পাকিস্তানের সংবিধান সংশোধনী ইস্যুতে হাইকোর্টের বিচারপতির পদত্যাগ
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
পাকিস্তানে সংবিধানের ২৭তম সংশোধনী পাস হওয়ার পর বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে তৈরি হওয়া নতুন বিতর্কে লাহোর হাইকোর্টের বিচারপতি শামস মেহমুদ মির্জা পদত্যাগ করেছেন। শনিবার তিনি প্রধান বিচারপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন যে, সংশোধনী পাস হওয়ায় নৈতিক ও বিবেকগত কারণে বিচারকের দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। ২০১৪ সালে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া শামস মেহমুদ মির্জার অবসর নেওয়ার কথা ছিল ২০২৮ সালে। তিনি জ্যেষ্ঠতার তালিকায় পঞ্চম স্থানে ছিলেন এবং আদালতের প্রশাসন কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, এর আগে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের দুই জ্যেষ্ঠ বিচারপতি, মনসুর আলী শাহ এবং আতহার মিনাল্লাহ, এই সংশোধনীকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর গুরুতর হুমকি আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ করেন। একই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টের আরও দুই বিচারপতি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, আগামী মাস থেকে তারা নিয়মিত আদালতে উপস্থিত নাও থাকতে পারেন।
সংশোধনীটি পাকিস্তানে সেনাপ্রধানের ক্ষমতা আরও বাড়িয়েছে এবং সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক এখতিয়ার সীমিত করেছে। এখন সাংবিধানিক মামলাগুলো সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারকদের সমন্বয়ে গঠিত নতুন কেন্দ্রীয় সাংবিধানিক আদালতে বিচার হবে। আইনটি জাতীয় পরিষদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাস হয়েছে এবং প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের পর এটি চূড়ান্ত আইনে রূপ নেবে, যা শুধুই আনুষ্ঠানিকতা বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, দ্রুত গতিতে নেওয়া এ সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে গভীর সংকটে ফেলবে। সংবিধানবিদ আসাদ রহিম খান মন্তব্য করেন, পাকিস্তান এমন এক অজানা ও বিপজ্জনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে, যা প্রায় শত বছরে দেখা যায়নি। আরেক সংবিধানবিদ মির্জা মইজ বেগ বলেন, সংশোধনীটি কার্যত স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ‘মৃত্যু ঘণ্টা’, কারণ এতে প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট বিচারপতি নিয়োগে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পাবেন, যা সরকারের ওপর বিচারিক নজরদারি দুর্বল করে দেবে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।