মেসেঞ্জার গ্রুপে জয়েন করলেই ডিজেবল হচ্ছে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট!
 
                                        
                                    - Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
ফেসবুকে নতুন এক ধরনের সাইবার প্রতারণা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। সম্প্রতি অনেক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেছেন, কোনো মেসেঞ্জার গ্রুপে যুক্ত হওয়ার পরই তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হঠাৎ ডিজেবল হয়ে যাচ্ছে। তদন্তে জানা গেছে, প্রতারক চক্র ফেসবুকের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক ও সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্টকে টার্গেট করছে।
কিভাবে কাজ করছে প্রতারণা চক্র
প্রথমে প্রতারকরা ভুয়া বা মেয়েদের নামে তৈরি করা অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে টার্গেট ব্যক্তির কাছে মেসেজ পাঠায় বা মেসেঞ্জারে একটি গ্রুপে যুক্ত করে। ওই গ্রুপের নাম এমনভাবে দেওয়া হয় যাতে মনে হয় এটি কোনো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন, অস্ত্র ব্যবসা বা নিষিদ্ধ গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্কিত।
এরপর তারা সংগঠিতভাবে সেই গ্রুপ বা টার্গেট ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে রিপোর্ট করে। ফেসবুকের স্বয়ংক্রিয় অ্যালগরিদম যখন দেখে টার্গেট ব্যক্তি এমন একটি গ্রুপে আছেন যার নাম সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত, তখন সেটি সন্দেহজনক ধরে নিয়ে সেই অ্যাকাউন্টকে স্থগিত করে দেয় বা সম্পূর্ণরূপে ডিজেবল করে ফেলে।
অনেক ক্ষেত্রেই এই রিপোর্টগুলো এত বেশি সংখ্যায় করা হয় যে, ফেসবুকের নিরাপত্তা সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে একাউন্ট স্থগিত করে দেয়, কোনো মানব পর্যালোচনা ছাড়াই। ফলে ভুক্তভোগী একাউন্ট মালিকরা হঠাৎ করেই অ্যাকাউন্টে লগইন করতে পারেন না এবং “Your account has been disabled” বার্তা দেখতে পান।
কারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে
এই স্ক্যাম মূলত তাদের টার্গেট করছে যারা রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়, সংবাদমাধ্যমে কাজ করেন, বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত মতামত প্রকাশ করেন। বিশেষ করে যেসব একাউন্টে বড় পরিসরের অনুসারী আছে বা যাদের কার্যক্রম রাজনৈতিকভাবে প্রভাব ফেলতে পারে, তাদেরই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে।
নিরাপদ থাকার উপায়
অপরিচিত মেসেজ রিকোয়েস্ট গ্রহণ করবেন না। সন্দেহজনক নাম বা প্রোফাইল থেকে কোনো ইনভাইট বা মেসেজ এলে উপেক্ষা করুন।
মেসেঞ্জারে প্রাইভেসি সেটিংস পরিবর্তন করুন। এমনভাবে সেট করুন যাতে অচেনা কেউ আপনাকে কোনো গ্রুপে যোগ করতে না পারে।
ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম সংযুক্ত রাখুন। এতে ফেসবুকের নিরাপত্তা যাচাই সহজ হয় এবং ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী হয়।
ভেরিফাইড বা সিকিউরিটি-অথেনটিকেটেড অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করুন।
অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড হলে দ্রুত আপিল করুন। ফেসবুকের অফিসিয়াল হেল্প সেন্টারে গিয়ে “Request Review” অপশন ব্যবহার করুন। যদি অ্যাকাউন্টে দেওয়া তথ্য আপনার সরকারি পরিচয়পত্রের সঙ্গে মেলে, তাহলে পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা বেশি।
সাইবার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই প্রতারণার মূল লক্ষ্য হলো ভয় সৃষ্টি ও রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ব্যবহারকারীদের নীরব করা। তারা মনে করছেন, ফেসবুকের অ্যালগরিদমে এখনও মানবিক যাচাইয়ের ঘাটতি রয়েছে, যা এই স্ক্যামাররা দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন ঘটনার পর ব্যবহারকারীদের উচিত নিয়মিত নিরাপত্তা সেটিংস আপডেট করা, অচেনা প্রোফাইল ব্লক করা এবং সন্দেহজনক গ্রুপ থেকে দ্রুত বের হয়ে আসা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় ব্যক্তিদের জন্য এটি বড় সতর্কবার্তা। এক ক্লিকেই অ্যাকাউন্ট হারানোর ঝুঁকি থেকে বাঁচতে এখন সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো সতর্কতা, যাচাই আর সচেতনতা।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।
 
                                 
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                    