যেসব আসনে পাল্টে যাচ্ছে বিএনপি প্রার্থীদের মনোনয়ন
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
ইতোমধ্যে ২৩৭ টি আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। ধানের শীষ প্রতীক পেয়ে প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়লেও বেশ কিছু আসনে মনোনয়ন নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও অসন্তোষ তীব্র হয়েছে। বিশেষ করে মনোনয়নবঞ্চিত ও ত্যাগী নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে একাধিক আসনে। দলের হাইকমান্ড মাঠপর্যায়ের কর্মকাণ্ড নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে ঘোষিত তালিকায় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে দলটি।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ঘোষিত প্রার্থীদের মধ্যে অন্তত ২৩টি আসনে বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। এসব আসনে মনোনয়নবঞ্চিত নেতারা শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। তদন্তে উঠে এসেছে, পুনর্মূল্যায়ন না হলে কয়েকজন বঞ্চিত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। এ অবস্থায় বিএনপি নেতৃত্ব মাঠের পরিস্থিতি নিরপেক্ষভাবে যাচাই করছে। যাচাই-বাছাই শেষে কিছু আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়নি দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্যের সূত্রে জানা যায়, “কিছু আসনে ক্ষোভ স্বাভাবিক, তবে দল তা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ফাঁকা আসন সব মিত্রদের জন্য নয়, কিছু আসনে শিগগিরই দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।”
২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা গত ৩ নভেম্বর গুলশানে ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই তালিকা ‘সম্ভাব্য’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে কিছু আসনে পরিবর্তন হতে পারে। বর্তমানে ৬৩টি আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে, যার বেশির ভাগ মিত্র দল বা জোটের জন্য বরাদ্দ হতে পারে।
অভ্যন্তরীণ বিরোধ সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, নাটোর, নারায়ণগঞ্জ, মেহেরপুর ও নরসিংদীর বিভিন্ন আসনে। সাতক্ষীরা-২ আসনে প্রার্থী আবদুর রউফের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে ৩৩ জন স্থানীয় নেতা যৌথ আবেদন করেছেন। একই জেলার কালীগঞ্জে ডা. শহিদুল আলমকে মনোনয়ন না দেওয়ায় প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে। ময়মনসিংহ-৩ আসনে প্রার্থী এম ইকবাল হোসেন ও বঞ্চিত নেতা আহম্মেদ তায়েবুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হয়েছে অন্তত আটজন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫, আখাউড়া-কসবা, সিলেট-৪, ফুলবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ-৪ আসনেও মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। একইভাবে রংপুর-৩, টেকনাফ, নাটোর-১, নারায়ণগঞ্জ-২ ও গাংনী আসনে মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ চলছে। চট্টগ্রাম-২ ও ৪ আসনে সড়ক অবরোধ ও আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
দলীয় নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন, মাঠপর্যায়ে ঐক্য গড়তে ব্যর্থ হলে প্রার্থী পরিবর্তনের মতো সিদ্ধান্ত নিতেও দ্বিধা করবে না বিএনপি। তবে ত্যাগী নেতাদের প্রচেষ্টায় বাধা দিলে দায়ীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র মতে, কিছু মনোনয়নবঞ্চিত নেতাকে অন্য রাজনৈতিক দল প্রার্থী করার প্রস্তাব দিয়েছে, যা বিএনপির ভোট বিভাজনের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে।
এদিকে ফাঁকা ৬৩ আসনের মধ্যে অন্তত ১১টিতে নতুন প্রার্থী ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। এর মধ্যে ঢাকা-৯, ঢাকা-১৮, ঢাকা-২০, মাদারীপুর-২, গাজীপুর-১, টাঙ্গাইল-৫, চট্টগ্রাম-৬, ৯, ১১, ঝিনাইদহ-৪ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের নাম রয়েছে। সব মিলিয়ে, অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন শেষে কিছু আসনে প্রার্থী পরিবর্তন ও অতিরিক্ত প্রার্থী ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিএনপি তাদের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।