রাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদেরকে হামলার হুমকির অভিযোগ

রাবির ট্যুরিজম বিভাগে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদেরকে হামলার হুমকি
রাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদেরকে হামলার হুমকির অভিযোগ
  • Author, রাবি প্রতিনিধি
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানজিল ভূইয়ার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিক হামলার হুমকি ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তাঁর বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (০৫ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবনের ৩য় গেটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সহকারী অধ্যাপক তানজিল ভূইয়া ও ওই বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনিন জাহান মিম-এর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও বিয়ে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা আলোচনা তৈরি হয়। বিষয়টি নিয়ে তানজিল ভূইয়ার সাবেক স্ত্রী অভিযোগ তুললেও তখন তাসনিন মিম সেটিকে ‘ভিত্তিহীন ও বানোয়াট’ বলে লিখিতভাবে অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে তিনি নিজ ফেসবুক ওয়ালে বিয়ের বিষয়টি স্বীকার করে পোস্ট দেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো, অ্যাকাডেমিক পরিবেশ নষ্ট করা ও সহপাঠীদের প্রতি অশালীন আচরণ করায় তাসনিন মিমকে তারা বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন। এ বিষয়ে বুধবার দুপুরে তারা বিভাগের সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে সভাপতি অভিযোগপত্র নিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে শিক্ষার্থীরা বিভাগের অফিসে অভিযোগপত্র দিতে গেলে সহকারী অধ্যাপক তানজিল ভূইয়া নিজ চেম্বারের দরজা ভেঙে আক্রমণাত্মকভাবে শিক্ষার্থীদের দিকে তেড়ে আসেন এবং মারধরের হুমকি দেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, এ সময় বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত হোসেন ও অফিস কর্মচারীরা তাঁকে থামানোর চেষ্টা করলেও তিনি বারবার আক্রমণের চেষ্টা চালান।

এর আগে অভিযুক্ত শিক্ষকের দ্বিতীয় স্ত্রী তাসনিন জাহান মিম গত ১৫ মে ক্লাস চলাকালীন বিভাগের শিক্ষক সাজু সরদারের উপর খাতা ছুড়ে মারেন এবং অস্বাভাবিক আচরণ করেন।

এবিষয়ে তার সহপাঠীরা বলেন, ক্লাস রুমে আমরা সেদিন ক্লাস করছিলাম যখন কাউন্টিং করা হচ্ছিল তখন তাসনিম জাহান মিমের নাম আসে তখন তিনি অস্বাভাবিক আচারণ করে এবং শিক্ষকের দিকে খাতা ছুড়ে মারে  এবং এমন ভাব করেন যে তাকে জ্বীনে ধরছে এরপর তার মাকে বিষয়টি জানানো হয় তখন তার মায়ের কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ নেওয়া হয়। সে পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে বাসায় চলে যায়। পরবর্তী সে জানায় তার নাকি জ্বীনের আছর আছে এবং মানসিক সমস্যা আছে।

তারা আরো বলেন, আমরা পরবর্তীতে অসঙ্গতি লক্ষ্য করেছি। মানসিক সমস্যা তো সারা জীবন থাকে না। সে সুস্থ হলেও তো আমাদেরকে বলতে পারতো যে আমি অস্বাভাবিক আচারণ করছি আমাকে ক্ষমা করে দিও, ব্যাচমেট ও সহপাঠী হিসাবে আমরা অবশ্যই এটা বিবেচনা করতাম এবং শিক্ষকের কাছেও তাকে এ বিষয় ক্ষমা চাওয়া লাগতো। কিন্তু এমন কিছুই হয়নি বরং তার ব্যবহার দিন দিন খারাপ হতে শুরু করছিল এবং মেসেঞ্জার গ্রুপে আরো বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিতে শুরু করছিল এবং আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে বিশ্রী পোস্ট করে।

অধ্যাপক তানজীল ভুঁইয়ার প্রথম  স্ত্রীর ভাষ্যমতে, ওই মেয়ের সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে এবং আরও জানা যায় যে কড়ুইতলায় একটি বাসাতে তারা একসাথে বসবাস করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে সে এটা না স্বীকার করে। 
যখন সাধারণ শিক্ষার্থী এসব কথা জানতে চায় তখন সে শিক্ষার্থীদের নানা প্রকার হুমকি দেয় এবং পরীক্ষার ফলাফলে টেম্পাপিং শুরু করে। 

ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সহকারী অধ্যাপক তানজিল ভূইয়ার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া এবং দুই কর্মদিবসের মধ্যে তাঁকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।

এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক তানজীল ভুঁইয়া বলেন, শিক্ষার্থীরা গতকালও প্রেস ব্রিফিং করেছে। কিন্তু ঘটনার মূল উদ্যোক্তা হলেন সাজু স্যার। উনি পেছন থেকে ঘটনাটা তৈরি করে শিক্ষার্থীদেরকে উস্কে দিচ্ছেন। এর প্রেক্ষিতে আমার স্ত্রী ভয় পেয়ে গতকাল সুইসাইড করার চেষ্টা করেন। আজকে ১২টায় ওর ক্লাস ছিল। ক্লাসে ঢোকার আগে সে জানতে পারে তার নামে শিক্ষার্থীরা ডিপার্টমেন্টর চেয়ারম্যানকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য সিগনেচার কালেকশন করছে। এক পর্যায়ে সে ভয় পেয়ে আমার চেম্বারে ঢুকে। সে সময় আমি বাইরে ডিপার্টমেন্টের মেলার স্টল পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। এরপর আমাকে স্ত্রী ভিডিও কল দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করে। আমি উপরে এসে একজন পিয়নকে সাথে নিয়ে গ্লাস ভেঙ্গে তাকে সেফ করি এবং শিক্ষার্থীকে বলি আমার স্ত্ররির কিছু হলে আমি তোমাদের নামে মামলা করবো।

তিনি আরো বলেন, আমি শিক্ষার্থীদেরকে থ্রেট দিইনি। আমি শুধু বলেছি আপনারা কিভাবে আপনার সহপাঠীকে ভয় দেখালেন?  গতকাল থেকে আপনারা যে পোস্টগুলো দেখছেন সবকিছু সাজু স্যারের পূর্বপরিকল্পিত। তিনি আমাকে হেয় করার উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগ শিক্ষার্থীদের কাছে সাপ্লাই দিচ্ছেন। তারা পেছনের ছোট একটা ভিডিও প্রকাশ করেছেন। কিন্তু এর ব্যাকগ্ৰাউন্ড তো জানতে হবে। আমি প্রক্টর এবং চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিব এবং সাজু স্যারের নামে মামলা করবো।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ