দূরে) স্থানীয় প্রজাতির গাছ লাগানো উচিত।
⇨ গাছের গোড়ায় কংক্রিট না ঢেলে বায়ু চলাচলের সুযোগ রাখতে হবে, যাতে শিকড় রাস্তার নিচে বিস্তৃত না হয়।
⇨ ট্রাফিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে গাছ ও রাস্তার মাঝে ব্যারিয়ার স্থাপন করা উচিত, যাতে সংঘর্ষের সময় প্রাণঘাতী প্রভাব কম হয়।
⇨ ভবিষ্যৎ হাইওয়ে পরিকল্পনায় "গ্রীন করিডর" ধারণা যুক্ত করতে হবে, যেমন ইউরোপের Green Belt Highway মডেল।
একটি হাইওয়ে কেবল দ্রুতগতির পথ নয়, এটি এক জীবন্ত পরিবেশ। তার পাশে থাকা গাছ শুধু অক্সিজেন দেয় না, এটি ড্রাইভারের দৃষ্টি, মন, ও জীবন—সব কিছু রক্ষা করে। তাই উন্নয়নের নাম করে গাছ কেটে ফেলা আসলে নিরাপত্তাকে কেটে ফেলারই নামান্তর। হাইওয়ের পাশে গাছ থাকা মানে—একটি জীবনের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ৩০% বাড়ানো। সবুজকে তাই এখন শুধু পরিবেশ নয়, মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য নিরাপত্তা অবকাঠামো হিসেবে দেখার সময় এসেছে।আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।