পাহাড়িরা যখন আড্ডা দেয় তখন শুধু পাহাড়িরাই বসে কেনঃ চবি উপাচার্য

পাহাড়িরা যখন আড্ডা দেয় তখন শুধু পাহাড়িরাই বসে কেনঃ চবি উপাচার্য
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

“পাহাড়িরা যখন আড্ডা দেয়, তখন শুধু পাহাড়িরাই বসে, এমনটা কেন হবে? বিশ্ববিদ্যালয় হলো মিনি বাংলাদেশ, এখানে সবাই একসাথে মিশে চলবে।” শনিবার (৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের এ কে খান অডিটোরিয়ামে আয়োজিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নবীনবরণ, প্রবীণ বিদায় ও চাকসু ও হল সংসদে নবনির্বাচিত প্রতিনিধিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইয়াহ্ইয়া আকতার এ মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য ছিল— ‘এসো জুম পাহাড়ের তরুণ প্রাণ, শৃঙ্খল ভাঙার পদযাত্রায় হই আগুয়ান!’ এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আকতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন, প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী, ডাকসু সদস্য হেমা চাকমা সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

অতীশ দীপঙ্কর হল সংসদের সহ-সভাপতি রিপুল চাকমা বলেন, “১ ভোটের ব্যবধানে আমি নির্বাচিত হয়েছি। একটি ভোটের মূল্য এখন নিশ্চয়ই সবাই বুঝেছেন।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডাকসু সদস্য হেমা চাকমা তিনি বলেন আমরা ইনক্লুসিভ রাষ্ট্র গঠন করতে চাই যেখানে পাহাড়ি প্রতিনিধিরাও থাকবে। এছাড়া তিনি উপস্থিত উপাচার্যের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে পাহাড়ি ছাত্রদের পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের এলাকায় তাকে আমন্ত্রণ জানান।

ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুনমুন নেছা বলেন, “রাষ্ট্র ছোট হলেও বৈষম্য বড়। পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের সংগ্রাম একেকটা মহাকাব্যের মতো। বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞান, বিজ্ঞান ও দক্ষতার চর্চা আরও বাড়াতে হবে।”


অনুষ্ঠানে প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, “বহু ধর্ম ও জাতির সমন্বয়ে বাংলাদেশ একটি সম্প্রীতির দেশ। নবীনরা প্রবীণদের অনুসরণ করবেন এবং বিদায়ীরা ক্যাম্পাসের প্রতি ভালোবাসা রেখে যাবেন।”


সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপাচার্য নির্বাচিত পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমি মনে করিয়ে দিতে চাই, আপনারা পাহাড়িদের নেতা নন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর নেতা। যদি ভাবেন, শুধু পাহাড়িদের ভোট পেয়েছেন, তাহলে ভুল হবে। আপনারা সকল শিক্ষার্থীর প্রতিনিধি। তাই বারবার ‘পাহাড়ি’ নয়, ‘বাংলাদেশি’ বলুন। বিশ্ববিদ্যালয় মানে মিনি দেশ, অন্তত মিনি বাংলাদেশ।”

তিনি আরও বলেন, “আমার ৫০ বছরের অভিজ্ঞতায় আজও কোনো পাহাড়ি ছাত্র আমাকে তার বাসায় দাওয়াত দেয়নি, এটা রহস্যজনক। আপনি যদি কেবল নিজের জেলার গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ থাকেন, অন্য সংস্কৃতি না বোঝেন, তাহলে সম্প্রীতি আসবে কীভাবে? বিশ্ববিদ্যালয়ে সবাই সবার, তাই নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্বের পরিসর আরও বড় করতে হবে।”


অনুষ্ঠানে পিসিপির সভাপতি ভূবন চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমাসহ নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অডিটোরিয়াম ছিল শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসে মুখর। শেষে নবনির্বাচিত প্রতিনিধিদের ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ