নিমপাতার ঔষধি গুণ
রোগ প্রতিরোধ থেকে ত্বকের যত্ন, জানুন ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
নিমের ঔষধি গুণ সম্পর্কে কমবেশি সবাই জানেন। নিমগাছের প্রতিটি অংশ—পাতা, ডাল, ফুল—শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে দারুণভাবে সাহায্য করে। এ ছাড়া নিমপাতা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণের কারণে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সকালে খালি পেটে ২–৩টি নিমপাতা খাওয়া সবচেয়ে উপকারী। নিমের তেতো স্বাদের কারণে অনেকেই এটি খেতে চান না। এ ক্ষেত্রে গুড় বা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। কাঁচা নিমপাতা বা এর রস খেতে অসুবিধা হলে রোদে শুকিয়ে নিন। শুকনো নিমপাতা রসুন ও শর্ষের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ভাতের সঙ্গেও খাওয়া যায়।
নিমপাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা
১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: নিমপাতা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি রক্তনালি প্রসারিত করে রক্ত চলাচল সচল রাখে।
২. হজমশক্তি বৃদ্ধি: সকালে কাঁচা নিমপাতা চিবিয়ে খেলে হজমের সমস্যা দূর হয়। এটি অ্যাসিডিটি এবং পেটব্যথা কমাতেও কার্যকর।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়: নিমপাতায় থাকা ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এটি সর্দি-কাশির মতো সাধারণ রোগ নিরাময়েও সাহায্য করে।
৪. রক্ত পরিষ্কার করে: নিমপাতা রক্ত থেকে টক্সিন দূর করে, যা শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।
৫. ত্বকের সমস্যা দূর করে: ব্রণ, ফোঁড়া, একজিমা, চুলকানি এবং ত্বকের অন্যান্য সংক্রমণে নিমপাতা বেঁটে লাগালে দ্রুত উপকার মেলে। নিয়মিত নিমপাতা খেলে ত্বকের অ্যালার্জিও দূর হয়।
৬. মুখের স্বাস্থ্য রক্ষা: নিমপাতা সেদ্ধ পানি দিয়ে কুলি করলে দাঁতের সংক্রমণ, মাড়ির রক্তপাত এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।
৭. কৃমি দূর করে: শিশুদের কৃমি নিরাময়ে নিমপাতা খুবই কার্যকর। এক সপ্তাহ টানা অল্প পরিমাণে খাওয়ালেই দ্রুত ফল মেলে।
৮. বাতের ব্যথা কমায়: নিমপাতা, বীজ ও বাকল বাতের ব্যথা উপশমে সাহায্য করে। নিমের তেল দিয়ে ম্যাসাজ করলেও ব্যথা কমে।
সতর্কতা
নিমপাতা অনেক রোগের প্রাকৃতিক সমাধান হলেও অতিরিক্ত ব্যবহারে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে নিমপাতা খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
নিমপাতার গুণাগুণ জানার পাশাপাশি এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করলে এটি হতে পারে আপনার দৈনন্দিন স্বাস্থ্য রক্ষার একটি প্রাকৃতিক উপায়।