রমজানে পানিশূন্যতা এড়াতে করণীয়

রমজানে পানিশূন্যতা এড়াতে করণীয়
ছবির ক্যাপশান, ছবি সংগৃহীত
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

ফাল্গুনের মাঝামাঝি সময়ে আরামদায়ক আবহাওয়ায় এবার রমজান মাস শুরু হয়েছে। এই সময়ে সাধারণত তৃষ্ণার তীব্রতা কম অনুভূত হলেও সুস্থ থাকতে সারাদিনের পানির চাহিদা পূরণ করা জরুরি। বিশেষ করে যারা শারীরিক পরিশ্রম বেশি করেন, তাদের জন্য পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাবার গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে চৈত্র মাসের উষ্ণতা শুরু হলে শরীর নিজেই পানির ঘাটতির সংকেত দেবে। তাই ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত সময়ে পানির চাহিদা মেটানোর দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মতলেবুর রহমানের পরামর্শ অনুযায়ী, রমজানে পানিশূন্যতা এড়াতে কিছু সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ অনুসরণ করা যেতে পারে।  

পানি ও তরল খাবার
 
প্রথমেই পানি খাওয়ার কথা আসে। তবে শুধু পানি নয়, বিভিন্ন ধরনের তরল খাবারও শরীরের পানির চাহিদা পূরণে সাহায্য করে। লেবুপানি, ডাবের পানি, চিড়ার পানি, শরবত, দুধ, স্মুদি, মিল্কশেক ইত্যাদি পানীয় রাখতে পারেন ইফতার ও সাহ্রির মেন্যুতে। চিয়া সিড বা তোকমা দানা ভেজানো পানি খাওয়া যেতে পারে। তবে একবারে অনেক পানি বা পানীয় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে পেটে অস্বস্তি হতে পারে। বরং রাতের বিভিন্ন সময়ে অল্প অল্প করে পানি ও তরল খাবার গ্রহণ করুন। খাবার ও পানীয় গ্রহণের মধ্যে ১৫-২০ মিনিটের ব্যবধান রাখুন।  

ফল ও তরলযুক্ত খাবার
 
ইফতারে ফলের সালাদ বা আস্ত ফল খাওয়া যেতে পারে। আপেল, নাশপাতি, পেঁপে, আনারস, মালটা, কলা, শসা ও টমেটোর মতো ফলমূল শরীরে পানির চাহিদা পূরণে সহায়ক। এ ছাড়া রাতের খাবারে লাউ, কাঁচা পেঁপে বা চালকুমড়ার তরকারির ঝোল এবং ডাল খাওয়া যেতে পারে।  

যেসব পানীয় এড়িয়ে চলবেন
 
সব পানীয়ই যে শরীরের জন্য উপকারী, তা নয়। ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় যেমন চা, কফি, কোমলপানীয় ও চকলেটমিশ্রিত পানীয় প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, যা শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি করতে পারে। তাই এ ধরনের পানীয় এড়িয়ে চলাই ভালো। তবে যারা চা-কফি ছাড়া থাকতে পারেন না, তারা ইফতারের পর অল্প পরিমাণে চা বা কফি খেতে পারেন। সাহ্রির সময় ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় একেবারেই না খাওয়াই উত্তম।  

এ ছাড়া অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয় যেমন কোমলপানীয় ও প্যাকেটজাত জুস এড়িয়ে চলুন। এগুলো প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি ওজন বৃদ্ধিরও কারণ হতে পারে।  

পানিশূন্যতা চেনার উপায়
 
পর্যাপ্ত পানি পান করছেন কি না, তা বোঝার সহজ উপায় হলো প্রস্রাবের রং লক্ষ করা। হালকা হলুদ বা খড়ের মতো রং স্বাভাবিক। তবে প্রস্রাবের রং গাঢ় হলেই বুঝতে হবে শরীরে পানির ঘাটতি রয়েছে। এ ছাড়া মুখ ও ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, চোখ বসে যাওয়া এবং প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়াও পানিশূন্যতার লক্ষণ। এমন সমস্যা দেখা দিলে ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত সময়ে বেশি করে পানি ও তরল খাবার গ্রহণ করুন।  

রমজান মাসে সুস্থ থাকতে পানির চাহিদা পূরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত সময়ে পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাবার গ্রহণের পাশাপাশি ক্যাফেইন ও চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন। এ ছাড়া ফলমূল ও তরলযুক্ত খাবার খেয়ে শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় রাখুন। এভাবে পানিশূন্যতা এড়িয়ে রমজান মাসে সুস্থ ও সক্রিয় থাকা সম্ভব।


সম্পর্কিত নিউজ