বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপে দেশে ৩৩ শতাংশ মানুষ অসুস্থ
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাম্প্রতিক জরিপে দেশের সার্বিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির একটি উদ্বেগজনক চিত্র উঠে এসেছে। ‘হেলথ অ্যান্ড মরবিডিটি স্ট্যাটাস সার্ভে (এইচএমএসএস)’ শীর্ষক জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, দেশের প্রতি হাজার মানুষের মধ্যে ৩৩২ জন কোনো না কোনো রোগে আক্রান্ত ছিলেন, যা মোট জনসংখ্যার অন্তত ৩৩ শতাংশ। নারীদের অসুস্থতার হার পুরুষের তুলনায় বেশি; প্রতি হাজার নারীর মধ্যে ৩৫৪ দশমিক ৬ এবং পুরুষের ক্ষেত্রে এ হার ৩০৯ দশমিক ২। পল্লি ও শহরাঞ্চলের মধ্যে অসুস্থতার হার খুব বেশি পার্থক্য না থাকলেও গ্রামে হার সামান্য বেশি দেখা যায়।
জরিপে বলা হয়, উচ্চ রক্তচাপ দেশে সর্বাধিক প্রচলিত রোগ। প্রতি হাজারে ৭৮ দশমিক ২৮ জন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। এ ছাড়া পেপটিক আলসার, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, চর্মরোগ, হৃদরোগ, হাঁপানি, অস্টিওপোরোসিস, হেপাটাইটিস ও ডায়রিয়াকে সবচেয়ে সাধারণ ১০টি রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। রোগে আক্রান্ত হলেও অনেকেই চিকিৎসা গ্রহণ করেন না। যারা চিকিৎসা নেন, তাদের ৫১ দশমিক ২ শতাংশ সাধারণ ওষুধের দোকান বা স্ব-চিকিৎসার ওপর নির্ভর করেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা গ্রহণ করেন মাত্র ১১ দশমিক ৫ শতাংশ, আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২০ শতাংশ। জরিপের আগের তিন মাসে জনপ্রতি গড় চিকিৎসা ব্যয় নির্ধারিত হয়েছে দুই হাজার ৪৮৭ টাকা; নারীর ব্যয় পুরুষের তুলনায় বেশি।
১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে সিজারিয়ান প্রসবের হার জাতীয়ভাবে ৪৯ দশমিক ৩ শতাংশ পাওয়া গেছে। শহরাঞ্চলে এ হার ৫৩ দশমিক ৩ শতাংশ এবং পল্লিতে ৪৮ দশমিক ১ শতাংশ। প্রতি প্রসবে গড় ব্যয় ২২ হাজার ৬৫৫ টাকা। জরিপে আরও দেখা যায়, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার হার এখনও অত্যন্ত কম- মাত্র ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। দেশে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতার হার ৫ দশমিক ২ শতাংশ; নারীদের মধ্যে এ হার সামান্য বেশি।
স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও ভৌগোলিক বৈষম্য রয়েছে। প্রতি পাঁচজনের একজনকে ১০ কিলোমিটার বা তার বেশি দূরে গিয়ে সেবা নিতে হয়। মাত্র শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ পরিবার জেলা হাসপাতালের ১ কিলোমিটারের মধ্যে বাস করে। জরিপে তামাক সেবনের হার ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ হিসেব করা হয়েছে; পুরুষদের মধ্যে হার ৩৭ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারীদের ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ। মাদক সেবনের হার কম হলেও ব্যয় তুলনামূলকভাবে বেশি। অনুষ্ঠানে বক্তারা স্বাস্থ্য খাতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় জোরদারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং জরিপের ফলাফলকে নীতি প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।