প্রশাসনিক কাজ আটকে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে রাজনৈতিক প্রগ্ৰাম, অগ্ৰহণযোগ্য আচরণে রাকসুর নিন্দা

প্রশাসনিক কাজ আটকে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে রাজনৈতিক প্রগ্ৰাম, অগ্ৰহণযোগ্য আচরণে রাকসুর নিন্দা
  • Author, রাবি প্রতিনিধি
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ ও রাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মারের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। রেজিস্ট্রারের অশোভন আচরণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা ও তদন্ত দাবি করেছে রাকসু। সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানায় রাকসু।

বিজ্ঞপ্তিতে রাকসু জানায়, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের চলমান অচলাবস্থা টানা ২৩ দিন অতিক্রম করেছে। এ সময় বিভাগটির ক্লাস, পরীক্ষা ও সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি এই স্থবিরতা নিরসনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) একাধিকবার উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দ্রুত সমাধানের দাবি জানায়।

উপাচার্য বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অপসারণের নির্দেশে স্বাক্ষর করেন এবং তা রেজিস্ট্রার দপ্তরে পাঠান। কিন্তু প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় গড়িমসির কারণে রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুর ২টা পর্যন্তও চিঠিটি ইস্যু করা হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা আরও একদিন একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হন।

ঘটনাটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতার প্রতি চরম অবজ্ঞা বলে আখ্যা দিয়ে রাকসু বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তা দায়িত্ব পালনে বিলম্ব বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আচরণ করলে রাকসু তা বরদাস্ত করবে না।”

বিজ্ঞপ্তিতে রেজিস্ট্রারের অশোভন আচরণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা ও তদন্ত দাবি করে রাকসু বলেন, শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক স্বার্থ, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা রক্ষায় তারা সর্বদা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।

এবিষয়ে রাকসুর এজিএস এসএম সালমান সাব্বির বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নির্বাচিত ছাত্রসংসদ প্রতিনিধিকে 'তুমি কে?' বলা কিংবা 'বেয়াদব' আখ্যা দিয়ে উদ্ধত স্বরে কথা বলার সাহস কোথা থেকে আসে, তা আজ আমাদের জানা দরকার। একজন ছাত্রসংসদ প্রতিনিধি এবং একজন সচেতন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অসভ্যতা ও অগণতান্ত্রিক মানসিকতার চর্চার চির অবসান ঘটুক।

রাকসুর সাধারণ সম্পাদক জিএস সালাউদ্দীন আম্মার বলেন, ব্যক্তি সালাহউদ্দিন আম্মার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছুই না, কিন্তু যে পদে আছি সেটার সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে। আমি শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এবং সিনেট সদস্য। আর একটা বিষয় ক্লিয়ার করি! রেজিস্টার মূলত একটি অফিসার পদ, ওখানে যিনি বসবেন তিনি অফিসার। কোন সুবিধা নেওয়ার জন্য উনি শিক্ষকের থেকে ৭ স্তর নিচে গিয়ে রেজিস্টার হলেন আমার জানা নেই।'

সার্বিক বিষয়ে রাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, রাকসু নির্বাচনের পূর্ব থেকেই আমরা খেয়াল করেছি প্রশাসনের এবং শিক্ষক মহলের কেউ কেউ যেন অনুরোধে ঢেঁকি গিলছেন। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তাদের এ আচরণ পরিবর্তন হওয়া টা সমীচিন ছিল। কিন্তু এখনো প্রশাসনের কারো কারো আচরণ দেখে মনে হচ্ছে শিক্ষার্থীরা রাকসুর প্রতিনিধি নির্বাচিত করে তাদের বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছে। এজন্য তারা যেমন শিক্ষার্থীদের বিষয়ে খ্যাপা, তেমনি তাদের প্রতিনিধিদের ব্যাপারেও।

তিনি আরো বলেন, চাইলেই তারা মনমতো চলতে পারছে না। নানা বিষয়ে অসামঞ্জস্যের থলের বেড়াল বেরিয়ে আসছে। রাকসু ফান্ডের হিসাব দিতে পারছে না। আর চিঠি আটকে রাখার সেকেলে গোঁড়ামি তো আছেই। এতো ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে আপনারা অনেক দূর পিছিয়ে দিয়েছেন। রেজিস্ট্রার অফিসে যেকোন চিঠি আটকে থাকছে। আজকে রাকসু জিএস এর সাথে রেজিস্ট্রারের এহেন নিন্দাজনক আচরণ সেই জমা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। প্রশাসন প্রভু নয়, শিক্ষার্থীরা কারো দাস নয়।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ