এক কাগজেই মিলবে ছয়টি জমি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
সারাদেশে ভূমি মালিকদের জন্য নতুন এক যুগান্তকারী ব্যবস্থা চালু হয়েছে, যা মাত্র একটি কাগজ বা দলিল ব্যবহার করেই ছয় ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিসেবা পাওয়ার সুযোগ করে দেবে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে জমির অবৈধ দখল, অবিভক্ত সম্পত্তি বণ্টন সংক্রান্ত বিরোধ, খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত জমি উদ্ধারসহ অন্যান্য ভূমি সংক্রান্ত সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব হবে।
ভূমি মালিকদের সুবিধার্থে এই ব্যবস্থা ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন’-এর বিধিমালার আওতায় কার্যকর করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তার জমি বা অধিকার পুনরায় ফিরে পেতে পারবেন। কর্মকর্তাদের মতে, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে ঘুষ, দুর্নীতি বা দীর্ঘ মামলা প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হবে না।
নতুন ব্যবস্থার আওতায় প্রথম সারির সেবা হলো অবিভক্ত বা উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টন সংক্রান্ত বিরোধ সমাধান। কোনো অবিভক্ত সম্পত্তিতে মালিকের ন্যায্য অংশ না দেওয়া হলে, জেলা প্রশাসকের কাছে প্রমাণপত্রসহ আবেদন করলেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ সমাধান প্রদান করা হবে।
দ্বিতীয়ত, জবরদখলকৃত জমি পুনরুদ্ধার করা যাবে। কেউ রাজনৈতিক প্রভাব বা অন্য কোনো কারণে জমি দখল করলে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের ধারা ৭ অনুযায়ী অভিযোগ করলে ডিসি তদন্ত করে জমি ফেরত দেবেন। এ ছাড়া অবৈধ দখলকারীর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ড ও ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্য করা হবে।
তৃতীয় সেবা হলো খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত জমি পুনরুদ্ধার। অনেক সময় রেকর্ড সংশোধনের সময় ব্যক্তিগত জমি সরকারি খাস খতিয়ানে চলে যায়। জেলা প্রশাসক বা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করলে যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত মালিকের নামে জমি ফেরত দেওয়া হবে।
চতুর্থ সেবা হলো চলাচলের রাস্তা অবরোধমুক্ত করা। ব্যক্তিগত বা শেয়ারকৃত রাস্তা কেউ অবৈধভাবে বন্ধ করলে ডিসি বরাবর আবেদন করলেই চলাচলের পথ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে।
পঞ্চম, জমির শ্রেণি পরিবর্তনজনিত ক্ষতি প্রতিকার। প্রতিবেশী যদি মাটি বা বালু উত্তোলন করে জমির ক্ষতি করে বা জমির শ্রেণি পরিবর্তন ঘটায়, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করা যাবে।
ষষ্ঠ সেবা হলো অবৈধভাবে মাটি-বালু উত্তোলন ও ভূমিধস প্রতিরোধ। সরকারি বা বেসরকারি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি বা বালু কাটলে, যা পার্শ্ববর্তী কৃষিজমি বা বসতকে ঝুঁকির মুখে ফেলে, সেক্ষেত্রেও অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইভাবে সরকারি রাস্তা ও হালুট জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
কর্মকর্তাদের মতে, নতুন এই ব্যবস্থা তিন মাসের মধ্যে সমাধান নিশ্চিত করবে। যদিও এটি এখনো সারাদেশে সব জেলায় চালু হয়নি, ধাপে ধাপে সম্প্রসারণের কাজ চলমান। ভূমি মালিকরা আশা করছেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে তাদের জমি সংক্রান্ত সমস্যার দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য সমাধান সম্ভব হবে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।