পাবনায় মসজিদের চাল আত্মসাতের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
প্রতিবাদ করায় মারপিটে আহত ৫

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
পাবনার চাটমোহরে একটি মসজিদের দুই মেট্রিক টন চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় নারী ও শিশুসহ পাঁচজনকে মারধর করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে তিনজনকে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের কদমতলী মিনাজ মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন— কদমতলী মিনাজ মোড় গ্রামের জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী সালমা খাতুন (৩৫), তার ছেলে সোহেল (১১) এবং আলাউদ্দিন আলীর স্ত্রী আলপনা খাতুন (৩২)।
আহত সালমা খাতুন জানান, মিনাজ মোড় জামে মসজিদে সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া দুই টন চাল বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন সাইফুল ইসলাম ও মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার আব্দুল মতিন। এ বিষয়ে তার স্বামীসহ এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেছিলেন। এর জেরে শুক্রবার সকালে সাইফুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় লাঠি দিয়ে তাদের মারধর করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা লোকমান হোসেন বলেন, গত বুধবার উপজেলা প্রশাসনের দুজন কর্মকর্তা এলাকায় এসে জানান, মসজিদে দুই টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে স্থানীয়রা এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম এবং মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার আব্দুল মতিন চাল বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
লোকমান হোসেন আরও জানান, বৃহস্পতিবার স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ দেন। এ সময় ক্যাশিয়ার আব্দুল মতিন ইউএনও অফিসে হাজির হয়ে স্বীকার করেন যে চাল বিক্রি করে ৭০ হাজার টাকা আয় করা হয়েছে এবং তিনি টাকা মসজিদের তহবিলে জমা দেবেন। তবে শুক্রবার সকালে সাইফুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা অভিযোগকারীদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় শিশু ও নারীসহ পাঁচজনকে মারধর করা হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফৈলজানা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, "মসজিদের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। চাল বিক্রি করেছেন মসজিদের ক্যাশিয়ার। তিনি টাকা মসজিদের তহবিলে জমা দেবেন বলেছেন। আগে ক্যাশিয়ারকে মারধর করা হয়েছিল, সেটির জেরেই আজকের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।"
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, "বৃহস্পতিবার স্থানীয়রা অভিযোগ দিয়েছিলেন। ক্যাশিয়ার টাকা মসজিদের তহবিলে জমা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে শুক্রবারের হামলার ঘটনা দুঃখজনক। এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ, তাই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
স্থানীয়রা জানান, সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া চালের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ও হামলার ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এখন প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছেন তারা।