তাইওয়ান ইস্যুতে জাপান-চীন মুখোমুখি

তাইওয়ান ইস্যুতে জাপান-চীন মুখোমুখি
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির সাম্প্রতিক মন্তব্যের জেরে বেইজিং ও টোকিওর মধ্যে তীব্র কূটনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। জাপান সফর এড়িয়ে চলতে চীনা নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বেইজিং, পাশাপাশি বেইজিংয়ে থাকা জাপানি রাষ্ট্রদূতকে তলব করে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদও জানানো হয়েছে।

বিবিসি’র বরাতে জানা যায়, জাপানের সংসদীয় এক বৈঠকে বিরোধী দলের এক আইনপ্রণেতার প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি ইঙ্গিত দেন, চীন তাইওয়ান আক্রমণ করলে জাপান তার আত্মরক্ষামূলক বাহিনী নিয়েও সামরিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।

তাকাইচি বলেন, "যদি যুদ্ধজাহাজ থাকে এবং যদি বলপ্রয়োগ হয়, তাহলে আপনি যেটাই ভাবেন না কেন, এটাকে 'টিকে থাকার জন্য হুমকি' ধরনের পরিস্থিতি ধরা যেতে পারে।"
জাপানের ২০১৫ সালের নিরাপত্তা আইনে, 'টিকে থাকার জন্য হুমকি' এমন একটি আইনি শব্দবন্ধ যা জাপানের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ মিত্রদের উপর সশস্ত্র হামলা বোঝায়। এমন পরিস্থিতিতে জাপানের আত্মরক্ষামূলক বাহিনী মোতায়েন করা যেতে পারে।

তাকাইচির এই মন্তব্যের পরপরই বেইজিং ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটিকে 'চরম আপত্তিকর' মন্তব্য আখ্যা দেয়।
জাপানের ওসাকা শহরের চীনা কনসাল জেনারেল শুয়ে জিয়ান এক্সে (বর্তমানে এক্স) তাকাইচির বক্তব্যের খবরটি শেয়ার করে মন্তব্য করেন, "যে নোংরা মাথাটা হস্তক্ষেপ করতে চায় তা অবশ্যই কেটে নিতে হবে।" এতে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়।

যদিও শুয়ের পোস্টটি পরে সরিয়ে নেওয়া হলেও দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে অপরের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ পাঠায়। টোকিও শুয়ের মন্তব্য নিয়ে বেইজিংকে প্রতিবাদ জানায় এবং বেইজিংও তাকাইচির মন্তব্য ঘিরে একই পদক্ষেপ নেয়।

গত সোমবার এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জাপানের মুখ্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব মিনোরু কিহারা সাংবাদিকদের বলেন, শুয়ের বক্তব্য 'পুরোপুরি স্পষ্ট বোঝা না গেলেও' তা 'যথেষ্ট আপত্তিকর’।

মঙ্গলবার তাকাইচি তার মন্তব্য প্রত্যাহারে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, তিনি যা বলেছেন তা জাপানের সরকারের ‘দীর্ঘদিনের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ’। তবে তিনি এও বলেন, এরপর থেকে সুনির্দিষ্ট পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্সে জাপানি ও ইংরেজি ভাষায় দেওয়া পোস্টে জাপানকে 'আগুন নিয়ে খেলা বন্ধ করতে' বলে। তারা সতর্ক করে দেয় যে, জাপান ‘তাইওয়ান উপকূলের এপাশ-ওপাশের পরিস্থিতি’ নিয়ে নাক গলানোর দুঃসাহস দেখালে তা ‘আগ্রাসী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে গণ্য হবে।

দুই পক্ষের এই ক্রমবর্ধমান বিরোধ দুই দেশের ঐতিহাসিক বৈরিতা নতুন করে উসকে দিয়েছে। এটি স্বশাসিত তাইওয়ানের সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান 'কৌশলগত স্থিতাবস্থা' বদলাচ্ছে কিনা, সেই প্রশ্নও উত্থাপন হচ্ছে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ