বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ও শ্রমিকসহ মুক্তিকামী জনগণ ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে দীর্ঘ আঠারো বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটিয়ে জাতিকে মুক্ত করেছে। সহস্র শহীদের রক্তে অর্জিত এই নতুন বাংলাদেশ আজ ফ্যাসিবাদমুক্ত একটি রাষ্ট্র বিনির্মাণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিতাড়িত ফ্যাসিস্ট, গণহত্যাকারী ও সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ তাদের সহযোগীরা এখন দেশবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে অভিযোগ করা হয় বিবৃতিতে।

সম্মিলিত ছাত্র সংসদ দাবি করে, অতীতে লগী-বৈঠার রাজনীতি থেকে শুরু করে দীর্ঘ দেড় দশক গুম, খুন, দমন-পীড়ন ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দেশকে এক অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। তাদের পতনের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া জুলাই বিপ্লবের অর্জন এখনো হুমকির মুখে। প্রায় দুই হাজার শহীদের রক্তে অর্জিত এই বিপ্লবের সুরক্ষা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম দায়িত্ব হওয়া উচিত।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে ফ্যাসিস্ট ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর নাশকতা, চোরাগোপ্তা হামলা, অগ্নিকাণ্ড, ককটেল বিস্ফোরণ এবং ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার চেষ্টার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমনে সরকারের উদ্যোগ সন্তোষজনক নয় বলে মন্তব্য করে ছাত্রনেতারা। তারা সরকারকে আহ্বান জানায়, আওয়ামী সন্ত্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে দেশব্যাপী কঠোর অভিযান পরিচালনা করতে হবে।

সম্মিলিত ছাত্র সংসদ আরো উল্লেখ করে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান ও জাতীয় গণভোটকে সামনে রেখে পতিত স্বৈরাচারী গোষ্ঠী এবং তাদের দোসররা অরাজকতা সৃষ্টির অপতৎপরতা শুরু করেছে। এই প্রেক্ষাপটে তারা দাবি জানায়, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের শেকড় উৎপাটনে সরকারকে আরও সক্রিয় ও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। জুলাই গণহত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জাতিকে নিরাপদ রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত টহল জোরদার ও দেশব্যাপী চিরুনি অভিযান পরিচালনা করতে হবে। একইসঙ্গে জুলাইয়ে সংঘটিত গণহত্যার বিচারকার্যের দৃশ্যমান অগ্রগতি জনগণের সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানানো হয়।

শেষাংশে ডাকসু, জাকসু, রাকসু ও চাকসুর পক্ষ থেকে সকল দেশপ্রেমিক নাগরিক, ছাত্র, শ্রমিক ও জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়, ফ্যাসিস্ট ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে। তারা বলেন, দেশের যে প্রান্তেই নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের পাওয়া যাবে, সেখানেই জনগণের প্রতিরোধের মাধ্যমে তাদের আইনের হাতে তুলে দিতে হবে।