প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন প্রবাসীরা, কোন পদ্ধতিতে ভোট দেবেন?

প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন প্রবাসীরা, কোন পদ্ধতিতে ভোট দেবেন?
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ডাকযোগে ভোট প্রদান পদ্ধতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চালু করা হচ্ছে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ মোবাইল অ্যাপ, যার মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানকারী ভোটাররা নিবন্ধন সম্পন্ন করে নিজ নিজ ঠিকানায় ব্যালট গ্রহণ করবেন। ইসির কর্মকর্তাদের মতে, প্রবাসী ভোটারদের ডাকের মাধ্যমে পাঠানো ব্যালট পেপার দেশে ফিরে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌঁছাতে সর্বনিম্ন ১৫ দিন এবং সর্বোচ্চ ৩০ দিন সময় লাগতে পারে। এই পুরো প্রক্রিয়ার দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ, যেখানে ভোটারপ্রতি ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০০ টাকা।

ইসি জানায়, বিদেশে বসে ভোট দিতে হলে প্রবাসী ভোটারদের অবশ্যই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। গুগল প্লে স্টোর ও অ্যাপ স্টোরে থাকা ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপটি বাংলাদেশ থেকে ব্যবহার করা যাবে না, কারণ এতে জিও লোকেশন বাধ্যতামূলক রাখা হয়েছে। নিবন্ধনের সময় আন্তর্জাতিক মোবাইল নম্বর দিয়ে ওটিপি যাচাই, জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি আপলোড এবং মুখমণ্ডল শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এনআইডিতে সংরক্ষিত ছবির সঙ্গে কমপক্ষে ৭০ শতাংশ মিল পাওয়া গেলে নিবন্ধন অনুমোদিত হবে। এরপর ভোটারের ছবি ও পাসপোর্টের (যদি থাকে) কপি যুক্ত করতে হবে। সঠিক ডাক ঠিকানা প্রদানও বাধ্যতামূলক, কারণ ভোটারের সেই ঠিকানাতেই যাবতীয় ডাকযোগে পাঠানো নথি পৌঁছাবে।

নিবন্ধন সম্পন্ন হলে সংশ্লিষ্ট আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ডেটা পৌঁছাবে এবং পৃথক তালিকা প্রস্তুত হবে। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পূর্বেই ব্যালট পাঠানো হলেও ভোটাররা অ্যাপে কিউআর কোড স্ক্যান করে শুধুমাত্র প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর ভোট প্রদান করতে পারবেন। সব আসনের জন্য পাঠানো ব্যালটে থাকবে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর নাম এবং ১১৯টি নির্ধারিত প্রতীক। একই সঙ্গে থাকবে ‘না ভোট’-এর সুযোগ, যা শুধুমাত্র একপ্রার্থীযুক্ত আসনের ভোটাররা ব্যবহার করতে পারবেন।

ভোট প্রদান শেষে ভোটারকে ব্যালটটি রিটার্ন খামে ভরে স্থানীয় পোস্ট অফিসে জমা দিতে হবে। ডাক মাসুল আগেই পরিশোধ করা থাকবে। ব্যালটের সঙ্গে থাকা ঘোষণাপত্রে ভোটারের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক, অন্যথায় ভোট বাতিল হিসেবে গণ্য হবে। ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ জানান, প্রার্থী বাতিল হলে বা পরবর্তীতে প্রার্থিতা ফিরে এলে সংশ্লিষ্ট আসনের প্রবাসীদের ভোটও বাতিল বলে বিবেচিত হবে। ভোটগ্রহণের দিন বিকেল ৪টার মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌঁছানো ব্যালটই বৈধ হিসেবে গণ্য হবে।

ডাক বিভাগের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে পুরো প্রক্রিয়ায় ট্র্যাকিং সিস্টেম সংযুক্ত থাকবে, যার মাধ্যমে ভোটার ও রিটার্নিং কর্মকর্তারা ব্যালটের অবস্থান সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তথ্য জানতে পারবেন। সময় ব্যবস্থাপনা, প্রার্থিতা বাতিল বা পুনর্বহালের মতো বিষয়গুলোকে প্রবাসী ভোট কার্যক্রমের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে ইসি। তবুও দেশের বাইরে থাকা লাখো ভোটারের প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগের এ উদ্যোগকে নির্বাচন কমিশন গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করছে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ