জার্মানিতে রোববার নির্বাচন, জোট ছাড়া সরকার গঠনের বিকল্প নেই

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
জার্মানিতে রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশটির পার্লামেন্টের ২১তম নির্বাচন। ফেডারেল পরিসংখ্যান কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে আট কোটি মানুষের এই দেশে এবার মোট ভোটারের সংখ্যা ৫ কোটি ৯২ লাখ। এর মধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ৬ লাখ এবং পুরুষ ভোটার ২ কোটি ৮৬ লাখ।
এবারের নির্বাচনে জার্মান পার্লামেন্টের ৬৩০টি আসনের জন্য ২৯টি দল মোট ৪ হাজার ৫০৬ জন প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন। ভোটকেন্দ্রগুলো স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
জার্মানিতে ১৯৪৯ সাল থেকে গণতান্ত্রিক প্রথায় নির্বাচন হয়ে আসছে। দেশটির রাজনীতিতে সরকার গঠনের ঐতিহ্য হলো জোট বেঁধে সরকার গঠন। কারণ, কোনো দলই এককভাবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে না। এবারও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। তাই সরকার গঠনে জোট বাঁধা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করা হচ্ছে।
নির্বাচনের আগের জরিপগুলোতে ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) দলটি শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। এরপরই রয়েছে কট্টর রক্ষণশীল ও অভিবাসীবিরোধী দল অল্টারনেটিভ ফর ডয়েচল্যান্ড (এএফডি)। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বর্তমান ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান দল সামাজিক গণতান্ত্রিক দল (এসপিডি) এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছে পরিবেশবাদী সবুজ দল।
জরিপ অনুযায়ী, সিডিইউ নেতা ফ্রিডরিখ মের্ৎসকে সম্ভাব্য চ্যান্সেলর হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে বড় চমক হিসেবে উঠে এসেছে এএফডি দলটি, যা অভিবাসীবিরোধী বক্তব্য এবং কট্টর রক্ষণশীল অবস্থানের জন্য পরিচিত। নির্বাচনের আগে থেকেই এএফডির বিরুদ্ধে জার্মানির বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা এই দলটিকে "নব্য নাৎসি" হিসেবে আখ্যায়িত করে গণতান্ত্রিক দলগুলোকে এএফডির সঙ্গে জোট গঠন না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক সংকট, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, মুদ্রাস্ফীতি, অভিবাসন বিতর্ক এবং জলবায়ু নীতির মতো ইস্যুতে জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। এ ছাড়া জোট সরকারের মধ্যে বিরোধ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে দৃঢ়তার অভাবও ক্ষমতাসীনদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
সিডিইউ নেতা ফ্রিডরিখ মের্ৎস নির্বাচনী প্রচারে জার্মান অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে তিনটি মূল ইস্যুতে পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন: নাগরিক ভাতা ব্যবস্থা সংস্কার, কর্মরত পেনশনভোগীদের জন্য করমুক্ত অতিরিক্ত আয় এবং কর সংস্কার।
যদিও জরিপে সিডিইউ শীর্ষে রয়েছে, তবে সরকার গঠনের জন্য তাদেরকে এসপিডি বা সবুজ দলের সঙ্গে জোট বাঁধতে হতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। জার্মানির রাজনৈতিক ইতিহাসে জোট সরকারের প্রাধান্য থাকায় এবারও একই চিত্র দেখা যেতে পারে।
রোববারের নির্বাচনের ফলাফল জার্মানির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিকনির্দেশনা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।