যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে

যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর নতুন করে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করেছেন। এটি তার ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধের সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে, এই মাসের শুরুতে ট্রাম্পের শুল্ক আদেশ কার্যকর হওয়ার পর চীনা পণ্যের ওপর ইতিমধ্যেই কমপক্ষে ১০ শতাংশ শুল্ক প্রযোজ্য হচ্ছে।

এদিকে, ট্রাম্প বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছেন যে তিনি কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন, যা ৪ মার্চ থেকে কার্যকর হতে পারে। তার এই মন্তব্য এসেছে মেক্সিকো ও কানাডার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার সময়, যারা এই শুল্ক পরিকল্পনা বাতিলের জন্য ওয়াশিংটনে অবস্থান করছেন।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প মেক্সিকো ও কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন, যদি দেশ দুটি সীমান্ত নিরাপত্তা ও মাদক পাচার রোধে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ না নেয়। তবে, শেষ মুহূর্তে তিনি এই পদক্ষেপ এক মাসের জন্য স্থগিত রেখেছিলেন, যখন মেক্সিকো ও কানাডা সীমান্ত তহবিল বৃদ্ধি ও মাদক পাচার মোকাবিলায় আলোচনার জন্য সম্মত হয়।

বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্প লিখেছেন, তিনি মনে করেন না যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানাইল প্রবাহ রোধে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরো উল্লেখ করেছেন, ‘মেক্সিকো ও কানাডা থেকে এখনও আমাদের দেশে অগ্রহণযোগ্য মাত্রায় মাদক প্রবেশ করছে, যার একটি বড় অংশ চীনে উৎপাদিত।’

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউম ট্রাম্পের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘ট্রাম্পের যোগাযোগের নিজস্ব পদ্ধতি আছে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, একটি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে এবং ৪ মার্চের আগেই নতুন কিছু ঘোষণা করা যাবে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও বলেছেন, তার দেশ একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের সতর্কতা ‘তাৎক্ষণিক ও শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া’ তৈরি করতে পারে বলে জানিয়েছেন দুই দেশের নেতারা। তারা পূর্বেই সতর্ক করেছেন যে, যদি যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করে, তাহলে তারা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেবে।

চীন, মেক্সিকো ও কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ তিনটি বাণিজ্যিক অংশীদার, যারা গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে আমদানির ৪০ শতাংশেরও বেশি পণ্য সরবরাহ করেছে। অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন যে, এই তিন দেশের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ফলে আইফোন থেকে শুরু করে অ্যাভোকাডো পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্যের দাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে যেতে পারে।

চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ বলেছেন, চীন ইতিমধ্যেই ফেন্টানাইল প্রবাহ রোধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করছে এবং উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ট্রাম্পের শুল্ক পদক্ষেপ ‘দুই দেশের মধ্যে ভবিষ্যৎ সহযোগিতাকে প্রভাবিত করতে পারে এবং এটি কোনো পক্ষের জন্যই উপকারী হবে না।’

এই পদক্ষেপগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে, যা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।


সম্পর্কিত নিউজ