জকসু নির্বাচন

২৭ নভেম্বরে নির্বাচন চায় শিবির ও আপ বাংলাদেশ, আরও সময় চায় ছাত্রদল

২৭ নভেম্বরে নির্বাচন চায় শিবির ও আপ বাংলাদেশ, আরও সময় চায় ছাত্রদল
ছবির ক্যাপশান, ২৭ নভেম্বরে নির্বাচন চায় শিবির ও আপ বাংলাদেশ, আরও সময় চায় ছাত্রদল
  • Author, জবি প্রতিনিধি
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

নির্বাচন কমিশন গঠনের পর জকসুর পালে নতুন করে হাওয়া লেগেছে। এখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে জকসু নির্বাচন। তবে জকসু নির্বাচন কবে হবে তার তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে এরআগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর জকসু নির্বাচনের এক রূপরেখা প্রণয়ন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই রূপরেখাই জকসু নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ধরা হয় ২৭ নভেম্বর। গুঞ্জন উঠেছে এ নির্বাচন পিছিয়ে ১০ডিসেম্বরের পর চলে যেতে পারে। তবে নির্বাচন কমিশন থেকে সুস্পষ্ট কোনো তারিখ বা তথ্য জানা যায়নি। এছাড়া তফসিল ঘোষণা করতে আরেকটু সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান।

এদিকে গত রোববার দুপুরে উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে জকসু নির্বাচন কমিশন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন মতামত তুলে ধরে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলো। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবার আবারও স্মারকলিপি ও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচনের তারিখ ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নানা ধরনের দাবি পাল্টা দাবি জানিয়েছে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলো।

জকসু নির্বাচন ঘিরে আজ সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে শাখা ছাত্রদল। যেখানে তারা ১২ দফা দাবি জানিয়েছে। 

স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, আসন্ন জকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি ও নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দায়বদ্ধ।

ছাত্রদল কর্তৃক উত্থাপিত বারোটি দাবি হলো- ১. ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় ছবিসহ তালিকা দিতে হবে, ২. নির্বাচনে অমোচনীয় কালি বাধ্যতামূলকভাবে ব্যবহার করতে হবে, ৩. স্বচ্ছ গ্লাসের ব্যালট বাক্স রাখতে হবে এবং প্রতিটি ব্যালট বাক্সে আলাদা নম্বর থাকতে হবে, ৪. ব্যালট ছাপানোর সংখ্যা, কাস্টিং ভোটার ও নষ্ট ব্যালটের সংখ্যা প্রকাশ করতে হবে, ৫. মিডিয়া ট্রায়ালের ক্ষেত্রে (যদি ভুল তথ্য উপস্থাপন হয়) সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্রেই ব্যবস্থা নিতে হবে এবং সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে অবাধ স্বাধীনতা দিতে হবে, ৬. কোনো পোলিং এজেন্ট নিজ কেন্দ্র থেকে বের হতে পারবে না ও অন্য কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে অবাধ স্বাধীনতা দিতে হবে। কোনো পোলিং এজেন্ট প্রার্থীর অনুমতি ছাড়া পরিবর্তন করা যাবে না, ৭. ডাকসু, চাকসু, রাকসু ও জাকসুর নির্বাচনের সময়সূচির সঙ্গে তুলনা করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের যোগাযোগের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ সময় রেখে জকসু ২০২৫–এর তারিখ নির্ধারণ করতে হবে, ৮. আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন হলে নির্বাচনী প্রচারণার আচরণবিধি স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে। পাশাপাশি ফাউন্ডেশনের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান ও চুক্তিতে কী উল্লেখ আছে, তা বিস্তারিতভাবে জানাতে হবে, ৯. দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল শিক্ষার্থীরা অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন; তাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমফিল শিক্ষার্থীদেরও একই সুযোগ দিতে হবে। কেন জকসু বিধিমালায় তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে প্রশাসনের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে, ১০. জকসুর আচরণবিধির ৬ নম্বর ধারার আলোকে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটির সকল সদস্যের জন্য বিশেষ কার্ডের ব্যবস্থা করতে হবে, যা নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা আগে কার্যকর হবে, ১১. নির্বাচনী প্রচার ও অংশগ্রহণে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কার্যকরী কমিটির সব সদস্যকে সুযোগ দিতে হবে এবং ১২. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের ঘোষিত ধারাবাহিক কার্যক্রম চলমান রাখার সুযোগ দিতে হবে।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, “নির্বাচন কমিশনের কাছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের অনুরোধ একটি গণতান্ত্রিক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজনে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হোক। ছাত্রদল সন্তোষজনক ভাবে নির্বাচন কমিশনের আবেদন উপস্থাপন করছে, এর ব্যতিক্রম হলে কোনো গোষ্ঠীর চাপের শিকার হচ্ছে বলে প্রতিয়মান হবে।

অপরদিকে গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর শাখা শিবিরও স্মারকলিপি প্রদান করে। সেখানে পূর্বঘোষিত ২৭ নভেম্বরেই জকসু ও হল সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানায় তারা। এছাড়া নির্বাচন বানচালের নীলনকশা চলছে বলেও অভিযোগ করে তারা।

নির্বাচন কমিশন বরাবর শিবিরের দেয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, সম্প্রতি আমরা খুবই উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, শিক্ষার্থীদের অধিকার এই জকসু নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য একটি গোষ্ঠী নীলনকশা শুরু করেছে। শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও ভোটাধিকারকে ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে এই গোষ্ঠী। 

আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পূর্বঘোষিত তারিখ অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। নির্বাচন বিলম্বের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। নির্বাচন পেছানোকে আমরা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র মনে করছি। কারণ '১৩ ডিসেম্বর থেকে ২১তম ব্যাচের ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা আয়োজন থাকায় এসময় নির্বাচন করা সম্ভব নয়। কিন্তু তখন যদি জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় কিংবা আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়, তবে জকসু নির্বাচন করা কঠিন হয়ে পড়বে। এরপর আসবে শীতকালীন ছুটি। তখন শিক্ষার্থীরা থাকবে না, অনেকে বাসায় যাবেন। ফলে ২০ তারিখের পরও নির্বাচন করা সম্ভব নয়।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ