স্কুল ফাঁকি দিয়ে মাদকের আড্ডায় বসছে শিশু কিশোররা!
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
দেশের বিভিন্ন এলাকায় উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাচ্ছে শিশু-কিশোরদের অনলাইন গেমস, জুয়া ও মাদকাসক্তি। স্কুল-কলেজ ফাঁকি দিয়ে তারা সময় কাটাচ্ছে পার্ক, গেমিং জোন ও বিভিন্ন আড্ডাস্থলে। এতে একদিকে নষ্ট হচ্ছে তাদের মূল্যবান শিক্ষাজীবন, অন্যদিকে গড়ে উঠছে অপরাধপ্রবণ প্রজন্ম। বন্দর উপজেলা ও শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ঘুরে দেখা গেছে, সকাল-বিকেল কিশোরদের দল মোবাইল ফোনে ব্যস্ত অনলাইন গেম ও জুয়ায়। যে সময় তাদের ক্লাসে বা মাঠে থাকার কথা, তারা তখন ঘরের কোণে বা পার্কের বেঞ্চে বসে মোবাইলে গেম খেলছে কিংবা অনলাইন বাজিকরায় যুক্ত হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও অভিভাবকরা জানান, মোবাইল গেম ও অনলাইন জুয়ায় আসক্তি শিশু-কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অনেকেই গেমিং অ্যাপসে আপগ্রেড ও ইনস্টলেশনের জন্য টাকা জোগাড় করতে গিয়ে ছোটখাটো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এভাবে তারা ক্রমে মাদকাসক্তি ও অপরাধ চক্রের হাতছানিতে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ সময় মোবাইল ও অনলাইন জগতে নিমগ্ন থাকা শিশু-কিশোরদের সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধকে ক্ষয় করছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
অন্যদিকে, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়াসহ বিভিন্ন শহরে সম্প্রতি পুলিশ স্কুল ফাঁকি দেওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে। শহরের বিনোদন পার্ক ও ওয়ান্ডারল্যান্ডে অভিযান চালিয়ে একাধিক শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নেওয়ার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। অভিযানে অংশ নেওয়া এক পুলিশ সদস্যের বরাতে জানা গেছে, আটক শিক্ষার্থীদের আচরণে কোনো আপত্তিকর কিছু পাওয়া যায়নি। তবে প্রশাসন জানিয়েছে, অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতেই এসব অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
শিক্ষাবিদ ও সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের আড্ডা দেওয়া বা পার্কে সময় কাটানোকে অপরাধ হিসেবে দেখা ঠিক নয়। বরং পরিবার ও বিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে নৈতিক শিক্ষা ও কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা জোরদার করা উচিত। সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক সামস্-উল আলম বলেন, “শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জায়গা সংকুচিত হয়ে পড়ায় তারা বিকল্প আনন্দের উৎস হিসেবে গেমস, জুয়া ও মাদকের দিকে ঝুঁকছে, এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
অভিভাবক মহলও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল আসক্তি থেকে রক্ষা এবং মাদকবিরোধী সচেতনতা বাড়াতে বিদ্যালয়ভিত্তিক কর্মসূচি চালু করা হোক। অন্যথায় এই প্রবণতা ভবিষ্যৎ সমাজে ভয়াবহ সংকট ডেকে আনতে পারে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।