নিউইয়র্ক প্রশাসনে মামদানির প্রথম বড় পদক্ষেপ
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি তাঁর প্রশাসনের প্রথম দফার নিয়োগ ঘোষণা করেছেন, যা তাঁর নেতৃত্বের দিকনির্দেশনা সম্পর্কে স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—তরুণ ভাবনা আর অভিজ্ঞ হাতের সমন্বয়।
গত সোমবার ঘোষণায় মামদানি জানিয়েছেন, অঙ্গরাজ্য সরকারের অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ডিন ফিউলিহান হবেন সিটি হলের ডেপুটি মেয়র, আর তাঁর দীর্ঘদিনের সহযোগী এল বিসগার্ড-চার্চ থাকবেন চিফ অব স্টাফ পদে।
৭৪ বছর বয়সী ফিউলিহান এর আগে সাবেক মেয়র বিল দে ব্লাসিওর প্রশাসনে একই পদে কাজ করেছেন। এবার তিনি ৩৪ বছর বয়সী মামদানির জন্য হবেন প্রশাসনিক অভিজ্ঞতার মূল ভরসা, বিশেষ করে শহরের দৈনন্দিন কাজের কার্যকারিতা ও নীতিমালা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে।
এক সংবাদ সম্মেলনে মামদানি বলেন,
“আমাদের প্রশাসনকে শুধু বড় প্রকল্পের মাধ্যমে নয়, বরং সাধারণ নাগরিক সেবার মান দিয়েই বিচার করা হবে, ময়লা পরিষ্কার থেকে শুরু করে প্রতিটি নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন পর্যন্ত।”
ফিউলিহান বর্তমানে নিউইয়র্ক রাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল কন্ট্রোল বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, যে বোর্ডটি সিটির আর্থিক কর্মকাণ্ড তদারক করে। ফলে তাঁকে এই দায়িত্বে আনা মামদানির আর্থিক ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে, চিফ অব স্টাফ হিসেবে এল বিসগার্ড-চার্চের নিয়োগকে ‘প্রত্যাশিত পদক্ষেপ’ বলছেন বিশ্লেষকেরা। রাজ্য পরিষদে মামদানির ঘনিষ্ঠ সহকারী হিসেবে কাজ করা বিসগার্ড-চার্চ তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করছেন, যিনি নীতিমালা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দক্ষতা ও কৌশলগত চিন্তায় পারদর্শী।
১ জানুয়ারি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন মামদানি। দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁর সামনে অপেক্ষা করছে একাধিক বড় চ্যালেঞ্জ, নিউইয়র্কের জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বিনা ভাড়া করা, শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র সম্প্রসারণ এবং ভাড়া-নিয়ন্ত্রিত অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া বৃদ্ধিতে স্থগিতাদেশ কার্যকর করা।
এই উচ্চাভিলাষী কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়নে তাঁকে রাজ্য পরিষদ ও গভর্নর ক্যাথি হোকুলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে। হোকুল জানিয়েছেন, শিশুসেবা খাতে তিনি মামদানির সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী, যদিও বাসভাড়া পুরোপুরি বাতিলের বিষয়ে তাঁর কিছু সংশয় রয়েছে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মামদানিকে “চরমপন্থী কমিউনিস্ট” বলে আখ্যা দিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি তাঁর নীতিগুলো “অতিরিক্ত উদার” হয়, তবে তিনি নিউইয়র্কের ফেডারেল তহবিল বন্ধ করে দেবেন কিংবা ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের কথাও বিবেচনা করবেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মামদানির প্রথম নিয়োগগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, তিনি একদিকে যেমন নতুন প্রজন্মের অগ্রগতিমুখী রাজনীতি তুলে ধরতে চান, অন্যদিকে প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় অভিজ্ঞ সহযোগীদের গুরুত্বও দিচ্ছেন।
অর্থাৎ, তাঁর প্রশাসন হতে যাচ্ছে আদর্শ ও বাস্তবতার মেলবন্ধন।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।