চট্টগ্রাম বন্দর ইজারায় ৯০ শতাংশ শ্রমিক বেকার হবেঃ সারাদেশে আন্দোলনের ডাক

চট্টগ্রাম বন্দর ইজারায় ৯০ শতাংশ শ্রমিক বেকার হবেঃ সারাদেশে আন্দোলনের ডাক
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে শ্রমিক নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই পদক্ষেপ দেশের অর্থনীতিকে অচল করে দেবে এবং বন্দরে কর্মরত প্রায় ৯০ শতাংশ শ্রমিককে বেকার করে তুলবে।

আজ শনিবার (২২ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) বিভাগীয় কনভেনশনে বক্তারা এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এসময় বন্দর ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তারা দেশজুড়ে আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

শ্রমিক নেতাদের মতে, চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশি ব্যবস্থাপনায় ছেড়ে দিলে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা, অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ এবং সামগ্রিক শ্রমবাজার মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে।

তারা বলেন, বন্দর পরিচালনা ও উন্নয়নে বিদেশি কোম্পানির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়লে স্থানীয় শ্রমিকদের কর্মসংস্থান অনিরাপদ হয়ে পড়বে। স্থানীয় শ্রমিকদের পরিবর্তে আউটসোর্সিং এবং বিদেশি কর্মী ব্যবস্থাপনা বাড়বে যা বৃহত্তর শ্রমবাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।


জাতীয় শ্রমিক জোট চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক জাহিদ উদ্দিন শাহিন তার বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "মা, মাটি, মোহনা বিদেশিদের দেব না। বন্দর বিদেশিদের দিলে ৯০ শতাংশ শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে।"

ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি তপন দত্ত সরকারের নীতির সমালোচনা করে বলেন, "আগের সরকারের নীতিগত ভুল শ্রমিকদের বিপর্যস্ত করেছে, কিন্তু নতুন সরকারের সিদ্ধান্তগুলোও শ্রমবান্ধব হচ্ছে না। বিশেষ করে বন্দর ইজারা প্রসঙ্গ শ্রমিকের অস্তিত্বে বড় ধাক্কা দেবে।"
এই সিদ্ধান্তের পেছনে কোনো ‘দুরভিসন্ধি’ আছে কিনা প্রশ্ন তুলে তপন দত্ত বলেন “আগের সরকারের সব কিছু খারাপ, কিন্তু এটা কেন ভালো? নাকি এটার পেছনে কোনো দুরভিসন্ধি রয়েছে?”

শ্রম সংস্কার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান সুলতান উদ্দিন আহমেদ বন্দরের মতো একটি জাতীয় সম্পদ নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জনগণ ও সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের মতামত নেওয়া অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান ক্ষেত্রে জনগণের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে দেশের সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এস কে খোদা তোতন, বিএলএফের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হক সহ প্রমুখ শ্রমিক নেতা।

উল্লেখ্য, বন্দর ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শ্রমিক নেতারা আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ২৬ নভেম্বর (মঙ্গলবার) জেলায় জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ